• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৮:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৮:৪১ পিএম

বাদল রায়ের দাবি

মোহামেডানকে ধ্বংস করতে লোকমানকে পাঠান বিসিবি সভাপতি 

মোহামেডানকে ধ্বংস করতে লোকমানকে পাঠান বিসিবি সভাপতি 
লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও নাজমুল হাসান পাপন (ডানে)
বাদল রায়

১৭ বছর ধরে ফুটবলে নেই লীগ শিরোপা। এই ব্যর্থতার দায় লোকমান হোসেনকেই নিতে হবে :  বাদল রায়’ 

মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ক্লাবের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সমর্থকরা। 

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রতিবাদ জানাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জড়ো হন তারা।

খ্যাতিমান খেলোয়াড় বাদল রায়ের নেতৃত্বে ক্লাবটির সাবেক খেলোয়াড়, স্থায়ী সদস্য, কর্মকর্তা আর সমর্থকরা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তাদের ক্ষোভের কথা জানান। তারা বলেন, ক্লাব যখন মাঠের ফুটবলের তলানিতে, যখন ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে ধ্বংসের পথে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবটি, আর তখনই একজোট হয়ে সরব হলেন তারা। যেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলো সদ্য গ্রেফতার হওয়া ক্লাবটির ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। সম্প্রতি যাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেছে। র‌্যাব জানিয়েছে, তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান হোসেন স্বীকার করেছেন-মোহামেডান ক্লাবে ক্যাসিনো বসানোর ভাড়া হিসেবে তিনি মাসে ২১ লাখ টাকা পেতেন। এই অর্থের সিংহভাগই লোকমান তার নিজের বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার করেছেন। অষ্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাংকে তার জমা আছে প্রায় ৪১ কোটি টাকা। অথচ মাঠের ফুটবলে সাফল্য নেই মতিঝিলের এই ক্লাবটির। ১৭ বছর ধরে ফুটবলে নেই লীগ শিরোপা। এই ব্যর্থতার দায় লোকমান হোসেনকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাদল রায়।

মোহামেডানের সাবেক পরিচালক, স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, মোহামেডানে সব সময় আমরা সুখস্মৃতি নিয়ে খেলেছি। অথচ আজ আমাদের প্রিয় ক্লাব ব্যর্থতার তলানিতে। তার মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। তার দুর্নীতির কারণেই আজ আমাদের প্রাণপ্রিয় ক্লাব ধ্বংসের পথে। যে ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া কিছু বুঝতো না, সেই ক্লাবটি লোকমানের হাতে পড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ব্যর্থতার এ দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

এর আগের দিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন লোকমান হোসেন তার বন্ধু এবং তিনি এটাও বলেছেন তার ক্যাসিনো-কাণ্ডে বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। পাশাপাশি এখনই বিসিবি পরিচালক লোকমানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিসিবি। পাপনের এমন কথায় হতাশ বাদল রায়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, লোকমান উনার (পাপন) বন্ধু ঠিক আছে। কিন্তু আমার তো মনে হয় মোহামেডান ক্লাব ধ্বংস করতেই লোকমানকে পাঠিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। নাজমুল হাসান-আপনি বলেছেন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে ব্যবস্থা নেবেন। এটা কিন্তু ঠিক না, কারণ লোকমান নিজেই তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। আর এ কারণেই বাদল রায়সহ মোহামেডানের অন্য ক্লাব কর্তাদের দাবি বিসিবি থেকে অপসারণ করা হোক লোকমানকে।

বাদল রায় আরও বলেন, উনার নৈতিক স্খলনের জন্যই উনাকে উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এমন কর্মকর্তা থাকলে দেশের উপকার না হয়ে ক্ষতিই হবে। আমরা বিসিবি সভাপতিকে অনুরোধ করবো লোকমান হোসেনকে বিসিবি থেকে অপসারণ করুন। একই সঙ্গে লোকমান যে ৪১ কোটি টাকা অষ্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন শোনা যাচ্ছে তা ফিরিয়ে এনে মোহামেডানের ফান্ডে জমা করার দাবিও তুলেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একইসঙ্গে ক্রীড়াঙ্গনে, ক্লাবগুলোতে শুদ্ধি অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন তারা। তবে মোহামেডান ক্লাবে যে ক্যাসিনো চলতো সেটা কোনোভাবেই জানা ছিল না বাদল রায়দের।

শনিবার সাবেক এই ফুটবলার দাবি করেন, ক্লাবে ক্যাসিনো রয়েছে এ সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না আমাদের। আর এখন তো শুনছি এই খেলায় ব্যক্তিগত অনেকের পকেটভারি হয়েছে। এ অবস্থায় ঘরে বসে থাকতে রাজি নন মোহামেডানের সাবেক কর্মকর্তা, খেলোয়াড়রা। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পরিস্থিতি আরও বেশি করে বুঝতে ক্লাবে যাবেন। ক্লাবের পুরানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে লড়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোহামেডান ক্লাবের সাবেক কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বাবুল। এ সময় সাবেক তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ, সাঈদ হাসান কানন, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, আবদুল গাফফার, রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ, সাজেদ এ আদেলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

এইচএম/এসএমএম