অভাবের তাড়নায় গাইবান্ধা পৌরসভা এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে দুলাল মিয়া (৬১) নামের এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন। তিনি গাইবান্ধা শহরের সবুজপাড়া গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শহরের সবুজপাড়ায় ফজরের নামাজ শেষে এলাকার মুসল্লিরা মসজিদ থেকে আসার সময় দুলালের নিজ বাড়ির সামনে কাঠের ধরনার সাথে দুলালকে গামছা পেঁচিয়ে ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে এলাকাবাসী সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
দুলাল মিয়ার ভাতিজা মানিক বলেন, চাচা সব সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। কোনো কাজ না করার কারণে পরিবারে অভাব-অনটন লেগে থাকত। তিনি আরও বলেন, দুলাল তিনটি বিয়ে করেছেন।
দুলালের বড় স্ত্রীর মেয়ে বলেন, ‘আমাদের পরিবারে আমরা দুই ভাই ও তিন বোন। আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন বগুড়ায়। তার ঘরেও একটি সন্তান রয়েছে। এ ছাড়া তিনি কয়েক বছর আগে তৃতীয় বিয়ে করেন এবং সেই সংসারেও একটি প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তার সাথেই তিনি সংসার করছিলেন। বাবা পরিবারের ভরণপোষণ দিতে না পারার কারণেই হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত দুলালের ছোট স্ত্রী শাহিনুর বেগম জানান, ‘প্রায় ১৫ দিন যাবৎ তিনি এলোমেলো চলাফেরা করতেন। সংসারের বাজার-সদাই পর্যন্ত তিনি করতেন না। এ ব্যাপারে তাকে কিছু বললে আমার সাথে খারাপ আচরণ করতেন।’ পাশেই বসে থাকা প্রতিবন্ধী সন্তানকে কোলে নিয়ে শাহীনুর বলেন, ‘আমাদের যে বসবাসের ঘরটিতে এখন আছি, সেটিও তিনি কিছুদিন আগে তার ভাতিজার কাছে বিক্রি করেন। এখন এই অসহায় প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে কোথাও দাঁড়ানোর মতো এক টুকরো জায়গা নেই।’ এ কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, দুলাল আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এনআই