• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০১৯, ০৭:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩, ২০১৯, ০৭:৩৮ পিএম

শরীয়তপুরে কলেজছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ, গ্রেফতার ১

শরীয়তপুরে কলেজছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ, গ্রেফতার ১

শরীয়তপুরের আন্তঃজেলা পরিবহনের চার শ্রমিকের বিরুদ্ধে জাজিরার একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাকিব মন্ডল (২২) নামের এক শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পালং মডেল থানার পুলিশ।

রোববার (৩০ জুন) রাতে সদর উপজেলার উত্তর মধ্যপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে অভিযুক্ত চার শ্রমিক ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। স্থানীয়রা শরীয়তপুর বন বিভাগের পুকুরঘাট থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে পালং মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাকিব মন্ডল (২২) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পালং মডেল থানার পুলিশ।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা সদরের একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর বাড়ি নড়িয়া উপজেলায়। গত বছর নদীভাঙনে গৃহহীন হয়ে জাজিরা উপজেলার একটি গ্রামে আশ্রয় নেয় তার পরিবার।

ওই ছাত্রী রোববার বিকেলে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য শরীয়তপুর জেলা শহরের বাস টার্মিনালে আসে। তখন সেখানে দেখা হয় পূর্বপরিচিত পরিবহন শ্রমিক ইসলাম ফকিরের সাথে। ইসলাম ফকির ওই ছাত্রীকে তার আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তার বন্ধু রাকিব মন্ডল, সবুজ রাড়ী ও ইকবালের সঙ্গে অটোরিকশায় তুলে দেয়। রাকিব মন্ডল, সবুজ রাড়ী ও ইকবাল মেয়েটিকে নিয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলার মনোহর বাজারে যায়। সেখানে কিছু খাওয়াদাওয়ার পর মেয়েটিকে রাকিবের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটির মুখ বেঁধে রাকিব মন্ডল, সবুজ রাড়ী ও ইকবাল পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এরপর রোববার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে আসে ইসলাম। রাতে ইসলাম মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পুনরায় ধর্ষণ করা নিয়ে ইসলামের সঙ্গে রাকিব মন্ডল, সবুজ রাড়ী ও ইকবালের কথা-কাটাকাটি হয়। তখন ইসলাম ফকির মেয়েটিকে তাদের বাড়ির পাশের শরীয়তপুর বন বিভাগের পুকুরঘাটে নিয়ে যায়। পুকুরঘাটে নিয়ে ইসলাম ফকির মেয়েটিকে আবার ধর্ষণ করে।

পরে স্থানীয় এক অটোরিকশাচালক তাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেলে ইসলাম ফকির মেয়েটিকে বিয়ে করবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই অটোরিকশাচালক বিষয়টি পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের জানান এবং মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেন। পরিবহনশ্রমিকরা অপরাধীদের বিচার করবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির পরিবারকে থানায় মামলা করতে নিষেধ করেন।

মঙ্গলবার শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার অভিযুক্ত রাকিব মন্ডলকে বাস টার্মিনালে দেখতে পান এবং তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। রাতে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা পালং মডেল থানায় মামলা করেন।

ওই ছাত্রী বলে, ‘ইসলাম ফকির, রাকিব মন্ডল, ইকবাল ও সবুজ রাড়ী আমাকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করেছে। এখন আমি কীভাবে সমাজে মুখ দেখাব? আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

পালং মডেল থানাহাজতে আটক রাকিব মন্ডল বলে, ‘আমি ওই মেয়েটির সাথে কিছু করিনি। ইসলাম ফকির, সবুজ রাড়ী ও ইকবাল তাকে ধর্ষণ করেছে। তারাই ওই মেয়েটিকে আমার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। ইসলাম ফকির, সবুজ রাড়ী ও ইকবাল কোথায় আছে তা আমি জানি না।’

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, চারজন মিলে একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। ভিকটিম মেয়েটির বাবা চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আসামিদের সবার বাড়ি শরীয়তপুর পৌরসভার উত্তর মধ্যপাড়া গ্রামে।

এনআই

আরও পড়ুন