• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০২:১৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০২:১৫ এএম

মতিঝিল ক্লাবপাড়া যেন অন্ধকার ভুতুড়ে নগর

ক্যাসিনোতে গ্রেফতার ১৪২ জন কারাগারে

ক্যাসিনোতে গ্রেফতার ১৪২ জন কারাগারে

সকাল থেকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসিয়াল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পদচারণায় জমজমাট থাকে মতিঝিল, দিলকুশা, ফকিরেরপুল, পুরানাপল্টন ও দৈনিক বাংলা মোড়। সন্ধ্যা না হতেই ওই সকল এলাকা ফাঁকা হলেও ক্লাবপাড়া সারারাত থাকে কোলাহলমুখর। ক্যাসিনো ও মদের আড্ডা খানায় অভিজাত গাড়ি হাঁকিয়ে আসেন বিত্তবানরা।তবে আজ সন্ধ্যার দৃশ্যপট ছিলো একেবারে ভিন্ন। ক্লাবপাড়ায় ফকিরেরপুল ক্যাসিনোতে র‌্যাবের অভিযানের পর পুরো ক্লাবপাড়া নিঃশব্দচারী ভুতুরে নগরে পরিণত হয়।পুরো এলাকায় ঘুটঘটে অন্ধকার। গ্রেফতার আতঙ্কে জুয়ারী ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ সব গুটিয়ে পালিয়েছে। এমনকি আশপাশের সকল সিগারেট-পান এবং চায়ের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া গুলিস্থানের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের কর্মকর্তা কর্মচারী ও ক্যাডাররাও গা ঢাকা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে সেই ক্লাবটিও।

মতিঝিল মোহামেডান ক্লাবের ফুটফরমায়েশ খাটা হানিফ জানান, মতিঝিল ও ফকিরেরপুল ভিত্তিক প্রায় ২০টি ক্লাবে রাতভর কোটি টাকার জুয়া খেলার পাশাপাশি মাদক সেবন চলে । দেশী বিদেশী বাহারী মদের সমারোহে রঙ্গিন লাইটের আধার আলোতে কেউ হয় বাদশা, আর কেউ হয় রাস্তার ফকির। তবে এই ক্যাসিনোর নেশা ভুলতে পারে না কেউ। এ নেশার ঘোরে সবর্স্ব হারিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলের সামনে অনেক পুরনো খেলোয়ারকে পাওয়া যায়। খেলে টাকা হেরে এখন ক্লাবের সামনে বসে থাকে। রাতে ক্লাবে আসা লাখ পতি বা কোটি পতিদের ফুট ফরমায়েশ খেটে পার করে জীবন যাপন করছেন।

তাদেরই একজন, হানিফ জানায়, আজ বুধবার সন্ধ্যায় ক্লাবে অভিযানের সময় তাকেও র‌্যাব ধরেছিল। কিন্তু ক্লাবের সামনের চা ও সিগারেট দোকানী মহসীনের সুপারিশে তাকে ছেড়ে দেয় র‌্যাব। কারণ সে ক্যাসিনোতে ঢুকেও না এবং জুয়া খেলার সখ থাকলেও টাকার অভাবে খেলতে পাওে না। খেতে পারে না মদ। এমনিতে পুরনো যদি কেউ তাকে মদ খাওয়ায় সে টা করে থাকে হানিফ।

................................................................................................

আজ সন্ধ্যার দৃশ্যপট ছিলো একেবারে ভিন্ন। ক্লাবপাড়ায় ফকিরেরপুল ক্যাসিনোত র‌্যাবের অভিযানের পর পুরো ক্লাবপাড়া নিঃশব্দচারী ভুতুরে নগরে পরিণত হয়।পুরো এলাকায় ঘুটঘটে অন্ধকার। গ্রেফতার আতঙ্কে জুয়ারী ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ সব গুটিয়ে পালিয়েছে

.................................................................................................

হানিফ বলেন, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একযোগে গোটা মতিঝিল- ফকিরেরপুল ও শাহজাহানপুর আরামবাগ এলাকার সকল ক্লাবে র‌্যাবের ক্যাসিনোতে সাড়াশি অভিযান চালায়। এ অভিযানে প্রায় ৪ ঘন্টা স্থায়ী হয়।  এলাকায় ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে র‌্যাবের অভিযান চলছে। অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। এই ক্যাসিনোর মালিক মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার। তাকেও গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতারের পর নিয়ে গেছে র‌্যাব। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।

সারওয়ার আলম বলেন, আawssমার নেতৃত্বে ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চলছে। জুয়া খেলা অবস্থায় অভিযানে এখনো পর্যন্ত নারী ও পুরুষ মিলে ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে অপরাধের ধরন অনুযায়ী ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সাজা দেয়া হয়েছে। তাদেরকে রাত ৯টা দিকে র‌্যাবের সতর্ক পাহারায় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান মতিঝিল থানার ওসি ওমর ফারুক। এ বিষয়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্টেট সারওয়ার আলম বলেন, ক্যাসিনোর ভেতর থেকে কমবেশী  প্রায় ২০ লাখ টাকা ও দেশী বিদেশী বিপুল পরিমান মদ উদ্ধার করা হয়েছেসকাল থেকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসিয়াল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পদচারণায় জমজমাট থাকে মতিঝিল, দিলকুশা, ফকিরেরপুল, পুরানাপল্টন ও দৈনিক বাংলা মোড়। সন্ধ্যা না হতেই ওই সকল এলাকা ফাঁকা হলেও ক্লাবপাড়া সারারাত থাকে কোলাহলমুখর।

অপরদিকে গতকাল বুধবার দুপুরের পর গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। বাসা থেকে খালেদ ভুইয়াকে গ্রেফতারের পর র‌্যাব সদর দফতরে নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটির প্রভাবশালী নেতা খালেদকে ধরতে অভিযান চালাল র‌্যাব।
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাদাবির অভিযোগে সমালোচনার মুখে থাকা রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

এইচ এম