• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৩, ১২:৩৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২০, ২০২৩, ১২:৪২ এএম

চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
ছবি ● সংগৃহীত

গ্রুপ পর্বে নয় ম্যাচের সবগুলোতে শুধু জেতেইনি ভারত, প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিয়ে জিতেছে। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডও পাত্তা পায়নি।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া? প্রথম দুই ম্যাচে ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অসহায় হারে বিশ্বকাপ শুরু করতে না করতেই শিরোপার হিসাব থেকে তাদের বাদ দেয়ার উপক্রম। 

অনেকের বিশ্লেষণে প্যাট কামিন্সের এই অস্ট্রেলিয়া তখন পেয়েছে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে দুর্বলতম দলের স্বীকৃতি।

আহমেদাবাদে আজ ফাইনালের আগে কেউ বিশ্বকাপের কোনো খবরাখবর না রেখে থাকলে তাঁকে ওপরের প্যারাগ্রাফ বিশ্বাস করানো কঠিন হবে।

ফাইনালে যে আজ অস্ট্রেলিয়া বুঝিয়ে দিল, ম্যাচটা যখন বিশ্বকাপের ফাইনাল, অস্ট্রেলিয়া সেখানে অন্য ধাতুতে গড়া দল। বোঝাল, তারা পাঁচটা বিশ্বকাপ জেতা দল, আজ সংখ্যাটা ছয়-এ উঠল। বোঝাল, বিশ্বকাপ এভাবেই জিততে হয়। 

ব্যাটে-বলে, তার পাশাপাশি আলাদা করে বললে ফিল্ডিংয়ে, আর এসবের চেয়েও বেশি বুদ্ধিতে ভারতকে বলতে গেলে অসহায় বানিয়ে রেখে বিশ্বকাপটা জিতে গেল অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিং যাদের গর্বের জায়গা, সেই ভারতকে ২৪০ রানে গুটিয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত সে রান ৪ উইকেট আর ৪২ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। আর কোনো দলের যেখানে দুবারের বেশি বিশ্বকাপ জেতা হয়নি, সেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ হয়ে গেল ছয়টি! 

এর মধ্যে প্রথমটি বাদে বাকি সবগুলোতেই তো ফাইনালে এভাবেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া! একপেশে, অস্ট্রেলিয়ার দাপট দেখানো ফাইনাল! বলতে গেলে ভারতের ইনিংসের প্রথম ওভার দশেক আর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে প্রথম সাত ওভার—এই ১৭ ওভারের আগে-পরে ম্যাচটাকে একপেশেই বানিয়ে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সরা দারুণ বোলিং আর তার পাশাপাশি হেড-ওয়ার্নারদের চোখধাঁধানো ফিল্ডিং কোহলি-রাহুল-রোহিতদের হাত খুলতে দেননি, আর ব্যাটটাকে মুগুর বানিয়ে ভারতীয় বোলারদের শাসন করেছেন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স কাল নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ভারতীয়কে চুপ করানোর লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন, হেডের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আহমেদাবাদের গ্যালারিতে পিনপতন নীরবতাই নামিয়েছে।

ভারতের ইনিংসের প্রথম দশ ওভারে রোহিত শর্মার ঝড়ে মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়া টস জিতেও আগে ব্যাটিং না নিয়ে ভুল করেছে। কিন্তু প্রথম দশ ওভারে ৮২ রান তোলার পথে ১২টি বাউন্ডারি পাওয়া ভারত পরের ৪০ ওভারে বাউন্ডারি পেয়েছে মাত্র চারটি। বোঝা যাচ্ছিল, এই পিচে রান করা কঠিন। কোহলি-রাহুল যে ফিফটি পেয়েছেন, তা নিয়ে মিচেল স্টার্কই ইনিংস বিরতিতে বলছিলেন, ব্যাটসম্যানদের জন্য অস্বস্তির এই পিচে কোহলি-রাহুল-রোহিতরা বেশ ভালো করেছেন। ৫০তম ওভারের শেষ বলে অলআউট হওয়া ভারত ২৪০ রান করলেও তাই পিচের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়ারও এই রান তুলতে কষ্ট হবে।

ভীষণ কষ্ট হলো বটে প্রথম সাত ওভারে। ওই সময়ে শামি-বুমরাদের বল যেন সাপের মতো এঁকেবেঁকে চলছিল। ভারতের শিথিল ফিল্ডিং আর ভাগ্যের ছোঁয়া— এ দুইয়ের যৌথ প্রযোজনায় অস্ট্রেলিয়া বেশ রান পেয়েছে বটে, প্রথম ২ ওভারেই পেয়ে গেছে ২৮ রান, ৪ ওভারে হলো ৪১। কিন্তু অন্যদিকে উইকেটও পড়ছিল। ডেভিড ওয়ার্নার (৭) দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই শামির অফ স্টাম্পের বাইরের ‘ওয়াইড’ বলে অযথা ব্যাট চালিয়ে আউট, মিচেল মার্শ (১৫) আউট হলেন বুমরার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। সপ্তম ওভারের শেষ বলে স্টিভ স্মিথও এলবিডব্লিউ! তখনো অস্ট্রেলিয়ার রান ৫০ পেরোয়নি। মনে হচ্ছিল, এই পিচে বুমরা-শামির তোপের পর কুলদীপ-জাদেজাদের বল কীভাবে সামলাবে অস্ট্রেলিয়া!

ভাগ্য সঙ্গ দিল, তা বিজয়ীদেরই দেয়। হেড-লাবুশেনের ব্যাটের আশপাশ দিয়ে বল গেল কয়েকবার। ভারত আফসোস করল, কিন্তু তাদের বিশ্বাস ভাঙার মতো কিছু তখনো হয়নি। এর মধ্যেই ট্রাভিস হেডের সঙ্গে মারনাস লাবুশেন মিলে শুরু করলেন বন্ধুর পথে পথচলা।

যেভাবে অস্ট্রেলিয়া জেতে। বারে বার। এ নিয়ে ছয়বার।  

জাগরণ/খেলা/বিশ্বকাপক্রিকেট২০২৩/এসএসকে