ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় প্রথমে ‘ক্লুলেস’ মামলা হিসেবেই তদন্ত শুরু করেছিল র্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা দল।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোর ৪টা৫০ মিনিটে বিভিন্ন সূত্র ধরে অভিযুক্ত ধর্ষক মজনুকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, হাতিয়া নোয়াখালী থেকে ১০ বছর আগে ঢাকায় জীবিকা নির্বাহ করার জন্য আসে মজনু। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নিজের খারাপ অবস্থার কারণে সে আর বিয়ে করতে পারেনি। এরপর থেকেই সে বিভিন্ন প্রতিবন্ধী নারী এবং ভিক্ষুককে ধর্ষণ করেছে।
মজনু একজন মাদকাসক্ত বলেও জানায় র্যাব।
র্যাব জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কুরাতলী এলাকা থেকে খাইরুল নামের এক ব্যক্তির নিকট হতে ধর্ষকের দ্বারা ছিনতাই হওয়া ভুক্তভোগীর মোবাইল উদ্ধার করা হয়। র্যাবের কাছে খাইরুল জানায় তিনি মোবাইলটি অরুণা নামে এক নারীর কাছ থেকে কিনেছেন।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব অরুণাকে আটক করলে সে জানায় মোবাইলটি ডিসপ্লে ভাঙা অবস্থায় মজনুর কাছ থেকে কিনেছে। তারপর সে খাইরুলকে মোবাইলটি মেরামতের জন্য দেয়। এরপর অরুণার দেয়া তথ্য ও ভুক্তভোগীর দেয়া তথ্যের সাথে মিলিয়ে মজুর চেহারার মিল খুঁজে পায় র্যাব। তারপরই অভিযান আরও বেগবান করে তারা।
ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর শ্যাওড়া রেলক্রসিং এলাকা থেকে মজনুকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় মজনুর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর পাওয়ার ব্যাংক ও ব্যাগ উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, ধর্ষণের পর সে মোবাইলটি বিক্রি করে এয়ারপোর্ট রেলস্টেশন, নরসিংদী রেলস্টেশন এবং বনানী রেলস্টেশনে আত্মগোপন করে পরবর্তীতে শ্যাওড়াতে মোবাইল বিক্রির টাকা নিতে ফেরত আসলে র্যাবের জালে ধরা পরে।
র্যাবের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের মজনু এর আগেও একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলেও জানায়। তবে এর আগে তার ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধী নারীরা। গ্রেফতার হবার পর তার মাঝে এ ঘটনায় কোনও অনুশোচনার চিহ্ন দেখা যায়নি।
র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর ভুক্তভোগীকে মজনুর ছবি দেখানো হলে সে তাকে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করে।
র্যাব জানায়, সেদিন মজনু অসুস্থতার কারণে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে একা হাটতে দেখেন ও তাকে ধর্ষণ করার জন্য টার্গেট করে পিছু নেয়। এরপরই সুযোগ বুঝে তাকে মুখ চেপে ধরে ঝোপে নিয়ে যায়। মজনু চুরি-ছিনতাইয়ের সাথেও জড়িত।
র্যাব জানায়, মজনু আগে থেকেই কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে শ্যাওড়ার দিকে যাওয়ার রাস্তায় ওৎপেতে ছিল। তখন ওই শিক্ষার্থীর ব্যাগটি দেখে তার পিছু নেয় এবং এক পর্যায়ে তাকে ঝাপটে ধরে নির্জনস্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে সব ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল মজনু। ওই জায়গায় সে এর আগেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধী নারী, ভিক্ষুক নারীকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়।
এইচএম/এসএমএম