নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের বাজার, ক্রেতাদের ক্ষোভ আর হতাশা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০১৯, ১১:১৭ এএম নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের বাজার, ক্রেতাদের ক্ষোভ আর হতাশা
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের স্তুপ - ফাইল ছবি

রাজধানীর কাঁচা বাজারে কার্যকর নজরদারি নেই। খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করেও দাম কমাতে পারছে না সরকারি সংস্থা টিসিবি। অবশ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, পেঁয়াজের বাড়তি দাম ঠেকাতে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অন্তত এক হাজার বিক্রেতাকে শাস্তি দিয়েছে তারা। কিন্তু এর পরও মিলছে না সুফল। অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তাসাধারণ। অতিরিক্তি দামে ক্রেতা সাধারণের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ আর হতাশা। 

জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে কাঁচা বাজারে পেঁয়াজের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকায় ওঠানামা করছে। আর মাঝখানে সরবরাহের অজুহাত হিসেবে অপব্যবহার করছেন সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এরপর সরকারের তৎপরতায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাহলে বোঝা যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীই ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছেন। সরকারকে সেই জায়গায় নজরদারি করতে হবে। তারা মনে করেন, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজারে এমন অযৌক্তিক মূল্য অব্যাহত রয়েছে।

বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারত রফতানি বন্ধ করলেও মিয়ানমার ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আসার পরও দাম কমছে না। উল্টো দফায় দফায় বাড়ছে দাম। বৃষ্টির অজুহাতে শুক্র ও শনিবার দুই দফায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত, গতকাল পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

এদিকে, গতকাল সোমবার চট্টগ্রামে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমি আশাবাদী এক সপ্তাহের মধ্যে মিশরের পেঁয়াজ চলে আসবে। যদি আসে তা হলে হয়তো আমরা ৮০ টাকার মধ্যে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে পারবো। তবে কষ্টটা বোধ হয় আমাদের আরো একটা মাস করতে হবে। কারণ আমাদের নিজেদের পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ নেই।

ঢাকার বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে মিসর থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়, যা শুক্রবার ছিল ৮০-৯০ টাকার মধ্যে। গত শুক্রবারের আগে ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি। মিসরের পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা, যা ছিল ১০০-১১০। 

পেঁয়াজের আমদানিকারক ও শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মাজেদ বলেন, আমরা যত কথাই বলি, ভারতের পেঁয়াজ আমদানি শুরু না হলে দাম কমবে না। কারণ আমরা অন্যান্য দেশ থেকে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ পাচ্ছি না। আবার আমদানিও করতে হচ্ছে চড়া দামে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের পাইকারি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, দেশি, ভারতীয়, মিসর ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। মেসার্স মাতৃভান্ডার ৫৬ নম্বর আড়তের মূল্যতালিকায় দেখা গেল, দেশি পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১১৫ টাকা, মিসরের পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কেন কমছে না জানতে চাইলে আড়তের বিক্রেতা লোকমান হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। দেশি পেঁয়াজের মজুদও কম। সব মিলিয়ে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে দাম বাড়তি। আরেক আড়তদার বলেন, বাজারে যারা প্রভাব বিস্তার করছেন তারা অনেক বড় ব্যবসায়ী। তাদের ধরা উচিত।

এইচএম/বিএস 
 

আরও সংবাদ