• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২১, ০২:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৫, ২০২১, ০২:১৬ পিএম

চন্দ্রগ্রহণের কিছু কথা

চন্দ্রগ্রহণের কিছু কথা

২৬ মে হতে চলেছে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ আর সূর্যের মাঝখানে যখন পৃথিবী অবস্থান নেয় তখনই হয় চন্দ্রগ্রহণ। এই সময় চাঁদ লালচে হয়ে যায়। কারণ চাঁদের পিঠে তখন পড়ে পৃথিবীর ছায়া।

আইএসির এক প্রশিক্ষণ গ্রন্থে বলা হয়, সূর্যগ্রহণ কেমন দেখা যাবে তা নির্ভর করছে যে দেখছে তার ভৌগলিক অবস্থানের ওপর। কিন্তু চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে ঘটে উল্টোটা: পৃথিবীর যেকোনও জায়গা থেকে এই গ্রহণ দেখা যাবে। যদি গ্রহণের সময় চাঁদ দিগন্তের উপরে উঠে আসে।

মহাকাশপ্রেমীরা জানেন, চন্দ্রগ্রহণের খুঁটিনাটি। কিন্তু সাধারণদের আগ্রহেরও শেষ নেই। তারাও গ্রহণ দেখতে নিজ স্থান থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যান। চন্দ্রগ্রহণ দেখার আগে এই বিষয়ে কিছু জ্ঞান তো থাকা চাই। জ্ঞান থাকলেই বিষয়বস্তু দর্শন আরও উপভোগ্য হয়ে উঠবে। 

সাধারণত তিন রকম হয় চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, খণ্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, পেনাম্ব্রা চন্দ্রগ্রহণ।
 

পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ

পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণে পৃথিবীর বাযুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে সূর্যরশ্মি প্রবাহিত হয়ে যখন আসে তখন চাঁদের রং হয়ে ওঠে কমলা। নাসার তথ্য অনুযায়ী, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ এবং সূর্য পৃথিবীর দুই পাশে ঠিক এক লাইনে অবস্থান করে। যদিও পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে পুরোটা ঢেকে ফেলে। তবে চাঁদের ওপর সূর্যরশ্মির কিছুটা গিয়ে পড়ায় চাঁদের রং হয়ে ওঠে লালচে বা কমলা।

সূর্যরশ্মিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে যেতে হয়। এ সময় সূর্যের নীল রশ্মি বায়ুমণ্ডলে শোষিত হয়ে চাঁদকে লাল দেখায়। রক্তিম এই চাঁদকে বলা হয় "ব্লাড মুন"।

চাঁদের ব্যাসের চেয়ে পৃথিবী ৪ গুণ বড়। এতে পৃথিবীর ছায়ার পরিধিও অনেক বেশি। এতে পুরো চন্দ্রগ্রহণের প্রক্রিয়া লম্বা সময় ধরে চলে। প্রায় ১০৪ মিনিট পর্যন্ত এটা স্থায়ী হতে পারে।

খণ্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ

নাসার তথ্য মতে, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বিরল। কিন্তু খণ্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ঘটে অন্তত বছরে দুবার।

চাঁদের একটা অংশ যখন পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায় তখন হয় চাঁদের খণ্ডগ্রাস গ্রহণ। এই গ্রহণে চাঁদকে কতটা গ্রাস করে নিচ্ছে পৃথিবী এর ওপর নির্ভর করে কতটা গাঢ় লালচে রং হবে। কখনও আবার মরচে রং বা কাঠকয়লার রঙের ছায়া পড়ে চাঁদের গায়ে।

এ বছর ১৮ থেকে ১৯ নভেম্বরে হতে পারে এই গ্রহণ। এশিয়া, ইউরোপের বেশ কিছু জায়গা, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দেখা যাবে এই খণ্ডগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।

পেনাম্ব্রা চন্দ্রগ্রহণ

পেনাম্ব্রা লাতিন শব্দ। পেনাম্ব্রা চন্দ্রগ্রহণ হয় যখন পৃথিবীর হালকা ছায়াচ্ছন্ন অংশ পেনাম্ব্রা সেই অংশের মধ্যে দিয়ে চাঁদ প্রদক্ষিণ করে। এই ছায়া গাঢ় নয়- অনেকটাই হালকা। তাই এই গ্রহণ সাধারণ মানুষের চোখে সেভাবে ধরা পড়ে না। এই ছায়াচ্ছন্ন অংশ ছোট হলে চাঁদের গ্রাস হচ্ছে কিনা তা বোঝাও কষ্টকর। এ কারণে এই গ্রহণের কোনও উল্লেখ তারিখের চর্চা করেন না মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই গ্রহণের হিসাব রাখেন এবং তাদের জ্ঞানবিদ্যায় এই গ্রহণের প্রভাব পর্যালোচনা করেন।

যেভাবে দেখা যাবে চন্দ্রগ্রহণ

সূর্যগ্রহণের মতো চন্দ্রগ্রহণ দেখতে আলাদা সতর্কতা বার্তা নেই। খালি চোখেই এই গ্রহণ দেখা যায়। এতে চোখেরও কোনও ক্ষতি হয় না। খালি  চোখে নিজ স্থান থেকেই চন্দ্রগ্রহণ দেখতে পারেন। তবে টেলিস্কোপের সাহায্যে এই গ্রহণের সৌন্দর্য উপভোগ নিঃসন্দেহে আরও স্মরনীয় হবে।