যে কেউ কিডনি দান করতে পারবেন : হাইকোর্ট

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০১৯, ০৬:৫৫ পিএম যে কেউ কিডনি দান করতে পারবেন : হাইকোর্ট

‘ইমোশনাল কারণে নিকটাত্মীয়ের বাইরেও পরিচিত কিংবা সম্পর্ক আছে এমন ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় কিডনি বা অঙ্গ প্রতঙ্গ দান করা যাবে’ বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে বাণিজ্যিক উদ্দেশে তা করা যাবে না বলেও রায়ে বলেছে আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে।

আদালতের এই নির্দেশনা বিদ্যমান আইন সংশোধন করে ছয় মাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশনা ইমাম। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

রায় ঘোষণার পর গণমাধ্যমকে রাশনা ইমাম বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে পরিচিত এবং সম্পর্ক আছে এমন ব্যক্তিরাও চাইলে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে পারবেন। অর্থাৎ নিকটাত্মীয় ছাড়া কেউ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে পারবে না- আইনের এমন বিধান আর কার্যকর থাকছে না। আজকের রায়ের ফলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানে নিকটাত্মীয়ের গণ্ডিতে পড়তে হবে না। কোনও ব্যক্তি চাইলে তার ভালবাসার যে কোনও মানুষকে কিডনি দান করতে পারবেন।

আইনজীবী বলেন, আইন অনুসারে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনা-বেচা নিষিদ্ধ। তাই আদালত কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এসব নির্দেশনায় আদালত বলেছে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের ক্ষেত্রে ইমোশনাল ডোনেশন হচ্ছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রত্যেকটি হাসপাতালে একটি করে প্রত্যয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। ওই প্রত্যয়ন বোর্ড আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসা করে দাতার সঙ্গে রোগীর পরিচয় নির্ণয় করবেন। দাতা নিজ ইচ্ছায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করছেন কি না, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনা-বেচা হচ্ছে কি না, দাতা মানসিকভাবে সুস্থ বা মাদকাসক্ত কি না, তাও নির্ণয় করতে হবে।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ সালের তিনটি (২গ, ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত।

২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট এক আদেশে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ সালের তিনটি (২গ, ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

ফাতেমা জোহরা নামে এক ব্যক্তি ২০১৫ সালে তার মেয়ে ফাহমিদাকে একটি কিডনি দান করেন। এরপরও মেয়ের কিডনি অকেজো হয়ে যায়। এ অবস্থায় কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা পেলেও আইনগত বাধার কারণে মেয়েকে আর কিডনি দিতে না পেরে আদালতে রিট আবেদন করেন তিনি।

এমএ/এসএমএম

আরও সংবাদ