হাকালুকির মিঠা পানিতে জেলেদের জালে ইলিশ

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০১৯, ০১:১৩ পিএম হাকালুকির মিঠা পানিতে জেলেদের জালে ইলিশ

দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে বিগত কয়েক বছর ধরে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে এবার এই রুপালি ইলিশ অন্য বছরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ধরা পড়ছে। এতে জেলেরাও খুব খুশি। হাওরপাড়ের বিভিন্ন বাজারে কমবেশি দেখা মিলছে এই ইলিশের।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় হাকালুকি হাওর ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। ফলে বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় সুস্বাদু পানির মাছ এরই মধ্যে ডিম ছেড়েছে। হাকালুকি হাওর প্লাবিত হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। কুশিয়ারা নদীতে অবস্থানরত ইলিশ অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর বেশি পরিমাণে হাকালুকিতে প্রবেশ করায় ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছে কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য বিভাগ।

হাকালুকি হাওরে গেলে স্থানীয় জেলে ময়না মিয়া, মাসুক ও কেরামত আলী জানান, এবার প্রতিদিন জালে শত শত ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। তবে হাওরে ইলিশ ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে না। সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ তাদের জালে ধরা পড়েছে। হঠাৎ জালে বেশি ইলিশ ধরা পড়ায় তাঁরা মহাখুশি। তারা প্রত্যাশা করছেন, ইলিশের মতো এ বছর দেশীয় প্রজাতির মাছেরও উৎপাদন বাড়বে।

হাকালুকি হাওরে প্রাকৃতিকভাবে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ আসা ছাড়াও সরকারের মৎস্য বিভাগ অবমুক্ত করেছে নানা প্রজাতির পোনা মাছ। সব মিলিয়ে এ বছর হাকালুকিতে ব্যাপক মাছ উৎপাদিত হবে বলে ধারণা করছেন তারা। ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ভাসমান পানিতেও জেলেদের জালে ধরা পড়ায় এমন প্রত্যাশিত সম্ভাবনায় হাতছানিই দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

হাওরপারের আছুরীঘাট এলাকায় স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী নিয়াজুল ইসলাম জানান, হাওরের জেলেদের কাছ থেকে তারা হাকালুকির ইলিশ কিনে বিক্রি করছেন। কয়েক দিন ধরে হাকালুকি হাওরে ইলিশ ধরা পড়ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি করছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, প্রতিবছর হাওরে ছোট ছোট দু-চারটি ইলিশ ধরা পড়লেও এবার ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে জেলেদের মুখে হাসি ফুটে উঠছে। আশা করছি, হাকালুকিতে মাছের উৎপাদন রেকর্ড সৃষ্টি করবে।

আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢল যখন নামে, তখন হাকালুকি হাওরের পানি মূলত কুশিয়ারা নদী দিয়ে পদ্মায় গিয়ে মিলিত হয়। ফলে ইলিশ মাছ প্রজননের জন্য স্রোতের বিপরীতে আসতে থাকে। এক্ষেত্রে মাছের শেষ আশ্রয়স্থল হয় হাকালুকি হাওর। ফলে আগাম বন্যা হলেই হাকালুকি হাওরে মেলে ইলিশের দেখা।

কেএসটি

আরও সংবাদ