• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২০, ১০:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৭, ২০২০, ১০:১২ পিএম

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

ডিজি তার কার্যালয় থেকে আমাকে বের করে দেন : ড. ফিরোজ

ডিজি তার কার্যালয় থেকে আমাকে বের করে দেন : ড. ফিরোজ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ ● সংগৃহীত

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তকরণে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট উদ্ভাবক দলের সদস্য এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ অভিযোগ করেছেন, কিট জমা দিতে যাওয়ার পর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) তার কার্যালয় থেকে বের করে দেন তাকে (ফিরোজ আহমেদকে)।

রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে একই জায়গায় উদ্ভাবিত কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ হস্তান্তর করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আমন্ত্রণ জানানোর পরও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ছাড়া এ কিট গ্রহণের জন্য যায়নি সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠান। রোববার সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে কিট জমা দিতে যান উদ্ভাবক দলের তিন সদস্য। তাদের মধ্যে ছিলেন ড. ফিরোজও।

সংবাদ সম্মেলনে ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমাদের কো-অর্ডিনেশন টিম ল্যাবরেটরি থেকে বের হয়ে আমি আর ড. বিজন (কিট উদ্ভাবক দলের ড. বিজন কুমার শীল) একটু আগে ডিজি মহোদয়ের অফিস পর্যন্ত চলে গেছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষক, আমরাও তো মানুষ। অফিসে ঢুকলে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় মানুষের সঙ্গে এই আচরণবোধটা, আচরণবিধিটা যদি ডিজি সাহেবকে শেখাতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের অফিসে আর সাধারণ মানুষ যেতে পারবে না। তিনি (ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ডিজি) বলেন, আপনি কেন এখানে এসেছেন?’ আমি বললাম, ‘আপনি তো ডেকেছেন, আমরা এসেছি। আমাদের আরও একজন আসবেন। আমাদের কো-অর্ডিনেটর সাহেব।’

তিনি এরপর বললেন, ‘আমি উনার সঙ্গেই কথা বলব, আপনি (ড. ফিরোজ আহমেদ) এখনই বের হয়ে যান’।

ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমরা আবিষ্কার করলে আপনাদের খারাপ লাগে? আমরা করলে চাইনিজ কিট বন্ধ হবে, ভারতীয় কিট বন্ধ হবে– এগুলো আপনাদের খারাপ লাগে? কেন, আপনিই তো (কিট সম্পর্কিত কার্যক্রমের) আয়োজন করবেন, আপনি মহাআয়োজন করেন। আপনি সিআরও ডাকেন, বাংলাদেশের সবাইকে ডাকেন।

কিট উদ্ভাবক দলের এ সদস্য বলেন, আমরা অনেক জায়গা থেকে অনেক কিছু ম্যানেজ করে সুন্দর একটা ফর্মুলা দিয়েছি। সামান্য রক্ত দেব, একটা ফল স্পষ্ট আসবে, আপনারা দেখতে পাবেন। পজেটিভ হলে আসবে, নেগেটিভ হলে আসবে না। এগুলোর জন্য তো এতকিছুর দরকার নেই। যে ল্যাবরেটোরিতে বায়োসেফটি ক্যাবিনেট আছে, ওখানে বসে আপনি এক হাজারটা নমুনা দেন আর লোকজনকে বলেন, বাবা টেস্ট করে বলো। এক হাজার বা একশর মধ্যে কয়টা সঠিক আছে, দেখেন। আপনি যে কয়টা নমুনা (যথার্থ) পান তার ওপরে সেনসিটিভিটি করেন। এবার যাদের রোগ নেই তাদের রক্ত নেন। বলে দেন, একশর ভেতর কতটা নেগেটিভ আছে। আমরা বলছি, একটা প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু আমাদের ইমার্জেন্সি। প্রক্রিয়ার কাজগুলো আমরা করছি। সবকিছু করার পরে কেন আপনারা দেরি করছেন?

কিট উদ্ভাবনের বিষয়টি ঘিরে রাজনীতি হচ্ছে বলে অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, ড. বিজনসহ আমাদের একটা ছোট্ট টিম আছে। আমাদের পাঁচটা আবিষ্কার আছে। আমি ২২ বছর আইসিডিডিআর,বিতে চাকরি করেছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ওই ম্যানেজমেন্টের সাথে গণ্ডগোল করে চলে এসেছি আমি। ওখানে স্টাফদের কষ্ট ও গবেষণা নিয়ে বারবার আন্দোলন করতে হয়েছে এবং একপর্যায়ে যে কোনও মাধ্যমে ওপর থেকে নির্দেশ এসেছে, আমার চলে যাওয়াটাই ভালো। আমি চলে গেছি।

‘আর আপনারা তো রাজনীতির কথা বলছেন, বর্তমানে যে দল ক্ষমতায় আছে, আমি সেই দলের একজন বড় সমর্থক। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি আমাদের গবেষণায় কাজ করার জন্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক (ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী) সামহাউ (কোনওভাবে) উনার সাথে আমার পরিচয় হয়। আমি আর ড. বিজন দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করি। আমি নিয়ে এসেছি, স্যার (ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে) আমরা এরকম কিছু করেছি। উনি আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। সরকারকে ডিস্ট্যাবিলাইজ (অস্থির) করব ওই ধরনের কোনও রাজনীতি আমরা করছি না। আমি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের সভাপতি এবং শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। সুতরাং এখানে রাজনীতি আনার কিছু নেই’- বলেন ড. ফিরোজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘জাতিকে বাঁচাবো, এটা ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি, শোষণবিহীন সমাজের স্বপ্ন দেখি, আমরা যারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন করি, আমরা যারা সাবেক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ– তারাই বলছি, সরকারকে আমরা বাঁচাতে চাচ্ছি। দেশটাকে বাঁচাতে চাচ্ছি, জনগণকে বাঁচাতে চাচ্ছি।’

এসএমএম

আরও পড়ুন