• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৪:১৫ পিএম

কাতার বিশ্বকাপে রাশিয়ার খেলা নিয়ে ওয়াডার ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি

কাতার বিশ্বকাপে রাশিয়ার খেলা নিয়ে ওয়াডার ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি
২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপেও অংশ নিতে পারবে না রাশিয়া। তবে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ওয়াডার ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। ফটো : দ্য মস্কো টাইমস

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সব ধরনের খেলাধুলা থেকে রাশিয়াকে ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ডোপিং বিরোধী সংস্থা ‘ওয়াডা’। ২০২০ সালে ১ জানুয়ারি থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হবে। যদিও এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপিল করার সুযোগ রয়েছে রাশিয়ার।

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০২০ টোকিও অলিম্পিক এবং ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপেও অংশ নিতে পারবে না দেশটি। তবে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি নিয়ে ওয়াডার ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই রাশিয়ার! ফলে দেশটির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিশ্ব ফুটবল সংস্থা (ফিফা)। কারণ রুশদের বিরুদ্ধে ওয়াডার শাস্তি কীভাবে কার্যকর করতে হবে, সেই বিষয়ে ফিফার পরিষ্কার কোনো ধারণাই নেই।

অ্যাথলেটদের মতো রুশ ফুটবলারদের বিরুদ্ধে ঢালাও ডোপিংয়ের প্রমাণ মেলেনি। শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে ফুটবলে তাদের নিষিদ্ধ করাটা তাই প্রশ্নবিদ্ধ। তবে এখানে একটা ফাঁক রেখেছে ওয়াডা। তারা বলছে, রুশ ফুটবলাররা যে কোনো টুর্নামেন্টেই খেলতে পারবেন। কিন্তু রাশিয়া খেলতে পারবে না। এখানেও ঝামেলা আছে। বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ রাশিয়ার ২০২০ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে কোনো বাধা নেই। কারণ ওয়াডার মানদণ্ডে ইউরো বড় কোনো টুর্নামেন্ট নয়! ফিফার আপত্তি না থাকলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও খেলতে পারবে রাশিয়া। কারণ বাছাইপর্বে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হয় না। ওয়াডার এমন আজগুবি ব্যাখ্যা নিয়ে তাই সবার মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।  

এখন প্রশ্ন উঠেছে, রাশিয়া যদি ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পার হতে পারে তখন কী হবে? এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পেতে এরই মধ্যে ওয়াডার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। 

ওয়াডার নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির চেয়ারম্যান জোনাথন টেলর জানিয়েছেন, বাছাইপর্বে খেলতে পারলেও রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা দল বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারবে না। তবে বিশ্বকাপে রুশ ফুটবলারদের অংশগ্রহণে কোনো আপত্তি নেই ওয়াডার। অর্থাৎ ফিফা চাইলে নতুন কোনো পদ্ধতি বের করে নিরপেক্ষ দল হিসেবে তাদের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ করে দিতে পারে! 

গত অলিম্পিকে নির্দোষ রুশ অ্যাথলেটরা নিরপেক্ষ পতাকা নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন। টোকিও অলিম্পিকেও সেই সুযোগ থাকছে। ফুটবল বিশ্বকাপেও এমন বিকল্প সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে। ইউরোপের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এখনও শুরু হয়নি। ফলে বাছাইপর্বে রাশিয়ার অংশগ্রহণের ব্যাপারে ভেবেচিন্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ফিফা। 

রাশিয়াকে অবশ্য আপিল করার জন্য ২১ দিন সময় দেয়া হয়েছে। আপিল করবে কি না সেই সিদ্ধান্ত ১৯ ডিসেম্বর জানাবে রাশিয়া। তারা ধরেই নিয়েছে আপিলে কাজ হবে না। যদিও এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ক্রীড়া আদালতে (ক্যাস) মামলা করতে চলেছে রাশিয়া। সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমনই আভাস দিয়েছেন। তার মধ্যে আবার গুঞ্জন ছড়িয়েছে, সুইজারল্যান্ডের লুসানের আদালতে লড়ার জন্য উপযুক্ত আইনজীবী খুঁজছে রাশিয়া। এ ধরনের মামলায় লড়তে অভিজ্ঞ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের আইনজীবীদের তারা দায়িত্ব দিতে পারে।

এদিকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্ট থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক বিবৃতিতে বলেন, অতীতে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে প্রতারণা করে থাকতে পারে। তবে সেটার দায় পুরো দেশের ওপর বর্তাতে পারে কি না, এ নিয়ে আমার সংশয় আছে। ওই ব্যক্তিদের শাস্তি দিলে কিছু বলার ছিল না। কিন্তু আগে যারা এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের জন্য পুরো দেশকে নিষিদ্ধ করা যায় না। মূল কথা হলো-রাশিয়ার স্বপক্ষে বলার মতো কাউকে দেখছি না। কেন এসব ঘটলো, কারা ঘটালো, অবশ্যই তা দেশের অভ্যন্তরে তদন্ত করা হবে। কিন্তু রাশিয়ার সব খেলাকে এভাবে কলঙ্কের মুখে ফেলে দেয়া যায় না।

আরআইএস 

আরও পড়ুন