• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ০৪:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ১২:৫৮ পিএম

বাংলাদেশ-ভারত মহারণ আজ

বাংলাদেশ-ভারত মহারণ আজ
অনুশীলনে ব্যস্ত বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা। ছবি : বাফুফে
এখনো পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ২৮ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে ৩ জয়, ১০ ড্রয়ের সঙ্গে হেরেছে ১৫ ম্যাচ
                          জেমি ডের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছেন প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রী।

বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। ক্রীড়াঙ্গনের যেন নিয়মিত দৃশ্য হয়ে উঠেছে এটা। ক্রিকেট কিংবা ফুটবল, বয়সভিত্তিক হোক অথবা জাতীয় দল প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের মুখোমুখি হওয়া যেন নিয়মই হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের কলকাতার যুব ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৮টায় তেমনই এক লড়াই। 

তবে এবারের আবহটা খানিক ভিন্ন। বিশ্বকাপের মূলপর্বে ওঠার লড়াইয়ে এবার লাল-সবুজদের প্রতিপক্ষ ভারত। গেল এক দশকে আইএসএলসহ বেশ কিছু লীগ আর অর্থের ঝনঝনানিতে বিদ্যুৎ গতিতে এগিয়েছে ভারতের ফুটবল, বিপরীতে সমান গতিতে পিছিয়েছে বাংলাদেশ। 

তবুও জেমি ডের দীক্ষা আর অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার উপভোগের মন্ত্র মেনে সাম্প্রতিক সময়ে আশা জাগানিয়া ফুটবল খেলছে বাংলাদেশ। ঠিক আগের ম্যাচেই, কাতারের বিপক্ষে তো নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচটাই খেললো জেমি ডের শিষ্যরা। 

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারত এখনো পর্যন্ত খেলেছে দুই ম্যাচ। যার একটিতে শক্তিশালী কাতারকে তাদেরই মাঠে রুখে দিতে পারলেও অন্যটিতে হেরে গেছে ২-১ গোলে। অন্যদিকে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের একটিতে কাতার ও অন্যটিতে হেরেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। 

ইতিহাস থেকেও অবশ্য খুব একটা সুখবর নেই বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে দুই দশক আগে শেষ বার জয় পেয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় ৬৪ মিনিটে সাজউদ্দিন টিপুর একমাত্র গোলে জয় পায় বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই জয়ের আরেকটি এসেছিল তারও এক দশক আগে। ১৯৯১ সালে সেই কলম্বোতেই রুমি রেজভি কলিমের জোড়া গোলে জয় পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। 

ভারত মহারণের আগে অনুশীলনে বাংলাদেশ দল। ছবি : বাফুফে

এখনো পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ২৮ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে ২ জয়, ১১ ড্রয়ের সঙ্গে হেরেছে ১৫ ম্যাচ। সর্বশেষ দুই দেখায় অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পায়নি ভারত। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হওয়ার আগে ২০১৩ এর সাফের ম্যাচও ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। 

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুখস্মৃতি ২০০৩ সালে সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিতভাবে শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে মতিউর মুন্নার করা গোল্ডেন গোলে জয় পায় লাল-সবুজের দল। পরে ফাইনালে মালদ্বীপকে হারিয়ে সেবার শিরোপা জিতেছিল জর্জ কোটানের দল।  

তবে সবকিছু ছাপিয়ে এই ম্যাচের জন্য জেমি ডের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছেন প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রী। তাকে ঘিরেই তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের রক্ষণ দুর্গের কৌশল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনো খেলছেন এমন ফুটবলারদের মধ্যে জুভেন্টাস তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর সবচেয়ে বেশি ৭২ গোল এই ছেত্রীরই। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের যে একটি মাত্র গোল এসেছে সেটিও তার পা থেকে। তাকেসহ ভারতীয় ফরোওয়ার্ডদের আটকাতে জেমি ‘জায়গা না দেয়া’র টোটকা দিয়েছেন শিষ্যদের। যার নেতৃত্বে থাকবেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান।

প্রায় ৩৪ বছর পর কলকাতার সল্ট লেকে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। কলকাতার বাঙালিদের তাই উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। টিকেট নিয়ে এরইমধ্যে শুরু হয়েছে টানাটানিও। কলকাতার গ্যালারিতে ভারতীয় সমর্থনই থাকবে সিংহভাগ, তবে বাংলাদেশের জন্য সমর্থন যে একেবারেই থাকবে না তা-ও বলা যায় না। 

দেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বড় এই লড়াইয়ে ভারতই ফেবারিট নির্দ্বিধায়। র‌্যাংকিংয়ে ৮৩ ধাপ পিছিয়ে থেকেই এই ম্যাচে মাঠে নামবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবুও কাতার ম্যাচের মতো নিজেদের যদি উজার করে খেলতে পারেন জামাল-ইয়াসিনরা। জেমি ডের দেয়া দীক্ষা যদি ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেন মাঠে, তাহলে নিশ্চিতভাবে ফুটবলের কল্যাণে আবারও আনন্দে ভাসবে লাল-সবুজের ছোট্ট দেশের প্রতিটি কোণ। 

এমএইচবি/ এফসি

আরও পড়ুন