• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২১, ১২:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৮, ২০২১, ০১:১৩ পিএম

বয়স ১৮, তবু শাসনে বিরক্ত!

বয়স ১৮, তবু শাসনে বিরক্ত!

সন্তান যতই বড় হোক, মা-বাবার কাছে সে ছোটই থাকবে। যেমন শাসন করবেন, তার চেয়ে বেশি আদরে আগলে রাখবেন। কিন্তু কোনো কিছুই যেমন বেশি ভালো লাগে না। তেমনি একসময় সন্তানদের কাছেও এই যত্নকে বিরক্ত মনে হয়। একসময় মা-বাবার কথার বিরোধিতা করতে শুরু করে। একপর্যায়ে বেয়াদবি, এরপর শাসন শুরু। ফলে ধীরে ধীরে সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের দূরত্ব বেড়ে যায়। 

বয়স ১৮ পেরোলে, একজন ছেলে বা মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়। কিন্তু ওই যে বাবা-মায়ের কাছে তার সন্তান এখনো ছোট। তাই সন্তান কী করবে, কী করবে না, তা বাবা-মা ঠিক করে দেন। মাঝে মাঝে সন্তানরা এতে বিরক্ত হন। তাদের চিন্তায় থাকে এখনো কেন বাবা-মা ঠিক করে দেবে কোনটা করা ঠিক এবং কোনটা করা ভুল। সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে তাই তার সিদ্ধান্ত এখন সে নিতে পারে। কিন্তু বাবা মা তাকে স্বাবলম্বী হতে দিচ্ছে না এমন অভিযোগ মনে পুষে রাখেন অনেক সন্তানেরা।

বিষয়টি বাঙালির প্রায় অধিকাংশ ঘরেই দেখা যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তাররা যেমন এই অনিশ্চয়তায় ভোগে, তেমনি বাবা-মাও সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। যার প্রতিফলনেই হয় এই খুনসুটি। তবে এই দিকে যত্নবান হতে হবে উভয়পক্ষকেই। এক্ষেত্রে সন্তানদের তাদের বাবা-মাকে বিষয়টি বোঝাতে হয় অন্যভাবে। অন্যদিকে বাবা-মাকেও সন্তানকে শাসন না করে বরং বুঝিয়ে নিতে হবে।

বাবা-মায়ের কিছু বিষয়ে ছাড় দিতে হবে। যেমন, একটা বয়সের পর প্রত্যেকের ব্যক্তিগত কিছু বিষয় থাকে. যা একান্তই নিজের। এই ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর বাবা-মায়ের বোঝা দরকার। সন্তানকে নিজস্ব সময় কাটানোর সুযোগ দিতে হবে। যদিও বেশির ভাগ বাবা-মার কাছেই বিষয়টি খারাপ ইঙ্গিত করে। তারা ভাবে, ছেলে বা মেয়ে নেতিবাচক কিছু করছে। এক্ষেত্রে  ছেলেমেয়েকেই প্রাইভেসির প্রয়োজনীয় আস্তে আস্তে বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। নিজের জন্যে একটা আলাদা একটি রুমের ব্যবস্থা করে দেওয়ার বায়না ধরার আগে কেন এটি প্রয়োজন তা বাবা-মাকে খুলে বলতে হবে।

বাবা-মা সব সময়ই সন্তানের ভালো চায়। কিন্তু তাই বলে সব সময় নিজেদের মতামত ছেলেমেয়েদের ওপর চাপিয়ে দেওয়াও অযৌক্তিক হবে। সন্তানের নিজস্ব কিছু মতামত থাকতে পারে। কিছু বিশেষ পছন্দ থাকতে পারে। সেগুলো বুঝে নেওয়া উচিত প্রতিটি বাবা-মাকেই। সন্তানের উচিত যেকোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাবা-মাকে জানানো। অন্যদিকে সেই সিদ্ধান্তকে মূল্যায়ন করার দায়িত্ব মা-বাবার।

বাবা-মা অতিরিক্ত আদরে অনেক সময় হিতে বিপরীত হতে পারে। সন্তানের প্রতি বেশি খেয়াল রাখতে গিয়ে অনেক সময় তারা সহানুভূতি হারিয়ে ফেলেন। সন্তানের ভালো লাগা বা খারাপ লাগাকে গুরুত্ব দেন না। এতে সন্তানের মনেও হচ্ছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। 

এমন ছোট ছোট বিষয়গুলোই একসময় বড় হয়ে দাঁড়ায়। একসময় সন্তানরা হতাশ হয়ে বিভিন্ন মানসিক সমস্য়ায় ভোগেন। বাবা-মায়ের মধ্য়েও অস্থিরতা বেড়ে যায়। অশান্তিতে সম্পর্কগুলো অগোছালো হয়ে পড়ে। তাই সন্তান বড় হলেই তার জায়গাটা বুঝিয়ে দিন। তাদেরকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করুন। বোঝাপড়ার বিষয়গুলো মিটিয়ে হয়ে উঠুন আদর্শ বাবা-মা।