৩৮ ডট বল খেলা নিয়ে মাহমুদউল্লাহর অদ্ভুত যুক্তি 

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০১৯, ১২:৪৯ পিএম ৩৮ ডট বল খেলা নিয়ে মাহমুদউল্লাহর অদ্ভুত যুক্তি 
রাজকোটে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিং করার সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফটো : বিসিবি

রাজকোটে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনাই পেয়েছিল বাংলাদেশ। লিটন দাস এবং মোহাম্মদ নাঈম শেখের ৬০ রানের ঝড়ো জুটির পরও বাকি ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারায় ১৫৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। 

টাইগার ব্যাটসম্যানরা ১৬টি চার এবং একটি ছক্কা হাঁকালেও এক, দুই কিংবা তিন রান নিতে পেরেছে সামান্যই। তবে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে না পারার সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাটসম্যানদের ৩৮টি ডট বল খেলা, যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একেবারেই বেমানান।

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যে লাল-সবুজের দলকে মাত্রাতিরিক্ত ডট বল ডুবিয়েছে, তা বলা বাহুল্য। তবে বিষয়টি নিয়ে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অদ্ভুত এক যুক্তি দাঁড় করালেন। তার ভাষ্য, ‘একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪০টির উপরে ডট বল খেললে ম্যাচ জেতার সুযোগ কমে যায়। সেখানে আমরা ৩৮টি ডট বল খেলেছি। হয়তো ঠিক আছে বা নেই। তবে উন্নতির অবশ্যই সুযোগ থাকছে।’

তবে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘আগে ব্যাট করে আমাদের ন্যূনতম ১৭৫ রান করা উচিত ছিল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারানোয় তা আমরা পারিনি রোহিত ভালো ফর্মে থাকলে তাকে থামানো কঠিন। স্কোর ডিফেন্ড করার একটা সুযোগ আমাদের পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংগ্রহটা ভালো হয়নি। চাপটা সম্ভবত আমাদের ওপর ছিল না। এ ম্যাচে আমরা কী কী ভুল করেছি দল হিসেবে সেগুলো ভাবতে হবে। কাউকে দোষ দিচ্ছি না তবে ম্যাচের গতি-প্রকৃতি বোঝাটা জরুরি। কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে বিশেষ করে ব্যাটিং।’

নিজের ব্যর্থতা নিয়েও কথা বলেছেন দ্য সাইলেন্ট কিলার নামে খ্যাত মাহমুদউল্লাহ। তার মতে, ‘বড় স্কোর গড়তে না পারার জন্য আমারও কিছুটা দোষ আছে। আমি ১৯তম ওভারে আউট হয়ে গিয়েছি। আমি যদি শেষ সময় পর্যন্ত থাকতে পারতাম, হয়তো আরও কিছু রান করতে পারতাম।’ 

দুইবার জীবন পেয়েও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস। তবে পরের ম্যাচেই যে লিটন বড় ইনিংস খেলে ফেলতে পারেন, সেই ব্যাপারে বেশ আশাবাদী টাইগার অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘লিটন সব সময় এমন আক্রমণাত্মক খেলে থাকে। আমরা জানি ও খুবই ভালো এবং প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। হয়তো ওর দিনে ও একাই টেনে নিয়ে যাবে। ওই দিনটা সামনের ম্যাচেই আমরা পাবো আশা করি। একবার, দুইবার না ও তো ধারাবাহিকভাবে এই সংস্করণে ভালো ব্যাটিং করছে। দল হিসেবে আমরা প্রত্যাশা করি যে, ওর ওই ক্ষমতা আছে একটা বড় ইনিংস খেলার। তাহলে আমাদের রানটা আরেকটু বাড়তে পারে। আশা করছি, নিজের ভুলগুলো সে বুঝতে পারবে এবং পরের ম্যাচে আরও ভালোভাবে রান করবে।’

আফিফ হোসেন এবং মোসাদ্দেক হোসেন দলের প্রয়োজনের সময়ে রাজকোটে ব্যাট হাতে চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ দলের বড় স্কোর না পাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। তবে অধিনায়ক তাদের প্রতি নিজের পূর্ণ আস্থার কথা জানিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি ওদেরকে কোনো দোষ দেবো না। কারণ আফিফ যে ধরনের খেলা খেলে থাকে সেটাই চেষ্টা করছিল। হয়তো আজকে সংযোগ (ব্যাটে-বলে) করতে পারেনি। ওদের দুইজনের প্রতিই আমার আস্থা আছে। আমি মনে করি আমাদের পুরো দলেরই আস্থা আছে যে, ওরা হয়তো পরবর্তী ম্যাচে ফিনিশিং করতে পারবে।’ 

দিল্লিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২২ রানে ২ উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চমকে দিয়েছিলেন লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। রাজকোটে দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগার বোলারদের চরম ব্যর্থতার দিনে একমাত্র সফল ছিলেন বিপ্লব, ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে তিনি নেন ২ উইকেট।

২০ বছর বয়সী বিপ্লবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘ও খুব ভালো বোলিং করেছে। প্রথম ম্যাচে যেভাবে বল করেছে, সেভাবে অনেক সাহস নিয়ে বোলিং করেছে। এই সিরিজ শুরুর আগে আমি ওকে বলেছিলাম, এই ধরনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যদি ভালো করতে পারো তাহলে তোমার আত্মবিশ্বাসের লেভেলটা অনেক ভালো হবে। কারণ আমরা সবাই জানি, ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ অনেক শক্তিশালী। তো আমার মনে হয় ওর আত্মবিশ্বাসের লেভেলটা ভালো। ঠিক জায়গায় আছে। এটা যদি পরের ম্যাচে ধরে রাখতে পারে, আমাদের কয়েকটা উইকেট এনে দিতে পারে, তাহলে আমাদের জন্য ভালো।’  

আগামী রোববার (১০ নভেম্বর) নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে তার আগে যে নিজেদের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, মাহমুদউল্লাহ সেটিও জানিয়ে রাখলেন। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে আপনি প্রতিদিন শিখতে পারেন। গ্রেট খেলোয়াড়েরা একই ভুল বারবার করে না। তরুণদের জন্য ভালো হয় যদি তারা ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে। এ ধরনের উইকেটে সেট ব্যাটসম্যানদের থাকতে হয়, রোহিত যেটা করেছে।’

আরআইএস 

আরও সংবাদ