• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৪:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৪:৩০ পিএম

রাসেল ঝড়ে ঢাকার প্রথম জয়

রাসেল ঝড়ে ঢাকার প্রথম জয়


একদিন বিরতির পর মাঠে গড়ালো বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেলো মাহমুদউল্লাহর দল মিনিস্টার ঢাকা। 

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) তৃতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে বরিশাল। রান তাড়া করতে নেমে ১৭.৩ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা।

শুরুতে আলজারি জোসেফ-শফিকুল ইসলামের আক্রমণে ভিত নড়ে গিয়েছিল মিনিস্টার ঢাকার। চার উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল তখন প্রতিরোধ গড়েন দুই দেশি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শুভাগত হোম। দুজনের গড়ে দেওয়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ে মিনিস্টার ঢাকা ৪ উইকেটে জয় পেয়ে যায়।

১৫ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন রাসেল। এ ছাড়া বল হাতেও নিয়েছিলনে ২ উইকেট। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স করে ঢাকার জয়ের অন্যতম নায়ক পান ম্যাচসেরার পুরষ্কার।

ঢাকার ইনিংসের শুরু আর শেষ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ঠিক মিরপুরের আবহাওয়ার মতো। এই রোদ, এই মেঘ। বোঝা বড় দায়। জ্বলেছে ফ্লাডলাইটও। এরমধ্যেই ঢাকা দেখিয়েছে কীভাবে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে জিততে হয়।

প্রথম দিকে বিপর্যয়ের কালো ছায়া আর শেষ দিকে জয়ে রাঙানো হাসি। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর এই ম্যাচ জিতবে ঢাকা, এমন বিশ্বাস হয়তো ঢাকার ড্রেসিংরুমেও ছিল না। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ-শুভাগত মাঠে খেলে বিশ্বাস করাতে বাধ্য করলেন। দুজনের ৬২ বলে ২৯ রানের জুটিতেই মূলত বরিশালের হারের চিত্রনাট্য লেখা হয়ে যায়।

শুরুটা হয় পাওয়ার প্লের পঞ্চম ওভারে। আগের চার ওভারে মাত্র ২১ রান আসলেও শফিকুলের করা পঞ্চম ওভারে আসে ১৮ রান। এই ওভার থেকেই শুরু হয় ঢাকার জয়ের গল্প। পরের ৫ ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি।

মাহমুদউল্লাহ-শুভাগত খেলেন দেখেশুনে। মনোযোগ ছিল সিঙ্গেলস-ডাবলসে। ২৫ বলে ২৯ রান করে শুভাগত আউট হলে ভাঙে মহামূল্যবান জুটি। এরপর রাসেল এসে দুজনের বাড়া ভাতটাই যেন খেলেন। জোসেফের করা ১৫তম ওভারে ১৯ রান নিয়ে সহজ করে দেন। আর তাইজুলের করা ১৭তম ওভারে ১৬ রান নিয়ে জয়ের কাছে নিয়ে যান দলকে। পরের ওভারে সাকিবকে ৬ মেরে টাই করেন মাহমুদউল্লাহ। এর পরের বলে অবশ্য আউটও হয়ে যান ঢাকার অধিনায়ক। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৪৭ রান। সাকিব পেয়ে যান স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৪০০তম উইকেটের দেখা।

বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শফিকুল ইসলাম ও আলজারি জোসেফ। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন সাকিব ও ডোয়াইন ব্রাভো।

এর আগে ২৪ ঘণ্টা আগে ঢাকায় পা দেওয়া গেইলকে নিয়েই নামে বরিশাল। তবে ক্যারিবীয়ান সুপারস্টার ওপেনিংয়ে নামেননি, খেলেছেন ৫ নম্বরে। বিপিএলে গেইলের যা প্রথম। বরিশালেরও শুরুটা ভালো ছিল না। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৪ রান তোলে। খেলার হাল ধরেন সাকিব-গেইল। দুজনে স্ট্রাইক রোটেট করে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। দুজনের জুটিতে যখন চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের আভাস দিচ্ছিল, তখনই ঘটে ছন্দপতন। ক্রিজে থিতু হয়ে খোলস ছেড়ে বের হওয়ার আগে সাকিব ফেরেন ১৯ বলে ২৩ রান করে। ভেঙে যায় ৩৭ রানের জুটি। এরপর ক্রিজে এসে নুরুল হাসানও (১) সুবিধা করতে পারেননি।


এবার স্বদেশি ব্রাভোকে সঙ্গে নিয়ে এগোন গেইল। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৯ বলে ৩৩ রান। ধীর গতিতে খেলে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন গেইল। বরিশালের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তার হলেও ইনিংস বেশি লম্বা করতে পারেননি। ৩ চার ও ২ ছয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৩৬। গেইল ফিরলেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ব্রাভো। মাঝে ফেরেন জিয়াউর রহমান (১) ও আলজারি জোসেপ (৪)। ব্রাভো ক্রিজে থেকে একটি লড়াকু স্কোর এনে দিয়েছেন। তিনি ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৬ বলে ৩৩ রান করেন। সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন তাইজুলও।

বরিশালের ইনিংসে ৫৬ বল ছিল ডট। অর্থ্যাৎ ২০ ওভারের খেলার মধ্যে প্রায় ১০ ওভারই গেছে ডট। ঢাকার হয়ে হয়ে সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করেন রুবেল। তিনি ৩ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। সর্বোচ্চ ৩ ওভারে ৩১ রান দেন মাহমুদউল্লাহ। সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল-ইসুরু উদানা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ১২৯/৮ (২০ ওভার), গেইল ৩৬, ব্রাভো ৩৩*, সাকিব ২৩, সৈকত ১৫; রাসেল ২/২৭, উদানা ২/২৯।

মিনিস্টার ঢাকা: ১৩০/৬ (১৭.৩ ওভার), রিয়াদ ৪৭, রাসেল ৩১*, শুভাগত ২৯; শফিকুল ২/২০, জোসেফ ২/৩৪।