
সূর্যকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে মহাজগত। সূর্যের আলোই এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং একমাত্র শক্তির উৎস। তাই সূর্যের ওপর নজর রাখতে হয় পৃথিবীবাসীকে।
সূর্যকে যদি বলা হয় বিশাল এক অগ্নিপিন্ড তাহলেও একে বর্ণনা করা যাবে না। সূর্যে সব সময় ঘটছে বিশাল বিশাল সব বিস্ফোরণ। সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে তাপ ও আলো।
সেই সূর্যেই এখন চলছে তাণ্ডব। অন্য অর্থেই প্রলয় চলছে সূর্যে। যা বর্তমানে ভয়াবহ আকার নিয়েছে। যা বিজ্ঞানীদের ধারণারও বাইরে। সূর্য হিসাবে বাইরে গিয়ে এখন বেশি সক্রিয়।
এই মুহূর্তে সোলার সাইকেলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে প্রলয়কাণ্ড। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ১৪টি সৌরগহ্বর তৈরি হয়েছে, আর মহাবিস্ফোরণ ঘটেছে ছয়টি।
এসব বিস্ফোরণের কয়েকটি আবার সরাসরি আঘাত করেছে পৃথিবীকে। ওজন স্তর ক্ষয়ে গিয়ে সেই ধাক্কাতে পৃথিবী জুড়েই তাপমাত্রার পারদ বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূর্যে বড় আকারের বিস্ফোরণ হলে এর প্রভাব মহাকাশে সুদূরপ্রসারী হয়। এই মহাবিস্ফোরণকে ইংরেজিতে বলা হয়- করোনাল মাস ইজেকশন।
সূর্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকা মহাবিস্ফোরণ থেকে বিকিরণ করা তাপ ও চৌম্বক শক্তি মহাকাশে প্রতি ঘন্টায় কয়েক মিলিয়ন মাইল বেগে ছুটতে পারে সব পরিমাণ পদার্থ নিয়ে।
এসব সৌর উপাদান আন্তঃগ্রহের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়। এর পথে যে কোনও গ্রহ বা মহাকাশযানকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে।
একই ভাবে সৌরগহ্বর তৈরিও হয় অগ্নুত্পাতে। আসলে বাকি অংশের তুলনায় ওই অংশটি ঠান্ডা হয়, তাই বাইরে থেকে কালো লাগে।
নাসা জানাচ্ছে, সোলার সাইকেল ১১ বছরের একটি পক্রিয়া। ১১ বছর পর সূর্যে বিস্ফোরণ, সৌরগহ্বর তৈরির মতো নানা কাণ্ড ঘটতে থাকে।
কয়েক সপ্তাহ এই প্রলয় চলার পর শান্ত হয় ধীরে ধীরে। এবারের সেই পর্যায়টি এখনও সর্বোচ্চ পরিস্থিতিতে পৌছায়নি।
নাসা জানিয়েছে, সূর্যের এই তাণ্ডব আরও বাড়বে, ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে। যার প্রভাব পড়বে প্রাণী জগত্, স্যাটেলাইট ও মহাকাশচারীদের উপরে।
সূর্যে প্রলয় যত বাড়বে বেশি বেশি অগ্ন্যুত্পাত ও সৌরগহ্বর তৈরি হবে। মহাকাশভিক্তিক প্রযুক্তির উপরে যেহেতু মানব সভ্যতা বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, ফলে বড় প্রভাব পড়তে পারে সেই সব প্রযুক্তিতে। বাদ যাবে না আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনও।
জাগরণ/মহাকাশবিজ্ঞান/এসএসকে