• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০১৯, ১০:৪৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৪, ২০১৯, ১০:৪৮ এএম

বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত  

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত 

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত 
লালমনিরহাটে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত- ছবি : জাগরণ

অবিরাম বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তিস্তা-ধরলাসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অপরিবর্তিত রয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পয়েন্টে পানি সামান্য কমে বিপদসীমার ২০ সে. মি. ওপর ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সে. মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

বন্যার পানিতে জেলার পাঁচ উপজেলার নদী সংলগ্নসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে ওই সব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যা দুর্গত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষজন পরিবার-পরিজন এবং গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এছাড়াও খাদ্যাভাব, বিশুদ্ধ পানি এবং পোকা-মাকড়ের ভয়সহ নানা সঙ্কটে রয়েছে তারা। বন্যা দুর্গত এলাকার ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। পানির তোড়ে বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং বাইপাস সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেখা দিয়েছে নানা পানিবাহিত রোগ। হাজার হাজার একর আমন ধানের বীজ তলাসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন্যায় ভেসে যাচ্ছে শত শত পুকুরের মাছ। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। 

নদীর পানি বৃদ্ধি পাওযায় নদীর পাড়ের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ঊঠেছে- ছবি : জাগরণ  

এছাড়া জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোর রাস্তা ও বাঁধ ভেঙে পানি হু হু করে নতুন নতুন লোকালয়ে প্রবেশ করায় নদীর পাড়ের লোকজন আতংকিত হয়ে উঠছে। নদী সংলগ্ন চর এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিয়ে রেড এলার্ট জারি করা হবে। এ বাঁধ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার কয়েক লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে। এতে শত শত কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে। ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা যাচ্ছে না। পানির শো শো শব্দে তিস্তা পাড়ে লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। তিস্তা নদীর ভয়ঙ্কর রুপ আর গর্জনে পানিবন্দি লোকজনের চোখে ঘুম নেই। 

পানিবন্দি অনেকেই জানান, তারা গত কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় পড়ে আছেন। কেউ তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে না। তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। 

তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের সবকয়টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আমি বন্যা এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখছি। যেখানে যেভাবে প্রয়োজন সেই ভাবেই সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। 

এদিকে, শনিবার বিকেলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জানান, বন্যার্তদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে। যে কোনো মূল্যে বন্যার্তদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হবে।

কেএসটি