• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম

বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন

বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান শেষে আনন্দঘন পরিবেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্বোধনের পর পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল বেনাপোল-ঢাকা রুটে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধী বান্ধব বিরতিহীন ট্রেন ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’।

এর আগে বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে আন্তনগর ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে এবং সবুজ পতাকা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন।

ঢাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। স্বাগত বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন। এছাড়া রেলপথ উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

বেনাপোল এক্সপ্রেস উদ্বোধন উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে বেনাপোলের বিভিন্ন এলাকা হতে শত শত লোক মিছিলসহকারে বেনাপোল রেলস্টেশনে এসে জড়ো হয়। পুরো রেলস্টেশনটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে করতালিতে ও বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রেলস্টেশন এলাকা। রেলওয়ে স্টেশন বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। প্ল্যাটফর্মের ওপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হরেক রকম ফুল দিয়ে গোটা ট্রেনটি সাজানো হয়েছে নান্দনিক সাজে ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি সংযুক্ত হন যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হোসাইন মোহাম্মদ শওকত, বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আলী কদর সাগর ও বেনাপোল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী তনু আফসানা সাদ। তারা নতুন এই ট্রেনটি উদ্বোধন করায় এলাকার জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দূরের যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার ও কৃতজ্ঞতার কথা জানান প্রধানমন্ত্রীকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিমুখে তাদের ধন্যবাদ জানান। আগামীতে পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে বেনাপোলে আরও একটি ট্রেন চলাচলের আশ্বাস দেন। সেই সাথে বেনাপোল বন্দরকে আরো আধুনিকায়ন করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ট্রেনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন যশোর-১ (শার্শা) আসনের সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সাংসদ মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ, রাজশাহী জোনের সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন চিফ ইঞ্জিনিয়ার অসীম কুমার তালুকদার, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী, যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক মঞ্জু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামানসহ রেল ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ১২টি কোচ দ্বারা চলবে। ট্রেনটিতে এসি সিট, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার শ্রেণির সর্বমোট ৮৯৬টি (৭৯৫ নম্বর ট্রেনের ক্ষেত্রে) এবং এসি বার্থ, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার শ্রেণির সর্বমোট ৮৭১টি (৭৯৬ নম্বর ট্রেনের ক্ষেত্রে) আসনের ব্যবস্থা থাকবে। বেনাপোল ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন (৭৯৫) বুধবার ও (৭৯৬) বৃহস্পতিবার। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ছাড়বে দুপুর ১টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টায় এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে, বেনাপোল পৌঁছাবে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। বেনাপোল থেকে ঢাকা শোভন চেয়ারের টিকিটের মূল্য ৪৮৫ টাকা, এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) চেয়ার ৯৩২ টাকা, এসি সিট ১ হাজার ১১৬ টাকা ও এসি কেবিন ১ হাজার ৬৭৪ টাকা।

উদ্বোধন শেষে বেলা সোয়া একটায় ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বেনাপোল থেকে ১০৪টি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানিয়েছেন।

এনআই

আরও পড়ুন