• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯, ০৩:০৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯, ০৩:০৭ পিএম

এখনো বাকি স্টোকসের হিসাব মেলানো

এখনো বাকি স্টোকসের হিসাব মেলানো
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে কার্লোস ব্রাথওয়েটের কাছে চার ছক্কা খেয়ে মুষড়ে পড়া বেন স্টোকস। ফটো : সংগৃহীত

২০১৬ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ। শেষ ওভারের চতুর্থ বল। স্ট্রাইকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্লোস ব্রাথওয়েট। ৩ বল আগেও যে সমীকরণ ছিল, ৬ বলে ১৯ রান। তিন বল পরই তিনি তা নামিয়ে এনেছেন ৩ বলে ১ রানে। আগের তিন বলের সবগুলোতে হাঁকিয়েছেন ছক্কা। বোলিং প্রান্তে ছিলেন বেন স্টোকস। 

শেষ তিন বলে ১ রানের সমীকরণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় তখন কেবলই সময়ের ব্যাপার। সেই সময়টাও নিলেন না ব্রাথওয়েট। স্টোকসের করা চতুর্থ বলটা উড়িয়ে ফেললেন সীমানার বাইরে। দ্বিতীয়বারের মতো টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলো ক্যারিবীয়ানরা। কমেন্ট্রি বক্স থেকে তখন দরাজ গলায় ইয়ান বিশপ বলে উঠেছেন ‘কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, রিমেম্বার দ্য নেইম’। ততক্ষণে মুষড়ে পড়েছেন বোলার বেন স্টোকস। কপালে হাত দিয়ে বসে পড়েছেন, চোখটা অবনত মাটিতে। যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না কিছুই। কী হলো? স্টোকস জানেন বিশ্বকাপটা ফসকে গেল। 

কিন্তু সব কী শেষ হয়ে গেল তাতে? না। স্টোকস তা হতে দেননি। তিনি ব্রাথওয়েটের নাম মনে রেখেছেন, সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন নিজের নামটাও। তবে ইংল্যান্ডকে আরও একবার বিশ্বকাপ ফসকে দিয়ে নয়, লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়ে উল্লাসে মাতিয়ে। তাও আবার ঘরের মাঠে। লর্ডসে সেই রূপকথার ফাইনালে, যে গল্প যুগ যুগ টিকে থাকবে। এমন ফাইনালের নায়ক ২০১৬ সালের চার বলে চার ছক্কা খেয়ে বিশ্বকাপটা মাটিতে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেয়া সেই স্টোকসই। 

অ্যাশেজে অসাধারণ, অবিশ্বাস্য, অনন্য এক ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন বেন স্টোকস। ফটো : সংগৃহীত 

এমন অসাধারণ, অবিশ্বাস্য, অনন্য এক ইনিংসের পর বাকিটা জীবন এমনিতেই থাকতেন ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়ে। তবে স্টোকস তাতে সন্তুষ্ট হননি। আরও একবার নিজের দায় মোচনে বেছে নিয়েছেন ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন ফরম্যাট টেস্টকে। তাও আগুনের পর যেখানে ছাই জ্বলে, সেই অ্যাশেজকে। হৃদপিণ্ডের সবরকম পরীক্ষা করা এক ম্যাচকে। 

যার উত্তেজনায় স্পষ্ট লেগ স্টাম্পের বাইরে পড়া বলে রিভিউ নেন অজি অধিনায়ক টিম পেইন। হাত থেকে বল ফসকে যায় মার্কাস হ্যারিসের। নাথান লিওন মিস করেন সহজ রান আউট। আর স্টোকসের স্বদেশী লিচ চাপ কমাতে বেছে নেন নিজের চশমাকে। মনে হয় পৃথিবীর সব ধুলো-বালি এসে জমা হয়েছে তার সেই চশমায়। তাও পারেন না, দৌঁড় দেন। সম্ভাবনা তৈরি করেন রান আউটের। 

আর স্টোকস? তিনি বসে পড়েন বারবার। মাথা ঠুকান নিজের ব্যাটটায়। সংকল্পবদ্ধ হয়ে নেন আরেক বার। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নেন, আমাকে শেষ করতেই হবে। তিনি তা পারেন। শেষ উইকেট জুটিতে ৭৪ রান তুলেন, যার মাত্র এক রান আসে তার অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা লিচের ব্যাট থেকে, সেঞ্চুরি করেও যে ব্যাটটি তুলেননি স্টোকস, সেটা তুলেন দলের জয় নিশ্চিতের পর। গগণবিদারী চিৎকার ছুঁড়েন আকাশের দিকে। বোধ হয় বলেন- 'ওহ টেস্ট, তোমার হিসাবটা মিটিয়ে দিলাম'।

তাহলে কী স্টোকসের হিসাব শেষ? না। স্টোকসদের হিসাব এতো তাড়াতাড়ি মেটে না। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাথওয়েটের কাছে চারটি ছক্কা খেয়ে যে হিসাবের শুরু হয়েছিল। তা শেষ হতে পারে না এতো দ্রুত। এখনও যে ওই টি-টুয়েন্টির হিসাবটাই বাকি স্টোকসের। আরও এক রূপকথার গল্পের মতো কোনো ইনিংসের অপেক্ষা তাই করাই যায়!

এমএইচবি/আরআইএস  


 

আরও পড়ুন