• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০১৯, ০৯:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৪, ২০১৯, ০৯:৪২ পিএম

বরিশালে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় দুজনের যাবজ্জীবন

বরিশালে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় দুজনের যাবজ্জীবন
স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মনির খাঁ - ছবি : জাগরণ

বরিশালে ষষ্ঠ শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বান্ধবীর চাচাতো ভাইসহ দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে দণ্ডিত উভয়কে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ২ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

দণ্ডিতরা হলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন বাবুগঞ্জ উপজেলার আরজীকালিকাপুর গ্রামের সেন্টু খাঁর ছেলে মনির খাঁ (২৭) ও একই গ্রামের কালাম মীরার ছেলে রুবেল মীরা (২৬)।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে আসামি মনির খাঁর উপস্থিতিতে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীশ আজাদ এই রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি দণ্ডিত পলাতক আসামি রুবেল খাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত জানান, ২০১২ সালের ২৮ জুলাই সন্ধ্যার পরে আরজীকালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ও আরজীকালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান ঘরামীর মেয়ে মুক্তা প্রতিবেশী বান্ধবী সুমি আক্তারের বাসায় টেলিভিশন দেখতে যায়। এরপর সে আর ঘরে ফিরে আসেনি।

পরের দিন অর্থাৎ ২৯ জুলাই সকালে মুক্তার মা রুশিয়া বেগম রান্না করার লাকড়ি আনার জন্য তাদের লাকড়ির ঘরে গিয়ে দেখতে পান আড়ার সাথে মুক্তার গলায় ফাঁস দেয়া লাশ ঝুলছে। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণের পাশাপাশি একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়।

এদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পায় ফরেনসিক বিভাগ। তাদের ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রথম পর্যায়ে এয়ারপোর্ট থানার দুজন উপপরিদর্শক ওই মামলার তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। বাদী ওই প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দিলে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সিআইডির পরিদর্শক আল মামুন উল ইসলাম রুবেল খাঁ ও মনিরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এর পর আদালত ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সাজার রায় শোনান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ফয়েজুল হক ফয়েজ জানান, মামলার প্রথম দিকে আসামি রুবেল খাঁ গ্রেফতার হয়। এ সময় পুলিশ তার রক্তের ডিএনএ করলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ পায়। তবে তত দিনে রুবেল উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

পিপি বলেন, ‘দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি যুগান্তকারী রায়। তবে আমাদের দাবি ছিল আসামিদের ফাঁসির রায় শোনার।’তাই তাদের ধর্ষণের পরে হত্যার অপরাধে আসামিদের যাতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, সে জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

এনআই

আরও পড়ুন