ড্রেসিংরুমে সমর্থন হারিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ!  

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০১৯, ১০:০০ এএম ড্রেসিংরুমে সমর্থন হারিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ!  
ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের কাছ থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এখন সমর্থন হারাতে শুরু করেছেন। ফটো : গেটি

ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দীর্ঘ সময় ধরে বাজে ফর্মের কারণে মাঝের ওভারগুলোতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে এখন অনেক মূল্য দিতে হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ৩ এবং ৬। 

মাহমুদউল্লাহ যে শুধুমাত্র রান খরায় ভুগছে তাই নয়, কলম্বোতে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে একটি দুর্বল ফিল্ডিংয়ের কারণে একটি ক্যাচও মিস করেন। কাঁধের পুরনো ইনজুরির কারণে বল হাতেও দলের জন্য তিনি কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। এখন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের কাছ থেকে দ্য সাইলেন্ট কিলার নামে খ্যাত এই ক্রিকেটার এখন সমর্থন হারাতে শুরু করেছেন।

ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ একটি বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ ৪১ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলার পর থেকেই নাকি ড্রেসিংরুমে তার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়।  

কার্ডিফে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা মোটেও মাহমুদউল্লাহকে একাদশের বাইরে বসিয়ে রাখার পক্ষপাতী ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য থাকায় বিশ্বকাপের দলীয় পরিকল্পনা থেকে সাকিব আল হাসান নিজেকে গুঁটিয়ে রাখেন।

ক্রিকবাজকে বিশ্বস্ত সূত্রটি জানিয়েছে- ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের যখন জয়ের জন্য ২০ ওভারে ১৯০ রান প্রয়োজন ছিল, তখনও ড্রেসিংরুমে সবারই বিশ্বাস ছিল যে এই ম্যাচ বের করা সম্ভব। কিন্তু ৪১ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলা মাহমুদউল্লাহর সেদিনের ব্যাটিংয়ের ধরণে রান তাড়া করার তাড়না ছিল না বলেই মনে হয়েছে। বিষয়টি সাকিব মোটেও ভালোভাবে নেননি।

জানা গেছে, বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ তার ৬ নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি আরও উপরে ব্যাটিং করতে আগ্রহী ছিলেন। ফলে গোটা আসরেই তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। 

ক্রিকবাজকে সূত্রটি আরও নিশ্চিত করেছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ফিফটি তুলে নেয়ার পর প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে ড্রেসিংরুমে থাকা দলের কেউ হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাননি! বিষয়টি মেনে নিতে না পারায় তিনি ড্রেসিংরুমে ফিরে সবার সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত এক আচরণ করে বসেন, তাতে সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায়।

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সিরিজে কাঁধের ইনজুরি বহন করা মাহমুদউল্লাহ বিশ্রাম চেয়েছিলেন। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস ছুটিতে থাকার কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত দলের হয়ে খেলছেন। শ্রীলঙ্কা সিরিজে সঠিক সময়ে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশের স্কোর যখন ১৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৫২, এমন পরিস্থিতিতে মাহমুদউল্লাহর ভেতর অতি মাত্রায় শট খেলার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। পরে আকিলা ধনঞ্জয়ের বলে তিনি আউট হন।

বিশ্বকাপের পর প্রতিটি দলই কমবেশি পালাবদলের ভেতর দিয়ে যায়। মাহমুদউল্লাহর বিষয়ে পরবর্তী কেমন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নেয়া হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। অতি দ্রতই দল নতুন পথে যাত্রা আরম্ভ করবে নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাঠ ও মাঠের বাইরের পরিস্থিতি মাহমুদউল্লাহ নিজের অনুকূলে আনতে না পারলে তিনি যে দীর্ঘ সময়ের জন্য দলের বাইরে চলে যেতে পারেন তা বোঝাই যাচ্ছে। ৩৩ বছর বয়সে দল থেকে একবার বাদ পড়ে গেলে তার পক্ষে ফিরে আসাটা প্রায় অসম্ভবও হয়ে যেতে পারে।

আরআইএস 
 

আরও সংবাদ