• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২০, ০২:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৯, ২০২০, ০৩:০৩ পিএম

কোভিড-১৯

একদিনে প্রায় সাড়ে ৬শ শনাক্ত, মোট রোগী ৭ হাজার ছাড়াল

একদিনে প্রায় সাড়ে ৬শ শনাক্ত, মোট রোগী ৭ হাজার ছাড়াল
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ● ওয়েবসাইট

আক্রান্তের ৫৩তম দিন

............

একদিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ল শনাক্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে মৃত্যুরও। বেড়েছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও।শনাক্তের ৫৩তম দিনে এসে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৪১ জনের দেহে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। যা মঙ্গলবারের (২৮ এপ্রিল) তুলনায় ৯২ জন বেশি। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭ হাজার ১০৩ জনে। একই সময়ে মারা গেছে আরও ৮ জন। মঙ্গলবার মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৩ জন। সব মিলিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্য ১৬৩ জন।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ জন সুস্থ হয় বাড়ি ফিরে গেছেন। এ পর্যন্ত ১৫০ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩টি কেন্দ্র থেকে ৪ হাজার ৭০৬ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন-পুরাতন মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪ হাজার ৯৬৮ টি।

তিনি জানান, যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে পুরুষ ৬ জন ও ২ জন নারী। তাদের মধ্যে ৬ জন ঢাকার মধ্যে এবং বাকি দুই জন ঢাকার বাইরে।  ৪ জনের বয়সই ষাটের ওপর। দুই জনের বয়স ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যের আছে আরও ২ জন।

এ পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যুই ঢাকা বিভাগে হয়েছে। ঢাকায় এ পর্যন্ত এই সংখ্যা ১৩৭ জন।

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দেশে ৪৯৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয় ও ৩ জনের মৃত্যু হয়।

বিশ্বে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার ১০ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লাখ ৩৮ হাজার ৯১৯ জন। অপরদিকে ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কয়েকদিন মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমলেও সেই সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিনে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৬৩৬৫ জনের।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, চীন থেকে এই মহামারী শুরু হলেও এখন ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরো ভয়াবহ আকার নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে আবারো বেড়েছে মৃতের হার। যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৪৭০ জন। দেশটিতে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। দেশটিতে এই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৫ জন। এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৯ হাজার ২৬৬ জন।

যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১৮ দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হলো। অর্থাৎ আজ থেকে ১৮ দিন আগে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখের বেশি। দেশটির মোট আক্রান্তের মধ্যে যা ৩০ শতাংশ। জনবহুল নিউ ইয়র্কে করোনায় মারা গেছে প্রায় ২৩ হাজার। আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে নিউ ইয়র্কের পর যথাক্রমে রয়েছে নিউ জার্সি, ম্যাসাচুসেটস, ক্যালিফোর্নিয়া ও পেনিসেলভেনিয়া অঙ্গরাজ্য। নিউ জার্সিতে আক্রান্ত ১ লাখ ১৪ হাজারের মধ্যে ৬ হাজার ৪০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ম্যাসাচুসেটসে আক্রান্ত ৫৬ হাজারের মধ্যে ৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।

স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭০৬ জন। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৩০১ জনের। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩২ হাজার ১২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৮২২ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৯০৩ জন। জুনের শেষে স্পেনে চার ধাপে সম্পূর্ণ লকডাউন তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ।

ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯১ জন। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৩৮২ জনের। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ১ হাজার ৫০৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৩৫৯ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৮ হাজার ৯৪১ জন।

মঙ্গলবার করোনায় যুক্তরাজ্যে ৫৮৬, ব্রাজিলে ৫২০, ও ফ্রান্সে ৩৬৭ জন মারা গেছেন। ১১ মে ফ্রান্সে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এডয়ার্ড ফিলিপ্পে।

৪মে থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে গ্রিস সরকার। রাশিয়ায় ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পেরুতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। নাইজেরিয়ায় করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা।

১৯৫৫ সালে শুরু হওয়া ভিয়েতনাম যুদ্ধের ১০ বছরে ৫৮ হাজার মার্কিন সেনা নিহত হয়। আর মাত্র ৩ মাসে করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটিতে ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমলেও মৃত্যু বাড়ছে।

কানাডার কুইবেকে মে মাসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৪ মে থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে গ্রিস সরকার।

চেক প্রজাতন্ত্রে জরুরি অবস্থা জারি থাকবে ১৭ মে পর্যন্ত। পেরুতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।

রাশিয়ায় ভাইরাস পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সংক্রমণ রুখতে সব অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। পর্তুগালে ৩ মে তুলে নেয়া হবে জরুরি অবস্থা।

মোনাকোতে জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সমুদ্র সৈকত ও গ্যাম্বলিং হল। স্কটল্যান্ডে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অস্ট্রিয়ায় ১ মে থেকে তুলে নেয়া হবে লকডাউন।

সিরিয়ায় পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত ভাইরাসের বিস্তার কমিয়ে আনতে রাতে কারফিউ চলবে বলে জানিয়েছে আসার সরকার।

করোনায় লোকসানের মুখে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ।

এসএমএম

আরও পড়ুন