• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০১৯, ১০:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৩০, ২০১৯, ১০:৩৭ পিএম

হলি আর্টিজান হত্যা মামলা

 ৩ বছরেও ধরা পড়েনি জঙ্গি রিপন ও খালেদ

 ৩ বছরেও ধরা পড়েনি জঙ্গি রিপন ও খালেদ

আগামী ২ মাসের মধ্যে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা ও হত্যাকাণ্ড মামলার নিস্পত্তি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি আবদুল্লাহ আবু। তিনি বলেছেন, এ মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। হয়তো মাস দুয়েক লাগতে পারে। এর মধ্যেই বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে।

রোববার (৩০ জুন) গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
    
আবদুল্লাহ আবু বলেন, ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার দুই বছর পর ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

চার্জশিটের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্তে ঘটনার সঙ্গে মোট ২১ জন জড়িত ছিল বলে তথ্য দিয়েছে পুলিশ। তার মধ্যে ঘটনার দিন ও পরে ১৩ জন বিভিন্ন অভিযানে মারা যায়। তবে এতে হামলার ঘটনার পর আটক হওয়া ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। 

এ মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলন করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় চার্জশিটে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের ২১ জনের মধ্যে ৫ জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে বিভিন্ন অভিযানে মারা যায় আরও ৮ জন। তাই চার্জশিটে বাকি ৮ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। অভিযুক্তরা হলো- রাকিবুল হাসান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাশেদুল ইসলাম, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, মামুনুর রশীদ রিপন ও শরীফুল ইসলাম খালেদ। তাদের মধ্যে মামুনুর রশীদ রিপন ও শরীফুল ইসলাম খালেদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তারা পলাতক। 

বিভিন্ন অভিযানে মারা যাওয়া ৮ জঙ্গি হলেন- তামিম চৌধুরী, মারজান, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান, তানভীর কাদেরী, তারেক রায়হান ও ছোট রায়হান। ঘটনার দিন কমান্ডো অভিযানে হলি আর্টিজানে মারা যায়- রোহান ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল, সামিউল মোবাশ্বির, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও নিবরাস ইসলাম।

মনিরুল ইসলাম জানান,  হামলার নেতৃত্ব দেয় রোহান ইমতিয়াজ আর তার ডেপুটি ছিল খায়রুল ইসলাম পায়েল।

রাজধানী ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকায় গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই রাতে জঙ্গিরা ২০ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালিয়ান, ৭ জন জাপানি, ৩ জন বাংলাদেশি এবং ১ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। জঙ্গিদের হামলায় ওই রাতে ২ জন পুলিশ অফিসারও প্রাণ হারান। 

‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামে যৌথ কমান্ডো অভিযানে ৫ জঙ্গি প্রাণ হারায়। ঘটনাস্থল থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যাকে পরবর্তীতে রেস্টুরেন্টের কর্মচারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। তারা ছিলেন শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।

মনিরুল ইসলাম আরও জানান, হামলার অন্তত ৫/৬ মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে চাপের মুখে ফেলে দেয়া। যাতে দেশ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, সরকার বিব্রত হয় ও পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ যাতে কাজে লাগানো যায়। পাশাপাশি বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করারও একটা উদ্দেশ্য ছিল হামলাকারীদের। তারা ভেবেছিল বেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করলে আন্তর্জাতিকভাবে বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের দৃষ্টি আকর্ষণ হবে। এ জন্যই মূলত তারা হলি আর্টিজানে হামলা চালায়।

মনিরুল ইসলাম জানান, জঙ্গিরা আরও কয়েকটি জায়গায় রেকি করেছিল। কিন্তু তাদের হিসেবে হলি আর্টিজানে নিজস্ব তেমন কোনও নিরাপত্তা ছিল না। দ্বিতীয়ত, এ জায়গা থেকে তাদের  হামলা করে সটকে পড়াটা সুবিধার হবে আর এখানে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি একসঙ্গে পাওয়া যাবে। এসব কারণেই ঘটনার ২/৩ দিন আগে তারা হামলার জন্য হলি আর্টিজানকে চূড়ান্ত করে।

এইচএম/একেএস/এসএমএম

আরও পড়ুন