ফাহাদ হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে অভ্যস্ত ছিল : মনিরুল

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৩:৩৪ পিএম ফাহাদ হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে অভ্যস্ত ছিল : মনিরুল
প্রেস ব্রিফিং করছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম -ছবি : জাগরণ

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকারীরা র‌্যাগিংয়ের নামে উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের অভ্যস্ত ছিল। তারই অংশ হিসেবেই আবরার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে থেকে মনিটরিং করলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এটা তাদেরই মনিটর করার কথা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি পরিচালক মনিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবরারকে শুধু শিবিরের মনে করাই শেষ নয়। সংশ্লিষ্টরা ক্যাম্পাসের উচ্ছৃংখল আচরণের মধ্যে রামরাজত্ব কায়েম করেছে। যখন-তখন যাকে ইচ্ছা তাকে এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, একক কোনও কারণে আবরার হত্যাকাণ্ড হয়নি। সমষ্টিগতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, কেউ তাদের সাথে দ্বিমত করলে, সালাম না দিলে, তাদের সামনে হেসে দিলে ইত্যাদি কারণে তারা নির্যাতন করত।

অভিযুক্তরা র‌্যাগিংয়ের নামে নতুনদের আতঙ্কিত রাখতে এসব কাজ করত। এসব বিষয়ে আমরা আগে কোনও অভিযোগ পাই নি। তদন্তে একজন সাক্ষী বলে, একজনকে সালাম দেয় নি বলে তাকে পেটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, তদন্তে জানা গেছে রাত ১০টার পর থেকে আবরারের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। রাত ২টা ৫০ মিনিটের দিকে ডাক্তার তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। অনেক দীর্ঘ সময়ে তাকে পেটানো হচ্ছিল। তাকে হয়তো একটু আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এমন নৃশংস পরিণতি হতো না।

একই ধরনের ঘটনা বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদনের পরেও চার্জশিটের অনেকে খালাস পেয়েছে, জামিনে বের হয়েছে  গণমাধ্যমেরর এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যায় যারা রড দিয়ে পিটিয়েছিল তাদের ফাঁসি হয়েছে। অভিযুক্ত কয়েকজন আবার খালাসও পেয়েছে। সেই মামলায় আমরা তেমনভাবে সিসিটিভি ফুটেজ পাই নি। এ ধরনের ঘটনা প্রমাণের জন্য ট্রেডিশনাল তদন্ত বা চাক্ষুষ সাক্ষীর ওপর নির্ভর করতে হয়। আবরারের হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ছিল, তদন্ত সহায়ক দল ছিল, সিসিটিভি ফুটেজ, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণ, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের তথ্য রয়েছে।

তথ্য প্রযুক্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ, পাশাপাশি ৮ জন আসামির বক্তব্যও হত্যাকাণ্ডের অনেক বিষয় প্রমাণ করে, যদিও এ ধরনের ঘটনায় চাক্ষুষ সাক্ষী থাকলেও সাক্ষ্য দিতে এগিয়ে আসে না। কিন্তু আমরা যেভাবে চার্জশিট প্রস্তুত করেছি, আশা করছি সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আবরার হত্যায় সরাসরি অংশে নেয় ১১ জন। বাকি ১৪ জন হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত রয়েছে। মামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এর মধ্যে এজাহারে ১৬ জন ও এজাহারের বাইরে ৫ জন। বাকি চারজন পলাতক। পলাতক ৪ জনের মধ্যে তিনজন মামলার এজাহারভুক্ত। তারা হলেন- জিসান, তানিন ও মোর্শেদ। এজাহার বহির্ভূত একজন রাফি। এজাহারর্ভুক্ত গ্রেফতার আসামিরা হলেন, মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন,  মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এ এস এম নাজমুস সাদাত।

এজাহার বহির্ভূত গ্রেফতার হওয়া ৫ জন হলো- ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।

এইচএম/এসএমএম

আরও সংবাদ