• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০১৯, ১০:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১, ২০১৯, ১০:০৮ পিএম

মুখে কুলুপ এঁটে বসে ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

মুখে কুলুপ এঁটে বসে ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী 
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ অন্যান্যরা-ছবি : জাগরণ

‘মশা মারা আমার কাজ না’, ‘রোহিঙ্গাদের মতই বাচ্চা ফোটাচ্ছে এডিস মশা’— এ ধরনের মন্তব্য করে কিছুদিন আগে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তারপরেও যেন তার ঘুম ভাঙেনি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সারা দেশের মানুষ যেখানে আতঙ্কিত ও মহাউদ্বিগ্ন। ঠিক সে সময় কি- না সপরিবারে বিদেশ গেলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশে ফিরে এসেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে মন্ত্রণালয়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিলো। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ গণমাধ্যমকে সে বিষয়ে অবহিতও করা হয়। কিন্তু শেষমেষ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। কিন্তু গণমাধ্যম তার পিছু ছাড়ে নি। স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকস্থলে হাজির হন গণমাধ্যমকর্মীরা। বৈঠকের শেষ দিকে ঢুকে পড়েন সম্মেলন কক্ষে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ও উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে। 

সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমের উপস্থিতি দেখে তিনি বলেন, ‘আজ নয়, অন্য আর একদিন কথা হবে’। কিন্তু গণমাধ্যমকর্মীরা নাছোড়বান্দা। মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের কথা বলতেই হবে। দেশের এমন একটি দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দেশবাসীও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের কথা জানতে চায়।পরে অবশ্যই গণমাধ্যমের চাপাচাপিতে কথা বলতে রাজি হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (স্বাস্থ্য ও সেবা) আসাদুল ইসলাম মন্ত্রীর হাতে ডেঙ্গু বিষয়ে একটি আপডেট কাগজ তুলে দেন। মন্ত্রী শুধু ডেঙ্গুর সর্বশেষ অবস্থা জানান। গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে প্রশ্ন করতে চাইলে মন্ত্রী কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না বলে জানান। তারপরেও গণমাধ্যমকর্মী বিভিন্ন প্রশ্ন করেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী নির্বাক হয়ে বসে ছিলেন। বার দু’য়েক চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে যেতে চেয়েছিলেন। মন্ত্রী নিশ্চুপ থাকলেও, নিশ্চুপ ছিলেন না সচিব। প্রশ্নের জবাব না দেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছিলেন সচিব আসাদুল ইসলাম। এ সময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ডেঙ্গু নিয়ে সিটি করপোরেশনের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। আবারও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করেন। কিন্তু মন্ত্রী কুলুপ এঁটে বসে ছিলেন। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নীতিমালা অনুযায়ী দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি ঘোষণা করা যায় কি না’—  গণমাধ্যমের এই প্রশ্নেরও কোনও জবাব দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে জবান দেন সচিব আসাদুল ইসলাম। তিনি মন্ত্রীর ফ্লোর কেড়ে নিয়ে নিজের মাইক্রোফোন অন করে সচিব বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক বিষয় নয়, টেকনিক্যাল বিষয়। এটা মন্ত্রীর জবাব দেয়ার বিষয় না। এটি জটিল বিষয়।’

গণমাধ্যমের নানা প্রশ্ন থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর কোনও কথা বলেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী-সচিব।

আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকস্থলে ঢাকার দুই মেয়র ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমও) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আরসালান, সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। 

এমএএম/এসএমএম

আরও পড়ুন