• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০১৯, ০৭:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০১৯, ১০:১১ পিএম

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র তখনকার অনেক নেতা উপলব্ধিই করতে পারেননি’

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র তখনকার অনেক নেতা উপলব্ধিই করতে পারেননি’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : টিভি থেকে নেয়া

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ‘ষড়যন্ত্র’ তখনকার অনেক রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকে উপলব্ধিই করতে পারেননি। এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেছেন, এই উপলব্ধিটা যদি সকলের মাঝে থাকত তাহলে হয়তো ১৫ আগস্টের মতো এত বড় একটা আঘাত এদেশের উপর আসত না। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভার আয়োজন করা হয়।  
 
শেখ হাসিনা বলেন, দেশ স্বাধীনের পর নানা চক্রান্ত চলেছে। পাটের গুদামে আগুন দেয়া, থানা লুট, আওয়ামী লীগের নির্বাচিত ৭ জন সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। যারা স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী- তারা এই দেশ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, অনেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিল। আন্ডারগ্রাউন্ডে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত হয়ে একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে শুরু করেছিল। আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও তখনকার সেই অবস্থাটা বুঝতেই পারেননি যে- একটা দেশ দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিল, শোষিত ছিল, তারপর সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করা হয়েছে, তারা এত সহজে ছাড়বে না। তাদের দোসরা ছিল রন্ধে রন্ধে। আর তাদের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত-সব সময় অব্যাহত থাকবে। এই উপলদ্ধিটাও তখনকার দিনে আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতার মধ্যে আসেনি। তাই তারা এটা হয়নি, ওটা হয়নি, ওটা হলো না কেন- নানা ধরনের প্রশ্ন, কথা, লেখালেখি অনেক কিছু শুরু করেছিল।
  
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তখন যদি সবাই উপলব্ধি করতেন একটা বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলতে হচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু একটা দেশ, সেই দেশটাকে গড়ে তোলা একটা কঠিন ও দুরূহ কাজ। এটা যে একদিনেই একটা কথায় গড়ে ওঠে না। এই উপলব্ধিটা যদি সকলের মাঝে থাকত তাহলে হয়তো ১৫ আগস্টের মতো এত বড় একটা আঘাত এদেশের উপর আসত না। কিন্তু তখন সেটা উপলব্ধি অনেকেই করে নাই। এটা উপলব্ধি করতে অনেক সময় লেগেছিল তাদের। কেন উপলব্ধি করতে পারেননি আমি জানি না। এদের মধ্যে অনেকেই জ্ঞানী-গুণী, অনেকেই আছেন। ’৭২ সাল থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত অনেক লেখাই আছে। সেগুলোয় দেখবেন- কত ভুল কথাই না তারা বলে গিয়েছিলেন। আর সেই খেসারত জাতিকে দিতে হলো ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে।     

শেখ হাসিনা বলেন, যারা কখনও চায়নি- বাঙালি জাতি মাথা তুলে দাঁড়াক, বাঙালি জাতির অস্তিত্বে যারা বিশ্বাস করতে চায়নি, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চেয়েছিল, তাদেরই চক্রান্ত ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে বিজয় তারা তা কখনও মেনে নিতে পারেনি। তারা হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬ দফা আন্দোলনে এদেশের মানুষের যারা রক্ত নিয়েছে, হত্যা করেছে, তাদের দালালি করেছে। বাঙালি হয়েও তারা পাকিস্তানী সামরিক শাসকদের পদলেহন করছে, তাদের খোশামোদ ও তোষামোদ করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এর স্বরূপ উৎঘাটিত হয়েছে। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, মোহাম্মদ নাসিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান। 

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন