
রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমত, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফেরাত ও শেষ ১০ দিন নাজাত বা জাহান্নাম হতে মুক্তির সময়। এই হাদিসটি কি সহিহ?
চলুন সহিহ হাদিসের আলোকে এই সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা দৃষ্টিপাত করা যাক।
সালমান ফারেসি (রা.) থেকে উক্ত মর্মে বায়হাক্বি বর্ণিত হাদিসটি যঈফ (আলবানী, মিশকাত হা/১৯৬৫ ‘সিয়াম’ অধ্যায়) বরং অনেক সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, পুরো রমজান মাসই রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস। এ মাসে জান্নাত ও রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৫৬ ‘সিয়াম’ অধ্যায়)।
এ মাসে বহু লোক জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রাপ্ত হয় (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৯৬০)।
কিছু প্রয়োজনীয় কথা
রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাস একটি বরকতময় মাস। তিনি আরও বলেন, এ মাসে তোমরা সাহরি খাও, কেননা সাহরিতে বরকত আছে- বুখারি ও মুসলিম।
যেহেতু সাহরি রমজানের প্রতি রাত্রেই খাওয়া হয় সেহেতু প্রতিটি দিন/রাত বরকতের।
অন্যত্র রাসুল (সা.) বলেন, এ মাস মাগফেরাতের মাস তথা ক্ষমার মাস। তিনি আরও বলেন, তোমরা রাতের সালাত (তারাবি) আদায় করো, তোমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে– (সহীহুল বুখারি)।
প্রিয় পাঠক লক্ষ করুন, যেহেতু রমজান মাস পুরোটাই রহমত মাগফেরাতের মাস সেহেতু ১০ দিন ১০ দিন করে পৃথকভাবে ভাবার কোনও দরকার আছে কি?
যদি ১০ দিন ১০ দিন করে পৃথক করে নেই তাহলে প্রবন্ধে উল্লেখিত হাদিসগুলোর কোনও মর্ম থাকেনা।
সহিহ দলিল দ্বারা প্রমাণিত রমজান মাস পুরোটাই রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস।
সুতরাং অযথা ১০ দিন ১০ দিন নামক পৃথকীকরণ থেকে বিরত থাকুন।
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, অনেক সময়ই যইফ (দুর্বল) হাদিস মেনে নেয়া যায়, যদি তা সহিহ হাদিসের বিরোধিতা না করে। কিন্তু এখানে উল্লেখিত হাদিসটি অনেকগুলো সহিহ হাদিসের বিরোধিতা করেছে বলে এ বিষয়ে আমাদের গতানুগতিক ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিষ্ঠিত সহিহ হাদিসের আলোকেই বিবেচনা করা উত্তম বলে বোধ করি।
আল্লাহ পাক সবাইকে যথাযথভাবে পবিত্র রমজানের প্রতিটি সিয়াম পালনের তওফিক দিন।
লেখক ● ইসলামিক লেখক-আলোচক
এসকে/এসএমএম