• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০১৯, ০১:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৭, ২০১৯, ০১:৫২ পিএম

চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীরের আজ জন্মদিন

চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীরের আজ জন্মদিন

বিখ্যাত চিত্রশিল্পী, কার্টুনিস্ট এবং ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী মুর্তজা বশীরের আজ জন্মদিন। ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত ভাষাবিদ জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এবং মা মরগুবা খাতুন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টসের (বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট) দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে তার চারুকলা শিক্ষা শুরু করেন। ১৯৫৪ সালে পাঁচ বছর মেয়াদী শিল্প শিক্ষা শেষ করে প্রথম বিভাগে পাশ করেন।


১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি বগুড়া শহরে আন্দোলনের জন্য বেশ কয়েকটি মিছিল এবং মিটিং আয়োজনে কাজ করেছিলেন। ২১শে ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমতলার মিটিং যোগ দিয়েছিলেন। সেই দিনের পরবর্তী কালে, ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে ঢাকা জাদুঘরে প্রদর্শনী মুলতবি রাখতে ঢাকা জাদুঘরে যান। তিনি ফেব্রুয়ারি ২২ তারিখের গায়েবানা জানাজাতেও যোগদান করেছিলেন। পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করলে তিনি পলাতক থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। আন্দোলনের জন্য অনেক কার্টুন এবং ফেস্টুন এঁকেছেন। তার কার্টুনগুলো দেশ ও ভাষার জন্য লড়াই এবং ত্যাগের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

আর্ট স্কুল থেকে পাশ করার পর ১৯৫৫ সালে বছর খানেক নবাবপুর সরকারি স্কুলে ড্রয়িং শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। এরপর ১৯৫৬ সালে মুর্তজা বশীর উচ্চতর শিক্ষার জন্য বাবার অর্থে ইতালীর ফ্লোরেন্সে যান। আকাদেমিয়া দ্য বেল্লি আর্টিতে এক বছর চিত্রকলা এবং আরেক বছর ফ্রেসকো নিয়ে পড়াশোনা করেন। ফ্লোরেন্সে রেনেসাঁর ঐতিহ্য তাঁকে মানসিকভাবে প্রভাবিত করে। এ সময় অধ্যাপক কাপুকিনি ছিলেন তাঁর শিক্ষক। তাঁর কাজে ফিগারের সরলীকরণ ও ন্যূনতম রঙ ব্যবহারের শৈলী তাকে আকৃষ্ট করেছিল। ফ্লোরেন্সে তিনি পথে প্রান্তরে দেখা সাধারণ মানুষের ছবি এঁকেছেন। অ্যাকর্ডিয়ান বাদক, জিপসির খেলা দেখানো, মা ও মেয়ের বাজার করে ফেরার দৃশ্য এঁকেছেন তিনি।

মুর্তজা বশীরের প্রথম একক প্রদর্শনী হয় ২৯ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল 'লা পার্মানেন্ট' গ্যালারীতে। এতে ফ্লোরেন্সে অবস্থানকালীন আঁকা চৌদ্দটি তৈলচিত্র ছিল। ১৯৫৮ সালে বশীর ইতালীয় চিত্রকর রাপিসার্দি ও ভাস্কর ম্যাডোনিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে 'মুভিমেন্টো প্রিমোরডিও' (আদিমতার আন্দোলন) নামে একটি শিল্পীগোষ্ঠী গড়ে তোলেন। পরে ফ্লোরেন্সের অদূরে এম্পোলি শহরে গ্রুপ প্রদর্শনী করেন ১৯৫৮ সালের ১৩ থেকে ২৫ এপ্রিল।

১৯৭৩ সালের আগস্টে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। চট্টগ্রামে তিনি ১৯৭৬ সালের মার্চের মধ্যে 'এপিটাফ' সিরিজে আরো ২০টি ছবি আকেঁন। ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক হিসাবে অবসর নেন।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৩ সালে ফ্রান্সের ক্যাগনেস-সুর মের চিত্রশিল্প উৎসবে জাতীয় পুরস্কার (Prix National), ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক একাডেমি পুরস্কার, ১৯৭৬ সালে ঢাকার জাতীয় বইকেন্দ্র কর্তৃক শ্রেষ্ঠ প্রচ্ছদ নকশা, ১৯৮০ সালে একুশে পদক, ২০০৩ সালে নড়াইলে সুলতান পদক, ২০১৬ সালে স্টার লাইফটাইম পুরস্কার ও চলতি বছর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।

এসজে