• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ০৮:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ০৮:০৯ পিএম

এনসিএল : প্রথম দিনই অলআউট ঢাকা মেট্রো-রাজশাহী

এনসিএল : প্রথম দিনই অলআউট ঢাকা মেট্রো-রাজশাহী

সিলেটের বোলারদের তোপে ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচের প্রথম দিনই অলআউট হয়ে গেছে ঢাকা মেট্রো। ৮৩.৪ ওভারে ২৪৬ রানে শেষ হয় ঢাকা মেট্রোর ইনিংস। জবাবে দিন শেষে ৪ ওভারে ১ উইকেটে ৫ রান করেছে সিলেট বিভাগ। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে এখনো তারা ২৪১ রানে পিছিয়ে আছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেয় সিলেট। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি ঢাকা মেট্রো। ৪৩ রানেই তারা ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। মোহাম্মদ নাইম ২৩ ও রাকিন আহমেদ ১৭ রান করে সিলেটের পেসার রেজাউর রহমান রাজার বলে ফিরেন। তিন নম্বরে নামা শামসুর রহমানকে শুন্য হাতে বিদায় দেন বাঁ-হাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র।

ঢাকা মেট্রোর রান শতরানে পৌঁছানোর আগে আরও একটি উইকেট তুলে নেন এনামুল। চার নম্বরে নেমে ২০ রান করা আল-আমিনকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান এনামুল। দলীয় ৮৩ রানে থামেন আল-আমিন।

টপ-অর্ডারের মতো মিডল-অর্ডারের আরও দুই ব্যাটসম্যান উইকেটরক্ষক জাবিদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বিদায় নেন। জাবিদ ১২ ও আমিনুল ৩ রান করে থামেন। তবে এর মাঝে দলের স্কোর সচল রেখেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এক প্রান্ত আগলে টানা দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। অর্ধশতকের পর ইনিংস বড় করার চেষ্টায় থাকলেও রেজাউর রহমানের চতুর্থ শিকারে মাহমুদুল্লাহর দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসটির ইতি ঘটে। ৮টি চারে ১০৮ বলে ৬৩ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম রাউন্ডে চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে তিনি ৬৩ রান করেছিলেন।

দলীয় ১৫১ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে মাহমুদউল্লাহ যখন বিদায় নেন, তখন দ্রুত ইনিংস গুঁটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ঢাকা মেট্রো। কিন্তু সেটি হতে দেননি ডানহাতি পেসার শহিদুল ইসলাম। নয় নম্বরে নামা আবু হায়দারকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন শহিদুল । ৪৪ বলে ২৫ রান করে আবু হায়দার থামলেও শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে লড়াই করে যান শহিদুল। যেমনটা প্রথম রাউন্ডে চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন। 

২০১ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর উইকেটরক্ষক জাবিদ হোসেনকে নিয়ে ১৫১ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। আজ জাবিদকে না পেলেও লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে যতটা সম্ভব লড়াই করেছেন ২৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ফলে ২৪৬ রানের পুঁজি পায় ঢাকা মেট্রো। দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯২ বলে ৫৪ রান করেন শহিদুল। প্রথম রাউন্ডে ৮৩ রান করেছিলেন তিনি। তার সঙ্গী জাবিদ করেছিলেন ৮৫ রান। এই ইনিংসে সিলেটের রেজাউর ৪টি, এনামুল ও অলক কাপালি ২টি করে উইকেট নেন।

দিনের শেষভাগে নিজেদের ইনিংস শুরু করে তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় সিলেট। ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন রানের খাতা খোলার আগেই ঢাকা মেট্রোর বাঁ হাতি পেসার আবু হায়দারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। আরেক ওপেনার তৌফিক ১ রানে আহত হয়ে অবসর নেন। তবে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নামা এনামুল হক ৪ ও জাকির হাসান শুন্য রানে অপরাজিত আছেন।

প্রথম রাউন্ডে নিজ নিজ ম্যাচ ঢাকা মেট্রো ড্র করলেও, বরিশাল বিভাগের কাছে পরাজিত হয়েছিল সিলেট বিভাগ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ঢাকা মেট্রো : ২৪৬/১০, ৮৩.৪ ওভার (মাহমুদল্লাহ ৬৩, শহিদুল ৫৪, রেজাউর ৪/৭৫)।
সিলেট বিভাগ : ৫/১, ৪ ওভার (এনামুল ৪*, তৌফিক ১ আহত অবসর, আবু হায়দার ১/৪)।

এদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে প্রথম দিনই ২৬১ রানে গুটিয়ে গেছে রাজশাহী বিভাগ। স্পিনার মিরাজের ৪ ও দুই পেসার রুবেল ও মুস্তাফিজের ২টি করে উইকেট শিকারে ৮৫ .৩ ওভার ব্যাট করতে পারে রাজশাহী।

খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন স্বাগতিকদের অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই রাজশাহীর ওপেনার ৪ রান করা মিজানুর রহমানকে বিদায় দেন মুস্তাফিজ। এরপর শুরুর ধাক্কাটা সামলে ওঠে রাজশাহী। আরেক ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী ও অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন বড় জুটি গড়ার পথে হাটতে থাকেন। তবে জমে যাওয়া এই জুটির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান মুস্তাফিজ। ৬টি চারে ৯২ বলে ৪৫ রান করা ফরহাদকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন দ্য ফিজ, ভেঙ্গে যায় দ্বিতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি।

এরপর দলের স্কোরকে সামনে টেনে নিয়ে শতরানের কোটা অতিক্রম করেন জুনায়েদ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ১২১ রানে তবে শান্তর উইকেট উপড়ে ফেলে খুলনাকে তৃতীয় সাফল্য এনে দেন রুবেল। ৩৩ বলে ২৩ রান করেন শান্ত। তার বিদায়ের পর হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন জুনায়েদ। অর্ধশতক পূর্ণ করে ৫১ রানেই জুনায়েদকে বিদায় করেন মিরাজ। ১৩৭ বলের ইনিংসে ৩টি চার মারেন জুনায়েদ।

জুনায়েদের বিদায়ের পর বড় ধাক্কা খায় রাজশাহী। মিডল অর্ডারের প্রধান ভরসা ও বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ২৪ রানে আউট হন। তাকে শিকার করেন পেসার আল-আমিন। উইকেটরক্ষক শাকির হোসেন ৩ রানের বেশি করতে পারেননি। ফলে ১৭০ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারায় রাজশাহী। এরপর লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যান ফরহাদ রেজা-সানজামুল ইসলাম-তাইজুল ইসলাম মিলে ৯৩ রান যোগ করেন। এতে ২৬১ রানের সংগ্রহ পেয়ে গুঁটিয়ে যায় রাজশাহী। 

ফরহাদ রেজা ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ বলে ৪১, তাইজুল ৫টি চারে ৩৩ বলে ২৯ ও সানজামুল ২৩ রান করেন। এই তিনজনই শিকার হন মিরাজের। ২১.৩ ওভার বল করে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। এছাড়া মুস্তাফিজ ৬৪ রানে ও রুবেল ৫১ রানে ২ উইকেট নেন।
প্রথম রাউন্ডে নিজ নিজ ম্যাচে ড্র করেছিল রাজশাহী ও খুলনা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রাজশাহী বিভাগ : ২৬১/১০, ৮৫.৩ ওভার (জুনায়েদ ৫১, ফরহাদ ৪৫, মিরাজ ৪/৩৮)। 

আরেক ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটে নামা ঢাকার শুরুটা ছিল দারুণ। মন্থর ব্যাটিং করা আব্দুল মাজিদকে ফিরিয়ে ৬৬ রানের জুটি ভাঙেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। ১১৪ বলে ১০ চারে ৬৫ রান করা আরেক ওপেনার রনিকেও থামান শুভ।

রকিবুলের সঙ্গে শতরানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন সাইফ। ৫৭ রান করা অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান রকিবুলকে কট বিহাইন্ড করে ১২৭ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন করেন মাহমুদুল হাসান।

দলীয় ২৯৩ রানের সময় আহত  হয়ে মাঠ ছাড়েন সাইফ। শেষ বিকেলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন আগের ম্যাচে চমৎকার দুটি ইনিংস খেলা তাইবুর রহমান।

৮০ রানে ২ উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার বাঁহাতি স্পিনার শুভ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ৩১৪/৪, ৯০ ওভার (রনি ৬৫, সাইফ ১২০ আহত অবসর, রকিবুল ৫৭, তাইবুর ৩৫, রবিউল ১/৩৬, শুভ ২/৮০ মাহমুদুল ১/৩৭।

আরআইএস 
 

আরও পড়ুন