• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২০, ০৩:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২০, ০৩:৩৫ পিএম

কোভিড-১৯

৫০তম দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৫ হাজার

৫০তম দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৫ হাজার
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ● ওয়েবসাইট

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের শনাক্তের ৫০তম দিনে এসে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪১৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হাজার ৪১৬ জনে পৌঁছাল।

একই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫ জনে পৌঁছেছে। 

রোববার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি বলেন, যারা শনাক্ত হয়েছে তাদের বড় একটি অংশ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান, পরিছন্নতাকর্মী, আয়া, আক্রান্তদের মধ্যে তাদের অনেকেই আছেন। পুলিশ, প্রশাসনসহ অন্যান্য সেবা কাজে নিয়োজিতরাও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে যে ৫  জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ২ জন নারী এবং ৩ জন পুরুষ। এই ৫ জনের মধ্যে ঢাকা শহরের চারজন ও দোহারের একজন রয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিশু মারা গেছে, তার বয়স ১০ বছরের নিচে। মারা যাওয়া শিশু আগে থেকে কিডনি সমস্যায় ভুগছিল। বাকি চার জনের মধ্যে একজনের বয়স ৬০ বছরের ওপরে এবং ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন রয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯ জন সুস্থ হয় বাড়ি ফিরে গেছেন। এ পর্যন্ত ১২২ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।

তিনি জানান, যারা শুধু হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন শুধু সেই তথ্য তুলে ধরা দেয়া হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত বেশিরভাগই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাড়িতে যারা সুস্থ হচ্ছেন সেই তথ্য দেয়া হচ্ছে না। 

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩টি কেন্দ্র থেকে তিন হাজার ৬৮০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা গতকালের তুলনা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। তার মধ্যে তিন হাজার ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৪১৮ জনের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা গতকালের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৮৯টি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আবারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি বিশেষ করে রোজার মাসে মসজিদে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার ওপর জোর দেন।

এ সময় তিনি আবারও সতর্ক করে বলেন, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) দেশে ৩০৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয় ও ৯ জনের মৃত্যু হয়।

শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো দেশে একদিনে ৫০০ জনের বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়।

দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম দিকে সীমিত আকারে পরীক্ষা করলেও পরবর্তীতে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। লাশের সারি দীর্ঘ হতে হতে দেশটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

করোনায় প্রাণহানি ও আক্রান্তের পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৯ লাখ ৬০ হাজার ৬৫১ জন।

অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ হাজার ২৫৬ জনের। এরই মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬২ জন। তবে ১৫ হাজার ১১০ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭২ জন। অন্যদিকে মারা গেছে ৫৩ হাজার ৭৫১ জন।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১০ দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রেই। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিকে বৈশ্বিক এই মহামারীকে গুরুত্ব দেননি।

দেশটির সব অঙ্গরাজ্যেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। তবে করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্য। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৮২ হাজার ১৪৩ জন। মারা গেছেন অন্তত ২২ হাজার ৯ জন।

এর পরেই রয়েছে নিউ জার্সি। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৪৯৮ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন। অন্যদিকে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৪৮ জন। মারা গেছেন ২ হাজার ৭৩০ জন।

বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ২৮৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ লাখ ২১ হাজার ৪৩৯ জন। এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪১ জন।

এসএমএম

আরও পড়ুন