রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলায় চার্জ গঠন করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার এ চার্জ গঠনের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ এই মামলায় মোট ১১০ জন আসামি ছিলেন।
এদের মথ্যে পলাতক আছেন ৪৬ জন। এছাড়া জামিনে আছেন ৬১ জন, যারা প্রত্যেকেই আজ আদালতে হাজির ছিলেন।
অপর তিন আসামি জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং শাহীন মৃত্যুবরণ করায় অব্যাহতি পেয়েছেন মামলা থেকে।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের এপিপি সিরাজী শওকত সালেহীন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আদালত মামলার অভিযোগত্র গ্রহণ করেছেন। সাঈদীসহ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হলো।
মামলায় সাঈদীর আসামি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘটনার আগের দুই দিন আগে সাঈদীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা রাজশাহীতে এসেছিলেন। তাদের প্ররোচনা ও পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড হয়। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে বিষয়টি। ধারা অনুযায়ী এই মামলায় সাঈদীর অন্তত সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু ইউসুফ মোহাম্মদ সেলিম জানান, প্রথমে এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন ৩৫ জন, যেখানে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম ছিল না। পরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে সাঈদীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের নাম জড়ানো হয়। এই মামলায় কোন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। প্রত্যেকের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন তারা। বিকেলে এই সংক্রান্ত আদেশ দেবেন আদালত।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখল নিয়ে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা। ওই সংঘর্ষে শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগ নেতা ফারুককে খুন করে মরদেহ শাহ মখদুম হলের পেছনের ম্যানহলে ফেলে দেয়। ওই রাতে ছাত্রলীগের আরও তিন কর্মীর হাত-পায়ের রগও কেটে দেয় হামলাকারীরা।
পরদিন এ নিয়ে নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩৫ শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
পরে ওই মামলার হুকুমের আসামি করা হয় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়েকজনকে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিজামী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
২০১২ সালের ৩০ জুলাই নগরীর রাজপাড়া থানার তৎকালীন ওসি জিল্লুর রহমান মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত বছরের ২৫ এপ্রিল সেখান থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। এরপর ওই বছরেরই ৭ এপ্রিল মামলাটি আসে মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে।
কেএসটি