গাছের সাঁকোই হাজারো মানুষের ভরসা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০১৯, ০৯:২৮ এএম গাছের সাঁকোই হাজারো মানুষের ভরসা

গাজীপুরের শ্রীপুর সদরের দুই কিলোমিটার দূরের তিনটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা দুটি শালগাছ দিয়ে তৈরি সাঁকো। কয়েক বছর ধরে নিজেদের প্রয়োজনীয়তায় দুটি শাল গাছ দিয়ে গ্রামবাসীরা স্থানীয় সেরার খালের উপর এই সাঁকোটি তৈরি করে পারাপার হয়ে আসছেন। চারদিকে উন্নত সভ্যতার ছোঁয়া লাগলেও এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন প্রতিবন্ধকতায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে গ্রামবাসীর। তাই এলাকার মানুষের কণ্ঠে এখন ঝরছে শুধুই ক্ষোভ আর হতাশা।

স্থানীয়দের মতে, শ্রীপুর সদরের দুই কিলোমিটার দূরেই গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রাম। গ্রামের অপর দুই দিকে রয়েছে বাউনী ও সিটপাড়া গ্রাম। তিনটি গ্রাম দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে সেরার খাল (স্থানীয় ডাকনাম)। এই খালের দুই পাশে দুটি পাকা সড়ক থাকলেও হেরা পটকা এলাকায় একটি সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে পাকা সড়কগুলো। বছরের অধিকাংশ সময়জুড়ে এই খালে পানির প্রবাহ থাকায় গ্রামবাসীর অন্যতম ভরসা এই গাছ দিয়ে তৈরি সাঁকো। তবে সাঁকো দিয়ে পারাপারে বয়স্ক, শিশু ও নারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এর ফলে তিন গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি এখন সেতুকে ঘিরেই।

হেরাপটকা গ্রামের আব্দুস সাহিদ আকন জানান, তিন গ্রামের মানুষের চার মাস সেরার খালের উপর গাছের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়। বছরের অন্য সময় খালে পানি থাকে না, তখন হেঁটে চলাচল করা যায়। সাঁকোর দুই দিকে সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে কর্ণপুর-বাউনি পাকা সড়কও। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে এলাকার মানুষের ভোগান্তি কমবে। 

হেরাপটকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের ভাষ্য, এই বিদ্যালয়ে মূলত তিনটি গ্রাম থেকে শিক্ষার্থীরা পাঠদানে অংশ নেয়। তবে বিদ্যালয়টির অবস্থান হচ্ছে হেরাপটকা এলাকায়। পাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে অনেক শিশু শিক্ষার্থীরা এই বিদ্যালয়ে পাঠদানে অংশ নিতে এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো ব্যবহার করেন। বিশেষ করে বর্ষাকালে যখন খালে পানি থাকে তখন সাঁকো পারাপারে ভয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন।

গোসিঙ্গা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য হুমায়ুন কবির জানান, সেরার খালের উপর সেতুর অভাবে মূলত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে গ্রামগুলো। সেতুর অভাবে দুই দিকে পাঁকা সড়ক থাকার পরও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে যানবাহন না চলায় শিশু, বয়স্ক, রোগী নিয়ে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হয়। এছাড়াও বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়ত গ্রামগুলোর অর্থনৈতিক গুরুত্বও কমছে।

গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগবে খালের উপর এখানে শিগগিরই একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধান। তার মতে, তিনি উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব নিয়েছেন ছয় মাস হলো- এরইমধ্যে স্থানীয়রা দুর্ভোগের বিষয়টি তাকে অবহিত করায় অগ্রাধিকার ভিক্তিতে তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন।

কেএসটি

আরও সংবাদ