• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯, ০৩:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯, ০৪:২৫ পিএম

মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতিকে পেটালো নেতাকর্মীরা  (ভিডিও)

মার খেয়ে পালাচ্ছেন বিএনপি নেতা আঞ্জু

বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের হাতে পিটুনি খেয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতারা। 

পিটুনি খাওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহ-সভাপতি (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও যুগ্ম-সম্পাদক এজিএম শামসুল ইসলাম। এর মধ্যে অনেকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দৌঁড়ে এলাকা ত্যাগ করেন। 

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতারা বিগত দিনে থানা কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, পকেট বাণিজ্য করে ও সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে সংগঠনকে শেষ করে দিয়েছেন। এখনও তারা সেই কাজটিই করছেন। এর সঙ্গে নতুন করে আসন্ন (উত্তর) সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণেও বাণিজ্য শুরু করেছেন। তারা কাউন্সিলর নির্ধারণ করতে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে প্রত্যেক থানা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপির হাইকমান্ডকে এ অনিয়ম বারবার অবহিত করলে সমাধানতো দূরের কথা, আমলেও  নেয়নি। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। যার বহিঃপ্রকাশ আজকের এ ঘটনা। 

নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ৩ জুন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই সাংগঠনিক ইউনিটের ২৫টি থানা ও ৫৮টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এমএ কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান। বিতর্কিত ও অখ্যাতদের দিয়ে পকেট কমিটির অভিযোগ তুলে মহানগর উত্তরের ৬৬ জন নেতার মধ্যে ৩২ জনই অবস্থান নেন ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে। ঘোষিত কমিটির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ লিখিত আকারে তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছয় দফা বৈঠক ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সবকিছু অবহিত করেন তারা। তবে দলের হাইকমান্ড এসব অনিয়ম ও দুই নম্বরী সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্রোহী নেতারা পৃথক ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

তারা জানান, থানা কমিটি গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতারা পকেট বাণিজ্য করলেও এখন তাদের শোকজ নোটিশ, কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া, কমিটি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার হুমকি-ধমকি দেয়ার ঘটনায় ওইসব নেতাকর্মীরা সংগঠনের চার নেতার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে গত ১৭ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতি ওসমান গনি শাহজাহানকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশও দেয়া হয়। 

শেরেবাংলা নগর এলাকার পাশে হওয়ার কারণে মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতির অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আজকের ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধদের প্রধান টার্গেট ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, যুগ্ম-সম্পাদক এজিএম শামসুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক এবিএম রাজ্জাক। তবে তারা পালিয়ে যাওয়ায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুকে কিল, ঘুষি, লাথি মারা হয়। তার পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়। পাজামা কোনো রকম ধরে তিনি দৌঁড়ে পালিয়ে যান।
 
এ বিষয়ে আঞ্জুর বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঢাকায় বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল মহানগরকে দুই ভাগ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৭০ সদস্যের এবং এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা উত্তরের ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব। এর মধ্যে মামলা জটিলতার কারণে এমএ কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে পরবাসে (মালয়েশিয়ায়) অবস্থান করছেন।

টিএস/বিএস