• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০১৯, ০৭:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২০, ২০১৯, ০৮:১৩ পিএম

রিফাত হত্যা

হত্যার দায় স্বীকার রিফাত ফরাজীর

হত্যার দায় স্বীকার রিফাত ফরাজীর
ফাইল ছবি

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, শনিবার বিকাল ৪টার দিকে রিফাত ফরাজীকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার জবানবন্দি নেয়া শেষ হয়েছে। রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতারের পর তিন দফায় ২১ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার (১৯ জুলাই) রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওইদিন বেলা ২টার দিকে মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করা হয়। জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদালত থেকে বের করে পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টায় জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে মিন্নিকে পুলিশলাইনে আনা হয়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর ১৭ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করা হয়। বিচারক তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ৫০ ঘণ্টার মধ্যেই অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে মিন্নিকে ১৯ জুলাই বেলা ২টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়।

৫ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই মিন্নিকে কেন আদালতে হাজির করা হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির সেদিন জানান, মিন্নি স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হওয়ায় তাকে আদালতে আনা হয়েছে।

মো. হুমায়ুন কবির শনিবার আরো জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় শনিবার পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ৭ জনসহ ১৫ জনকে জীবিত গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। এ মামলার ১৪ জন আসামি রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। শুধু মামলার ৩ নম্বর আসামি রিশান ফরাজী রিমান্ডে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে কলেজছাত্র রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে বন্ড বাহিনী। বিকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হামলার ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করছে। তার স্ত্রী মিন্নি তাকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

তবে হত্যার ঘটনায় ৩টি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হলে রিফাতের হত্যার ঘটনার সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ তার ছেলের হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন এবং তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান। সেদিন ‘মিন্নি হত্যাকাণ্ডে জড়িত’ এমন সন্দেহের পেছনে ১০টি কারণও বলেন তিনি। তার সন্দেহের বিষয়টিকে আমলে নেয় পুলিশ। 

তবে এর পরদিন মিন্নি পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বরগুনায় যারা ০০৭ (বন্ড) গ্রুপ সৃষ্টি করেছেন, তারা খুবই ক্ষমতাবান ও অর্থশালী। তারা রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আমার শ্বশুরকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। 

এনআই

আরও পড়ুন