• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৪:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৪:৪১ পিএম

কবিতা কৃষ্ণমূর্তি বিয়ে না করার পণ ভেঙ্গেছিলেন যে কারণে... 

কবিতা কৃষ্ণমূর্তি বিয়ে না করার পণ ভেঙ্গেছিলেন যে কারণে... 
কবিতা কৃষ্ণমূর্তি

তা র কা র গপসপ

........

বলিউডি গানের দুনিয়ায় তিনি তখন খ্যাতির শীর্ষে। ঠিকই করে নিয়েছিলেন, বাকি জীবনটা কাটাবেন সঙ্গীতসাধনাতেই। কিন্তু চল্লিশে পৌঁছে আচমকাই অন্য খাতে বইতে শুরু করল জীবন। মনের মানুষকে বিয়ে করে রাতারাতি চার সন্তানের মা হয়ে গেলেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। আনন্দবাজার পত্রিকা অবলম্বনে আসুন জেনে নিই প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কবিতা কৃষ্ণমূর্তির কিছু জানা কিছু অজানা কথা। গ্রন্থনায় এসএম মুন্না

তার জন্ম ১৯৫৮ সালে ২৫ জানুয়ারি নয়াদিল্লির তামিল আইয়ার পরিবারে। বাবা টি এস কৃষ্ণমূর্তি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মী। জন্মের পরে মেয়ের নাম রাখেন শারদা। ধ্রুপদী সঙ্গীতের পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই কবিতা তালিম নেন রবীন্দ্রসঙ্গীতে। মাত্র ৮ বছর সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করেন স্বর্ণপদক। 

মু্ম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী ছিলেন কবিতা। কলেজ উৎসবে আলাপ হয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রে কন্যা রাণু মুখোপাধ্যায়ের। কবিতার কণ্ঠে গান শুনে যারপরনাই মুগ্ধ রাণু। রাণু একদিন কবিতাকে নিয়ে গেলেন তার বাবা হেমন্ত মুখোপাধ্যারে কাছে। তিনি কবিতাকে নিজের অনুষ্ঠানে গাইবার সুযোগ করে দেন।

এরপর মান্না দে-এর সান্নিধ্যে আসেন কবিতা। তিনিও বেশ কিছু জায়গায় কবিতাকে গানের সুযোগ করে দেন। বলিউডে তাকে দিয়ে অনেক ছবিতে গান করান লক্ষ্মীকান্ত পেয়ারেলাল।

প্রথম প্লে ব্যাক-এর সুযোগ পান ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া কন্নড় ছবি ‘ওন্দানন্দু কালাদাল্লি’-তে। গিরিশ কারনাডের পরিচালনায় এই ছবিতে একটিমাত্র গান-ই ছিল। লোকসঙ্গীতের আঙ্গিকে কবিতার গলায় সেই গান খুবই জনপ্রিয় হয়।

হিন্দি ছবিতে তার প্রথম বড় ব্রেক ১৯৮৫ সালে ‘প্যায়ার ঝুকতা নহি’ ছবিতে। এরপর ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ‘১৯৪২ : আ লভ স্টোরি’, ‘ইয়ারানা’, ‘অগ্নিসাক্ষী’, ‘খামোশি’-র মতো ছবিতে তার গান ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের তলায় জমি শক্ত করে।

কিশোর-রফি থেকে শুরু করে সোনু নিগম-শান। কয়েক দশক ধরে সেরা গায়কদের সঙ্গে পারফর্ম করেছেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। গায়কদের পাশাপাশি অলকা ইয়াগনিক , অনুরাধা পাড়োওয়াল, শ্রেয়া ঘোষাল, সাধনা সরগমের মতো গায়িকাদের সঙ্গেও তার দ্বৈত সঙ্গীত সুপারহিট।

গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলের সঙ্গেও। হিন্দির পাশাপাশি তেলুগু, োরাঠি, উর্দু, তামিল, মালায়াল্লম, কন্নড়, গুজরাতি এবং বাংলা গানের দুনিয়া দাপটের সঙ্গে শাসন করেছেন কবিতা। গান গেয়েছেন ইংরেজি ও উর্দুতেও।

ধ্রুপদী সঙ্গীত, প্লেব্যাক-এর সঙ্গে তার সাবলীল বিচরণ রবীন্দ্রসঙ্গীতেও। গান করেছেন ‘রামায়ণ’, মহাভারত’, ‘আলিফ লায়লা’-র মতো দূরদর্শনের জনপ্রিয় সিরিয়ালেও।

‘ডোলা রে ডোলা’, ‘আজ ম্যায়ঁ উপর’, ‘মেরা পিয়া ঘর আয়া’, ‘প্যায়ার হুয়া ছুপকে সে’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘নিম্বুরা’-র মতো গান তাকে অজস্র পুরস্কার এনে দিয়েছে। ২০০৫ সালে ভূষিত হন ‘পদ্মশ্রী’-তে।

এইভাবে গান নিয়েই থাকবে‌ন, ঠিক করে নিয়েছিলেন কবিতা। কিন্তু হঠাৎ করেই জীবন জড়িয়ে ফেললেন ডি এল সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে। যশস্বী এই বেহালাবাদকের সঙ্গে আগে অনুষ্ঠান করেছেন কবিতা। ১৯৯৯ সালে তার সঙ্গে বাঁধলেন গাঁটছড়া। দু’জনের বয়সের ব্যবধান ১১ বছর।

সুব্রহ্মণ্যম-এর প্রথম স্ত্রী ভিজি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১৯৯৫ সালে। তার ৪ বছর পরে নিতান্ত সাদামাটা অনুষ্ঠানে তিনি বিয়ে করেন কবিতাকে। স্বামীর আগের পক্ষের ৪ সন্তানকে পরম যত্নে আপন করে নিয়েছেন কবিতা।

বিয়ের পরে কবিতার জীবন আমূল বদলে যায়। বিয়ের পর মুম্বাইয়ের পাটচুকে তিনি স্থায়ীভাবে থিতু হয় বেঙ্গালুরুরে। সুব্রহ্মণ্যমের ৪ সন্তানের মধ্যে ২ মেয়ে এবং ১ ছেলে কোনও না কোনও ভাবে সঙ্গীতজগতের সঙ্গে যুক্ত। এক ছেলে নারায়ণ পেশায় চিকিৎসক।

কবিতা জানান, বিয়ের আগে তার পায়ের কাছে জুতো এগিয়ে দেয়ার জন্যেও একজন থাকত। সেখান থেকে বিয়ের পরেই গুরু-দায়িত্ব এসে পড়ে কাঁধে।

এখন কবিতা একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী, স্নেহময়ী মা এবং দিদিমা। প্রতিটা মুহূর্ত এবং ভূমিকা ভরপুর উপভোগ করছেন তিনি। জীবনের চলার পথকে নিজের ছন্দেই সুরেলা করে নিতে ভালবাসেন তিনি।

এসএমএম

আরও পড়ুন