তিতাসের মৃত্যু : আরও দুই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ০৯:১১ এএম তিতাসের মৃত্যু : আরও দুই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় আরও দুইটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। বুধবার তিতাসের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে দাখিল করেছে।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। রিট আবেদনকারী অ্যাডভোকেট মো. জহির উদ্দিন লিমন নিজেই শুনানি করেন।
 
এর আগে ৩১ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
 
অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয়-এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ তদন্ত করাবেন জনপ্রশাসন সচিব। একই সঙ্গে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
 
পরে এই কমিটির ৩৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করার জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে দেরিতে ফেরি ছাড়ার জন্য দায়িত্বরত ফেরি ঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করেছে কমিটি। তদন্ত কমিটি যুগ্মসচিবের কোনো দোষ খুঁজে পায়নি।
  
মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসে’র চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন জনস্বার্থে এ রিট করেন।
 
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, নৌ পরিবহন সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, কাঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসাইন মিয়া ও কাঠালবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
 
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ (১১) গুরুতর আহত হয়। ওই সময় তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আইসিইউ সুবিধা আছে এমন একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ২৫ জুলাই তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

পরে রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ-রুটের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুল সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন তাই ওই ফেরিকে অপেক্ষা করার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মাঝপথেই অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় স্কুলছাত্র তিতাস।

পরিবারের অভিযোগ, তিতাসকে বাঁচাতে তারা ফোন করেন জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ। সাহায্য চান ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরও। কিন্তু কারও অনুরোধই রাখেননি ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এমএ/টিএফ
 

আরও সংবাদ