• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২, ২০২২, ০২:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২, ২০২২, ০৮:০৪ পিএম

কোথায় কখন ঈদ জামাত

কোথায় কখন ঈদ জামাত
ফাইল ফটো

করোনার কারণে গত দুই বছর প্রায় বন্ধ ছিলো ঈদ জামাত। সংক্রমণ কমে আসায় এবার দেশে ফিরেছে চিরচেনা আমেজ। দেশজুড়ে বিভিন্ন ঈদগাহের পাশাপাশি পাড়া মহল্লায়ও চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি। নির্ধারিত হয়েছে জামাতের সময়সূচি।

রোববার (১ মে) বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে মঙ্গলবার (৩ মে)। ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থানে সক্রিয় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

দুই বছর পর এবার রোজার ঈদের প্রধান জামাতটি হবে সকাল ৮টায় ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই জামাতে নামাজ পড়বেন ঈদের সকালে। মহামারীর কারণে গেল চারটি ঈদে ঈদগাহ ছিল আয়োজনশূন্য।

চট্টগ্রাম নগরীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে। সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে প্রধান জামাত। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায়। এবার নগরীর ৯৫টি স্থানে ঈদ জামাতের আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটি। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায়ও চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি।

রাজশাহীর হযরত শাহমখদুম রূপোস কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টায়। তবে আবহাওয়া বৈরি থাকলে ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে প্রধান জামাত হবে হযরত শাহমখদুম দরগা শরীফ জামে মসজিদে।

বরিশালে এবার রেকর্ড সংখ্যক ৫৫০টি মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। বড় মসজিদগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত প্রতি ৪৫ মিনিট পর অনুষ্ঠিত হবে ঈদ জামাত।

সিলেটে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরের শাহী ঈদগাহে। এ ছাড়াও শাহজালাল ও শাহপরান মাজারেও অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। ঈদ জামাতকে ঘিরে কয়েকস্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা  রক্ষা বাহিনী।

খুলনায় ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টায় সার্কিট হাউজ ময়দানে। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হবে ঈদ জামাত।

মহামারীর কারণে জাতীয় ঈদগাহের মতো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠেও গত দুই বছর ঈদ জামাত হয়নি। আগে এই মাঠেই দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের আয়োজন হত।

এবার ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এ মাঠে ঈদের নামাজ পড়তে আসে। সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সব আয়োজন করতে সব প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছে।

শোলাকিয়ার ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ। মোবাইল বা ছোটখাটো ডিভাইস নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। শুধু জায়নামাজ নিয়ে জামাতে আসা যাবে।

ঈদের এই জামাতে যাতায়াতের সুবিধার জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত আয়োজনে কয়েক বছর ধরে শোলাকিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাচ্ছে দিনাজপুর গোর-এ- শহীদ বড় ময়দান। আয়োজকদের দাবি, প্রায় ২২ একর আয়তনের এ মাঠে পাঁচ থেকে ছয় লাখ মানুষ সেখানে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন।

এ বছর সেখানে ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব শামসুল হক কাসেমী। সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।

বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাত

ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বরাবরের মতো এবারও রোজার ঈদে পাঁচটি জামাত হবে; প্রথম জামাত শুরু হবে সকাল ৭টায়। তাতে ইমামতি করবেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।

এরপর সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, সকাল ১০টা এবং বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে আরও চারটি জামাত হবে বায়তুল মোকাররমে।

আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহের বদলে প্রধান ঈদ জামাত হবে বায়তুল মোকাররমে।

ঢাকায় অন্যান্য জামাত

রাজধানীতে ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে পুলিশ কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

আজিমপুর ছাপড়া মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়।

ধানমণ্ডির এলিফ্যান্ট রোডের তাকওয়া মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, ধানমণ্ডির বায়তুল আমান মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায়, ঈদগাহ মাঠ মসজিদে ৮টায় এবং সোবহানবাগ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত হবে।

