
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে গৃহকর্মীকে ৮ মাস ধরে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন, একাধিকবার ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) নারী ও শিশু দমন নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ নির্যাতিত কিশোরীর মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে দ্রুত তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত উরুস আলী ছেলে হুমায়ুন মিয়া (২২) সিলেট উপশহর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। প্রায় ৮ মাস আগে হুমায়ুন মিয়া নিজ গ্রামের পার্শ্ববর্তী মিছকিনপুর এলাকার কিশোরীকে (১৭) তার বাসায় তিন হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজের জন্য বাসায় নিয়ে যায়।
একপর্যায়ে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন হুমায়ুন মিয়া। কয়েক মাসে ধর্ষণের ঘটনায় মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মেয়েটি বিয়ের জন্য একাধিকবার হুমায়ুনকে চাপ দেয়। এতে হুমায়ুন গর্ভ নষ্ট করার পরামর্শ দেয় । কিন্তু মেয়েটি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে অনিহা প্রকাশ করলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকালে মেয়েটি আবারো বিয়ের জন্য চাপ দিলে গৃহকর্তা তার শয়ন কক্ষে বেঁধে মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। রোববার (১৮ আগস্ট) ভোর সকালে নির্যাতিত মেয়েটিকে নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় গৃহকর্তা হুমায়ুন মিয়া পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে সোমবার সকালে তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিশোরী মেয়েটি বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
কিশোরী গৃহকর্মীর মা বলেন, আমাদের দরিদ্রতার সুযোগে হুমায়ুন মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়। হুমায়ুন মিয়া আমার মেয়ের গর্ভ নষ্ট করার জন্য তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করায় সে গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, মামলার বিষয়টি এখনো জানি না তবে আদালতে মামলা হতে পারে। মামলার আদেশ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কেএসটি