• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০১৯, ০১:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৬, ২০১৯, ০১:২৮ পিএম

দেশের ক্রিকেটে মিলেছে ম্যাচ পাতানোর প্রমাণ (ভিডিও) 

দেশের ক্রিকেটে মিলেছে ম্যাচ পাতানোর প্রমাণ (ভিডিও) 
ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব এবং কাঁঠালবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাবের ম্যাচটি ছিল পাতানো। ফটো : যমুনা টিভি

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগে পাতানো ম্যাচের রিপোর্টের ভিডিও।  যমুনা টিভি

মাত্র কয়েকদিন আগেই পক্ষপাতদুষ্টু আম্পায়ারিংয়ের কবলে পড়েছিল কামরাঙ্গীচর এবং ঢাকা রয়্যাল ক্রিকেটার্সের ম্যাচ। এমন দৃষ্টান্ত তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে এখন নিয়মিতই দেখা যায়। তবে এবার তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে এবার প্রমাণ মিলেছে ইচ্ছাকৃতভাবে ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার অভিযোগের। রেলিগেশনের খাঁড়ায় থাকা ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে ২৮ রানে ম্যাচ হেরে দলটির অবনমন ঠেকিয়েছে কাঁঠালবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব। 

যমুনা টিভির প্রকাশিত বিশেষ প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। আর তাতে করে গণমাধ্যমের সামনে আবিষ্কৃত হলো ক্রিকেট ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার নতুন আক কৌশল।  

গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সিটি ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচের স্কোরশিট দেখে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। আগেই সুপার লীগ নিশ্চিত করা কাঁঠালবাগান সেই ম্যাচের একাদশ সাজায় নিয়মিত ক্রিকেটারদের বাদ রেখে। হাতে উইকেট থাকলেও জয়ের পেছনে ছোটেনি তারা। 

পাতানো ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়, আম্পায়াররা একে অন্যের সঙ্গে করমর্দন করেন। ফটো : যমুনা টিভি 

ম্যাচের দিন সকালে যমুনা টিভির কাছে একটি সূত্রের মাধ্যমে খবর আসে, এই ম্যাচ হেরে যাবে কাঁঠালবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব। আর ২ পয়েন্ট পেয়ে রেলিগেশন লীগে খেলা ঠেকাবে ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব। ঘটনার সত্যতা খুঁজতে মাঠে উপস্থিত হয়ে যমুনা টিভির অনুসন্ধানী দল চোখ রাখে ম্যাচ আর স্কোরবোর্ডে। 

আগে ব্যাট করা ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান। জবাবে কাঁঠালবাগান একপর্যায়ে ৩২ ওভারে করেছিল ৩ উইকেটে ১৫৭ রান। অর্থাৎ শেষ ১৮ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ৯১ রান, হাতে ছিল ৭ উইকেট। ৩৬ ওভার শেষে কাঁঠালবাগানের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৬১ রান। স্লো ব্যাটিং করে ৪ ওভারে তারা স্কোরবোর্ডে যোগ করে মাত্র ৪ রান! পরের ৩ ওভারে রান এলো মাত্র ২। অর্থাৎ শেষ ৪২ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখেও কাঁঠালবাগান মাত্র ৬ রান তুলেছে! 

কাঁঠালবাগানের চতুর্থ উইকেটের পতনের পর বিস্ময়করভাবে ব্যাটিংয়ে নামেন বোলার জাহিদুল হক। অথচ আগের ম্যাচে ৪১ রান করা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন মিশু তখনো প্যাভিলিয়নে বসে ছিলেন! আরেক ব্যাটসম্যান শিশির আহমেদকেও টিম ম্যানেজমেন্ট ক্রিজে পাঠানোর প্রয়োজনই মনে করেনি। এমন সব কাণ্ডের ফলে যে কাঁঠালবাগানের একসময় জয়ের জন্য ১৮ ওভারে দরকার ছিল ৯১ রান; পরে কি না সেই সমীকরণ ৫৪ বলে ৭৬ রানে দিয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত কাঁঠালবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব ম্যাচটি ২৮ রানে হেরে যায়।

এদিকে, কাঁঠালবাগানের খেলোয়াড়দের তালিকা অনুসন্ধানী দলের হাতে আসার পর তাতে দেখা যায়, নিয়মিত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররাই একাদশে নেই। আগের ম্যাচে কাঁঠালবাগানের হয়ে ৫৫ বলে সর্বাধিক ৬৮ রান করা এবং বল হাতে ২ উইকেট পাওয়া ডন মিয়া একাদশে নেই! তার ইনজুরি যে ছিল না সেই প্রমাণ হাতেনাতেই মিলেছে। কারণ ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে তিনি ছিলেন দ্বাদশ খেলোয়াড়!

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের পয়েন্ট টেবিল। ফটো : যমুনা টিভি 

এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে যে, এমন হারে লাভ কার হয়েছে। তার উত্তর পরিষ্কারভাবেই পয়েন্ট টেবিলে চোখ রাখলেই পাওয়া যাচ্ছে। তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাঁঠালবাগান আগেই সুপারপর্বে খেলা নিশ্চিত করায় তাদের এই ম্যাচ হারলে আসলে কিছুই যায় আসতো না। অপরদিকে, এই ম্যাচের আগে মাত্র ৬ পয়েন্ট পাওয়া ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবকে হারলেই খেলতে হতো রেলিগেশন লীগ। তবে ম্যাচ জিতে মোট ৮ পয়েন্ট পেয়ে তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত। আর তাতে করে কপাল পুড়েছে ৭ পয়েন্টে থাকা কামরাঙ্গীচরের। 

আরআইএস 
 

আরও পড়ুন