তাকওয়া মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান ধানমণ্ডি থানার ওসি মো. ইকরাম আলী।

পুরান ঢাকার লালবাগ শাহী মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় দুটি জামাত হবে।

আজিমপুর কবরস্থান মসজিদে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চারটি জামাত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয়টি সকাল ৯টায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৮টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের পূর্ব পাশের মাঠে সকাল ৮টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
আজিমপুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার বায়তুন নূর জামে মসজিদে সকাল ৮টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

সকাল সোয়া ৭টায় বুয়েটের খেলার মাঠে ঈদ জামাত হবে।

সকাল ৮টা ভূঁইয়াপাড়া বায়তুর ফালাহ জামে মসজিদের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।

সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, হুইপ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা এই জামাতে অংশ নেবেন।

গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে সকাল ৬টায়, সকাল সাড়ে ৭টায় এবং ৯টায় হবে তিনটি ঈদ জামাত।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মারকাজুল ফিকহিল ইসলামী মসজিদে সকাল ৭টায়, সি ব্লকের উম্মে কুলসুম জামে মসজিদ সকাল সোয়া ৭টায়, এফ ব্লকের জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, জি ব্লকের বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ সকাল ৮টায়, এন ব্লকের ফকিহুল মিল্লাত জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় হবে ঈদের জামাত।

আরামবাগ দেওয়ানবাগ শরিফে সকাল ৮টা এবং সাড়ে ৯টায় দুটি ঈদ জামাত হবে।

দারুস সালামের মাদবর বাড়ি জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা এবং সকাল ৯টায় দুটি জামাত হবে। মিরপুর ১২ নম্বরে হারুন মোল্লাহ ঈদগাহে ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়।

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদে।

ঈদের দিন সকাল ৮টায় প্রথম এবং ৯টায় জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) তত্ত্বাবধানে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে যে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হত, এবার তা প্রতি ওয়ার্ডের মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

চসিকের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকতা কামাল চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকাল ৮টায় প্রথম জামাতের ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী। ৯টায় দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করবেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমেদুল হক।

৪১টি ওয়ার্ডে সিসিসি’র কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

ময়মনসিংহ

ইসলামিক ফাউন্ডেশন ময়মনসিংহের পরিচালক আজমল হক জানান, ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে। একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত হবে সকাল ৯টায়। 

আকুয়া মার্কাজ মসজিদে সকাল ৭টা, ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদে সকাল সাড়ে ৯টা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সাড়ে ৮টায়, ভাটিকাশর জামে মসজিদে সকাল ৯টা, বলাশপুর জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও জেলার ৭৩টি স্থানে বড় পরিসরে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

রাজশাহী

রাজশাহীতে ঈদুল ফিতরের নামাজের প্রধান জামাত হবে সকাল ৮টায় রাজশাহী শহরের হযরত শাহমখদুম রূপোস (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে।

এখানে ইমামতি করবেন জামিয়া ইসলামিয়া শাহমখদুম (রহ.) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি শাহাদত আলী।

তিনি জানান, ঈদের দিন বৈরী আবহাওয়া থাকলে ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হযরত শাহমখদুম (রহ.) দরগা শরীফ জামে মসজিদে। সেখানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হলেও সময় অপরিবর্তিত থাকবে।

রাজশাহীতে ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরীর টিকাপাড়া ঈদগাহ ময়দানে। সেখানেও সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সকাল ৮টা।

নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। এখানে সাহেববাজার বড় মসজিদসহ মধ্য শহরের পাঁচটি মসজিদের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এবারও এখানে নারীদেরও জামাতে নামাজের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানিয়েছে, শহরের প্রায় ৫০টি এবং জেলার ৯ উপজেলায় আরও প্রায় ৩৫০টি ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ঈদগাহ কমিটি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুরুত্বপূর্ন ঈদগাহে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

জাগরণ/জীবনযাপন/ধর্ম/ঈদজামাত/কেএপি/এমএ