ট্রাম্পের কাছে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০১৯, ০৮:৩৪ পিএম ট্রাম্পের কাছে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা
প্রিয়া সাহা -ছবি : ভিডিও চিত্র থেকে

যুক্তরাষ্ট্রে এক গণমাধ্যমকর্মীকে দেয়া ভিডিও সাক্ষাতকারে প্রিয়া সাহা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে যা বলেছেন, তা তিনি তথ্যের ভিত্তিতেই তুলে ধরেছেন।’ 

সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করে বলেন, দেশের বিরুদ্ধে নয়, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তিনি। এ সময় তিনি মন্তব্য করে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার মৌলবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

ভিডিও সাক্ষাতকারে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমেরিকাও মৌলবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমি এ কথা বলেছি যাতে করে মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করে। যাতে আমাদের দেশে মৌলবাদের কোনও উত্থান না ঘটে, বাংলাদেশে মৌলবাদের কবলে না পড়ে। সে জন্যই আমি এ কথাটা বলেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি কেন দেশ ছাড়বো? আপনি আমাকে দেখেছেন, আমি বলেছি, আমি দেশে থাকতে চাই। ওটাই আমার প্রথম কথা। ওটাই আমার শেষ কথা।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৭ মিলিয়ন মানুষের ‘ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ (উধাও) সম্পর্কে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বইয়ের (২০০১ সালের) ধর্মীয় সংখ্যালঘু যে চ্যাপ্টার রয়েছে এবং সরকারি জনগণনা (সেনসাস) রিপোর্টে থেকে এ সংখ্যা পাওয়া যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত এক সাংবাদিককে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন প্রিয়া সাহা। ৩৫ মিনিটি ২ সেকেন্ডের এই সাক্ষাৎকারটি শনিবার (২০ জুলাই) ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে প্রিয়া সাহা স্বীকার করে বলেছেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রানা দাশগুপ্তসহ কেউ জানেন না যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।

তিনি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। 

তার পরিবার দারুণ সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রিয়া সাহা বলেন, ‘তার বাসায় তালা ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যদের ছবি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেয়া হয়েছে।’

সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে নিজের দেয়া বক্তব্যকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বলে দাবি করেন প্রিয়া সাহা। তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যখন ৯৪ দিন ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলেছিল, তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা সারাবিশ্ব ঘুরে বেড়িয়েছেন সংখ্যালঘুদের রক্ষায়। নানা জায়গায় বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার কথা অনুসরণে আমি কথা বলেছি। 

সাক্ষাৎকারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৭ মিলিয়ন মানুষের ‘ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ সম্পর্কে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশের  পরিসংখ্যান বইয়ের (২০০১ সালের) ধর্মীয় সংখ্যালঘু যে চ্যাপ্টার রয়েছে এবং সরকারি সেনসাস রিপোর্টে থেকে এ সংখ্যা পাওয়া যায়। দেশভাগের সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন তা কমে ৯ দশমিক ৭ ভাগ। দেশের মানুষ এখন ১৮০ মিলিয়নের মতো।

নিজ জেলা পিরোজপুরের উদাহরণ টেনে প্রিয়া সাহা বলেন, ২০০৪ সালে তাদের গ্রামে ৪০টি সংখ্যালঘু পরিবার ছিল। এখন আছে ১৩টি।

সাক্ষাৎকারে প্রিয়া সাহা দাবি করে বলেন, দেশের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের অভিযোগ করেননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা তুলে ধরার পেছনে তার অভিপ্রায় ছিল মৌলবাদবিরোধী লড়াইকে জোরদার করা। প্রিয়া সাহার মতে, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার মৌলবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও মৌলবাদের বিরুদ্ধে। তিনি চান, দুই দেশের সরকার যৌথভাবে মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ুক। এ কারণে তিনি ট্রাম্পের কাছে এসব কথা বলেন।

এসএমএম

আরও সংবাদ