• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২১, ২০১৯, ০৩:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২১, ২০১৯, ০৩:১৬ পিএম

ওয়াসার উৎসের পানি পরীক্ষার নির্দেশ

ওয়াসার উৎসের পানি পরীক্ষার নির্দেশ
ওয়াসা ভবন

ওয়াসার উৎসসহ মোট ৩৪টি পয়েন্টের পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (২১ মে) এই আদেশ দেন।

আদেশে ওয়াসার চারটি উৎস (সোর্স পয়েন্ট), ১০টি জোন, ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১০টি র‌্যান্ডম এলাকার পানি পরীক্ষা করতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান আদালতে তার মতামত তুলে ধরার পর এ আদেশ দেয়া হয়।

আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআরবির ল্যাবে ওয়াসার খরচে পানি পরীক্ষা করে ২ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান আদালতের নির্দেশে গঠিত ওয়াসার পানি পরীক্ষা কমিটির সদস্য।

আদালতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। আর রিটকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তানভীর আহমেদ। 

গত ১৬ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।  প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার লিঙ্কে গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ মে কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআরবি এর ল্যাবে পানির বিভিন্ন প্যারামিটার এর মূল্যহার একীভূত করে মোট বাজেট সংযুক্ত করা হলো।

বাজেটে বলা হয়, এই ১০টি জোনের প্রত্যেক এলাকা থেকে ৩৫৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ফলে মোট নমুনার সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৬৫টি। এই ১০৬৫টি নমুনা করে তিনটি ল্যাবরেটরিতে রোগজীবাণু ও ভৌত রাসায়নিক সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে মোট ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা।

এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত শুনতে ওই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের (মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট) চেয়ারম্যান সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে আদালতে আসতে বলেন। আদেশ অনুসারে অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান হাইকোর্টে আসেন।

আদালত বলেন, মূলত বেশি বাজেট সম্পর্কে জানতে আপনার মতামত জানতে চাচ্ছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্যে দূষিত পানি সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে। কেন এটা সাপ্লাই হচ্ছে? এটা এক্সামিনের জন্য। এ এক্সামিনে এত লার্জ স্কেল কেন? স্যাম্পল কীভাবে নেয়া হবে। পরীক্ষায় খরচ কীভাবে কমানো যায়। সে বিষয়ে জানতে আপনাকে আসতে বলেছি।

এ সময় অধ্যাপক সাবিতা বলেন, পানি দূষিত এমন ঢালাও অভিযোগের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বিগত দিনগুলোতে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার সংযোগ ছিলো ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৪টি। যার বর্তমান সংখ্যা ৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৭টি। সুপেয় পানিতে কোন রকম রং, গন্ধ বা অস্বচ্ছতা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। সুপেয় পানি সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এ সকল লক্ষণাবলী থাকলে অভিযোগ কেন্দ্রে আনা পানির নমুনা চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্য বিবেচনায় কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

তিনি বলেন, ওয়াসা যে রিপোর্ট দিয়েছে ৫৯ এলাকা নিয়ে সেটাতো কয়েক মাস আগে। ওয়াসা পানির উৎস হলো ভূমিস্থ, ভূগর্ভস্থ, শীতলক্ষা বা বুড়িগঙ্গা। এসব উৎসের পানি সিজন টু সিজনে তারতম্য থাকতে পারে। ঢাকা ওয়াসার ১০টি জোনের ৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৪৩টি আউটলেট আছে ধরে আমরা এরইমধ্যে জানিয়েছি ৯৯ ভাগ আস্থা অর্জন করতে হলে ১৫ হাজার ৮৫৮ আউটলেট পরীক্ষার প্রয়োজন। অন্তত ৯৫ ভাগ আস্থা অর্জনে ১ হাজার ৬৫ আউটলেট পরীক্ষা করা আবশ্যক।

এ সময় আদালত বলেন, টেস্টের মাধমে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাবে না। জানার জন্য এত টকা খরচের দরকার নেই। উদ্দেশ্যে পানি দূষিত আছে কি না?

জবাবে সাবিতা রিজওয়ানা বলেন, চারটি সোর্সে পানি আসে। তখন আদালত বলেন, চারটি সোর্স পিওর হলে, বিতরণের ১০টি জোনে, পর্যারয়ক্রমে মোট ৩৪টি জোন পরীক্ষা করা যেতে পারে। আপনাদের কতদিন সময় লাগবে। প্রতি স্যাম্পলে কত টাকা লাগবে?

এ সময় অধ্যাপক সাবিতা বলেন, ‘প্রতি স্যাম্পলে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে। সে ক্ষেত্রে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। এরপর আদালত আদেশ দেন।’

গত বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করার আদেশ দেন।

গত ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

এমএ/একেএস