কোভিড-১৯

‘আগস্ট মাস মোকাবিলাই চ্যালেঞ্জ’

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২০, ১১:০০ এএম ‘আগস্ট মাস মোকাবিলাই চ্যালেঞ্জ’
সংগৃহীত ছবি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, সংক্রমণ নিম্নমুখী হয়েছে, এটি বলা যাবে না। কারণ নমুনা পরীক্ষা বাড়লে আক্রান্ত বেশি শনাক্ত হয়। আর নমুনা পরীক্ষা কমলে আক্রান্ত কম শনাক্ত হয়। আবার দেখা যায়, এক জায়গায় নমুনা পরীক্ষা বেশি হচ্ছে আবার অন্য জায়গায় নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে। এ অবস্থায় সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সঠিক ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়।

ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হলো— যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা। যেসব মানুষ এসব মানবেন না, তাদের মানাতে বাধ্য করতে হবে। এ ছাড়া সংক্রমণ কোনওদিনই নিয়ন্ত্রণে আসবে না। সুতরাং, কোরবানির হাটে ভিড় কিংবা শহর থেকে গ্রামে আসা-যাওয়ার অবারিত সুযোগ দেয়া হলে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও বাড়বেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে শুরু থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগের অব্যস্থাপনা ছিল এবং এখনও সেটি আছে। সুতরাং, এই অবস্থায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার প্রসঙ্গ অবান্তর। কারণ প্রথম ২৬ মার্চ লকডাউন ঘোষণা না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। হাজার হাজার মানুষে এটিকে ঈদের ছুটি মনে করে বাড়ি ফিরে গেলেন। মাঝখানে গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনলেন, আবার পাঠালেন। এতে করে জনসমাগম হলো এবং সংক্রমণও বেড়ে গেল। আবার ঈদের আগে দোকানপাট খুলে দেওয়া হলো। হাজার হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করলেন। ঈদের পর সবকিছু চালু করা হলো। সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও বেড়ে গেল। এর মধ্যে গত ১ জুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সারাদেশকে তিনটি জোনে ভাগ করে কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিলেন। অথচ জোনভিত্তিক কার্যক্রমের খবর নেই। এ অবস্থায় সামনে ঈদুল আজহা আসছে। যারা পশু নিয়ে হাটে আসবেন তাদের মাধ্যমে যেমন রোগ আসতে পারে, একইভাবে যারা হাটে পশু কিনতে যাবেন তাদের মাধ্যমেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি মাংস কাটাকাটি ও মাংস সংগ্রহ যারা করবেন তাদের মাধ্যমেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আগস্ট মাসে যে নিম্নমুখী সংক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, তা বাস্তবে কাজে নাও আসতে পারে। সুতরাং, এটি সবার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে যাচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সবার আগে ব্যক্তির সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিদিনই সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করে যাচ্ছে। কিন্তু জনগণকে সেগুলো আমলে নিতে হবে। ইদানীং রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় বাড়ছে। যানজট বাড়ছে। এতে সামাজিক দূরত্ব ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির ব্যত্যয় ঘটছে। এগুলো না মানলে দেশকে কোনোদিনই করোনামুক্ত করা সম্ভব হবে না। এটি যথাযথভাবে পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’

কেএপি

আরও সংবাদ