• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০১৯, ০৯:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩১, ২০১৯, ০৩:৩৪ এএম

নিমতলী থেকে বনানী সর্বত্রই ‘উন্নয়নের’ মৃত্যুকূপ : আনু মুহাম্মদ

নিমতলী থেকে বনানী সর্বত্রই ‘উন্নয়নের’ মৃত্যুকূপ : আনু মুহাম্মদ
আনু মুহাম্মদ-ফাইল ছবি

তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, নিমতলী-চুড়িহাট্টা থেকে বনানী, সড়ক থেকে ভবন, কারখানা থেকে অফিস সর্বত্রই ‘উন্নয়নের’ মৃত্যুকূপ তৈরি করা হয়েছে।

সীমাহীন লোভ, ক্ষমতাবানদের বিশ্বাস-আশ্বাসঘাতকতা, জনস্বার্থের প্রতি চরম অবজ্ঞা, ক্ষমতার দাপট ও দুর্নীতি, সর্বোপরি জবাবদিহির ভয়ঙ্কর অনুপস্থিতি এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তাই এই প্রতিটি অকালমৃত্যুর দায় রাষ্ট্রের।

সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্প ও দুর্নীতির দায়মুক্তি আইন বাতিল এবং গ্যাস অনুসন্ধান ও পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বিদ্যুতের জন্য জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের দাবিতে শনিবার (৩০ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ কল্লোল মোস্তফা, বাম জোট নেতাদের মধ্যে নাসিরউদ্দিন নাসু, শম্পা বসু, নজরুল ইসলাম, ফখরুদ্দিন খান আতিকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে উন্নয়নের নামে সকল পর্যায়ে বিচার-বিবেচনাহীন অদূরদর্শী লোভী দায়-দায়িত্বহীন প্রকল্প অনুমোদন করা হচ্ছে। হচ্ছেও নির্মাণ ও ক্রয়। জনগণের ওপর নজরদারি বাড়ানোর জন্য শত হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও কারখানা, ভবন, সড়কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধানের কোনো নজরদারি ব্যবস্থা নেই। তদারকি নেই। জবাবদিহি নেই। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্ষম ও কার্যকর করার উদ্যোগ নেই।

তিনি বলেন, যে দেশে শতাধিক মানুষ মৃত্যুর পরও ১০ বছরে পুরনো ঢাকায় ভয়াবহ গুদাম সরানো হয় না, আবারও অকাল মৃত্যুর মুখে পতিত হয় মানুষ, যেখানে একের পর বহুতল ভবন হয় কোনোরকম নিয়মকানুন ছাড়া, যেখানে বাস-ট্রাক চলতে থাকে ফিটনেস ছাড়া এবং প্রতি বছরে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় সেখানে বলা হয় এর চাইতে লক্ষগুণ বিপজ্জনক পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র হবে সকল ঝুঁকিমুক্ত।

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, যে সরকার সচিবালয়ের পাশের নদীকে ড্রেনে পরিণত হওয়া ঠেকাতে পারে না। তারা বলতে থাকে বছরে ৪৭ লাখ টন কয়লা পুড়লেও সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। প্রাণ-প্রকৃতি দেশ বিনাশী আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত সুন্দরবন বিনাশী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। গত ৮ বছরে সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প কীভাবে বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কররকম সর্বনাশা তার অনেক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আমরা সরকারের কাছে হাজির করেছি। সরকার সেগুলো উপেক্ষা করছে আর দেশ বিদেশে দিয়ে যাচ্ছে একের পর এক মিথ্যা তথ্য। উপকূলের কয়েক কোটি মানুষের জীবন জীবিকা সম্পদ সুন্দরবনের অস্তিত্বের ওপর নির্ভরশীল। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এরকম অতুলনীয় সম্পদ হেলায়, লোভে, দায়িত্বহীনতা আর জেদ দিয়ে ধ্বংস করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

কর্মসূচি : আগামী ৫ এপ্রিল ফুলবাড়ীতে উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি সভা এবং ২৭ এপ্রিল খুলনায় দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সব সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে মে ও জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে দেশব্যাপী সভা সমাবেশ ও জনসংযোগ। ৬ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় কনভেনশন। এই কনভেনশন থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

টিএস/এসএমএম