• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৯, ১১:৪৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৯, ২০১৯, ১১:৪৩ এএম

নিজেকে নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই লিটনের

নিজেকে নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই লিটনের

নিজের বিশ্বকাপ অভিষেকে ৫ নম্বরে নেমে কি ছেলেবেলার বিকেএসপির দিনগুলোতেই ফিরে গেলেন লিটন? ১৪ বছর বয়সে যখন মাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে পরিবারের বড় ছেলে লিটন বিকেএসপিতে নিজের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নটাকে সত্যি করতে এলেন, তাকে তো এই মিডল অর্ডারেই জায়গা দেয়া হয়েছিল। 

বেশ কিছুদিন সেখানে ব্যাটিং করার পর লিটনের কোচ মন্টু দত্ত একদিন তাকে ডেকে বললেন, 'টপ অর্ডারে ব্যাট না করলে ভালো ব্যাটসম্যান হবি কিভাবে?' মন্টু স্যারই সেদিন লিটনের মধ্যে প্রতিভার সন্ধান পেয়ে তাকে উপরের দিকে ব্যাট করার সুযোগ দিয়ে দেন। এখনও লিটন মনে করেন, কোচের সেই সিদ্ধান্তই তার ক্যারিয়াকে দিশা দেখিয়েছে। 

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে লিটন বলেন, 'ওই সময়ের পর থেকে নিচের দিকে খুব কমই খেলেছি। তবে যদি দলের প্রয়োজন হয়, আমাকে সেই পজিশনেই মানিয়ে নিতে হবে, যাতে আমি সুযোগের পুরোটা কাজে লাগাতে পারি।' 

লিটন দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন ঠিকই। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৬৯ বলে ৯৪ রানের ইনিংসই তার প্রমাণ। ৩২২ রানের লম্বা রান তাড়ার দিনে ৫ নম্বরে নেমে লিটন দেখিয়েছেন তার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সাকিব আল হাসানের সাথে ১৮৯ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন। বিশ্বকাপের আগে এসব কিছু লিটনের জন্য ছিল কল্পনাতীত। 

লিটনের ইনিংস নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে সারা দেশজুড়ে, তবে তার নিজের কি ভাবনা? না, একটুও আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন না লিটন। এখনো তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ধারাবাহিকভাবে লাল-সবুজ জার্সিতে সামর্থ্যের প্রমাণ না দিতে পারার আক্ষেপ। 

লিটনের কথায়, 'অন্য কারো প্রত্যাশার তুলনায় আমার কাছে বড় হচ্ছে নিজের প্রত্যাশা পূরণ করে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমি আমার প্রত্যাশার জায়গায় যেতে পারিনি। হ্যাঁ, ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটি আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। তবে সবশেষে প্রয়োগটাই মুখ্য। যত আত্মবিশ্বাসই থাকুক না কেন, তা যদি প্রয়োগ না করা যায় তবে কোনো উপকার আসে না। বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে আমি রান করেছি, তবে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালো করার আকাঙ্ক্ষা আমার আছে।' 

মিডিয়া তো তাকে এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে, এই ব্যাপারটি লিটনের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে নিজের মিডিয়াবিমুখ স্বভাবের কথাই বললেন লিটন। বলেন, 'প্রথমত, আমি জানতামই না আমাকে আমার প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ভাবা হয়! আমি খুব একটা মিডিয়া অনুসরণ করি না। হয়তো সেজন্যই আমি এ ব্যাপারে জানি না। আমি এটা বিশ্বাস করি না কারণ আমার চারপাশে আরও অনেক ভালো ক্রিকেটার রয়েছে।' 

'দ্বিতীয়ত, অন্য সবার মতো আমিও বেশ ভালো করেই জানি যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারিনি। আমার মনে হয়না কাজে লাগাতে না পারলে কিংবা ফলাফল না পেলে প্রতিভার কোনো দাম আছে। প্রতিভার থেকেও ধারাবাহিকভাবে রান করাটা জরুরি।' 

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও ধারাবাহিক হতে নিজে একটা লক্ষ্যও ঠিক করেছেন লিটন। এখন থেকে যখনই ক্রিজে আসবেন, অন্তত ১০ ওভার মাঠে থাকার প্রতিজ্ঞা তার। লিটন বলেন, 'আমি এখনও আমার সাফল্যের থেকে ব্যর্থতা বেশি হওয়ার কারণ খুঁজছি। সত্যি কথা বলতে আমার এখন একমাত্র লক্ষ্য হলো ১০ ওভার টিকে থাকা। এই কাজটাই আমি অধিকাংশ সময়ে করতে পারিনি। আশা করি এখন থেকে পারব।' 

এমএইচএস