• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০১৯, ০৩:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৪, ২০১৯, ০৩:৩৬ পিএম

ভারতীয় গরু না এলেও জমে উঠছে সাতমাইল পশুর হাট

ভারতীয় গরু না এলেও জমে উঠছে সাতমাইল পশুর হাট

যশোরের বেনাপোল-শার্শা সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতীয় গরু প্রবেশে কড়াকড়ির কারণে সীমান্তের পশু খাটালগুলো খাঁ খাঁ করছে। অবৈধপথে গরু আনার পর বেনাপোলের পুটখালী, দৌলতপুর ও শার্শা উপজেলার অগ্রভূলোট এবং গোগা এই চারটি পশু খাটালে গরুগুলো রাখা হতো। এবার কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভারতীয় গরু না এলেও খামারিদের পশুতে জমজমাট হয়ে উঠেছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শার্শার বাগআঁচড়া ‘সাতমাইল পশুহাট’। দেশীয় গরু ছাগলে জমজমাট এসব হাট। 

খামারিরা বলছেন, ভারতীয় গরু না আসলে এ বছর তারা ভালো দাম পাবেন। তবে ঈদকে ঘিরে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। দাম কিছুটা বেশি হলেও দেশি গরু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তদারকি থাকায় এবার পুষ্টিমান সম্পন্ন পশু পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোল থেকে শার্শার রুদ্রপুর পর্যন্ত সীমান্তের ইছামতি নদীর অংশটুকু বাদে বেশিরভাগ স্থানজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে রয়েছে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ নজরদারি। বিজিবি‘র পক্ষ থেকে সীমান্তে মতবিনিময় সভা করে ভারতীয় গরু না আনার আহবান জানানো হয়েছে। 

সম্প্রতি বিএসএফের গুলিতে দুই গরু ব্যবসায়ী আহত ও গরু চোরাচালানীদের হামলায় বিএসএফের একজন জোয়ান আহতের ঘটনায় ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। চোরাচালানী দেখা মাত্র গুলি চালাচ্ছে বিএসএফ। ফলে এই সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে আসা এখন কঠিন ব্যাপার। 

অগ্রভুলোট খাটালের ইজারাদার আব্দুর রশিদ বলেন, ভারতীয় গরু না আসায় এবার খাটালগুলো ‘খাঁ খাঁ’ করছে। আগে দেশের নানা জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা কোরবানির আগে খাটালে এসে গরুর দরদাম করত। এখন খাটালে গরুই নেই। ব্যবসায়ীরা তাই এদিকে আসেন না।

শার্শা উপজেলায় প্রায় ১১শ খামারের গরু বিভিন্ন পশুর হাটে নিচ্ছেন বিক্রেতারা। ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। তবে গো-খাদ্যের দাম না কমালে লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দাম কিছুটা বেশি হলেও দেশি গরু কিনতে পেরে স্বাছন্দ্যবোধ করছেন ক্রেতারা। যশোরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছে পশু খামারিরা।

কোরবানির গবাদি পশুর দক্ষিণ বঙ্গের সবচেয়ে বড় বাজার যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল পশু হাট। যেখান থেকে ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা গরু ক্রয় করে থাকেন। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, খামারগুলোতে ক্ষতিকর ওষুধ দিয়ে মোটাতাজাকরণ বন্ধে তদারকি থাকায় এবার হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবান পশু পাওয়া যাবে। পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার খাইয়ে পশুগুলোকে তারা বড় করেছে, তারা কোনো অসাধু উপায় ব্যবহার করছে না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, ভারতীয় গরু ছাগল না এলেও কোরবানির পশুহাটে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। যশোরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৩টি পশু হাট রয়েছে। এর বাইরে ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো ১১টি অস্থায়ী হাট গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় পশু হাট হচ্ছে বাগআঁচড়া সাতমাইল পশু হাট। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তদারকির জন্য আমারা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আসা করছি এবার পুষ্টিমান সম্পন্ন পশু পাওয়া যাবে এসব পশু হাট থেকে। অধিক মূল্যে পশু কেনাবেচা করে লাভবান হবেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। 

বাগআঁচড়া সাতমাইল পশু হাটের সভাপতি ইয়াকুব আলী বিশ্বাস জানান, দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ পশুহাট সাতমাইল অবস্থিত। এ হাটের সকল প্রস্তুতির পরে স্থানীয় খামারিসহ ব্যাপারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে। আশা করছি কোরবানির পশুর কোন সংকট হবে না। 

পশু হাটের সাধারণ সম্পাদক বাগআঁচড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল জানান, বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাটটি বর্তমানে পকেট মার, দালাল ও ছিনতাইকারীমুক্ত। ভারতীয় গরু না আসায় এ বছর দেশীয় খামারিরা অনেকটা লাভের মুখ দেখবে। আমার পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। 

কেএসটি