‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করছে’

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০১৯, ০৬:৩৭ পিএম ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করছে’
রাজউক ও সিআরবিসি-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠান- ছবি : জাগরণ

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। আমরা একশ বছর পরের ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করেছি। শুধু আজকের জন্যই নয়, আমরা একশ বছর পরের স্বপ্ন দেখছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এ অসাধারণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তার নেতৃত্বে সরকার সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিশ্চিত করছে। বিশ্ব বিখ্যাত দেশসমূহের নেতৃবৃন্দ এখন বলেন কিছু শিখতে চাইলে, দেশকে উন্নত করতে চাইলে বাংলাদেশে যেতে হবে এবং শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখতে হবে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের (সিআরবিসি)-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তুরাগ নদের বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ এবং কমপ্যাক্ট টাউনশিপ উন্নয়ন প্রকল্প ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত ওয়াটারফ্রন্ট স্মার্ট সিটি প্রকল্পের বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের মধ্যে আলোচ্য সমঝোতা স্মারক সই হয়। রাজউকের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ এবং চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী সুন ইয়োগুও। এ সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার। স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউক এর সদস্য (পরিকল্পনা) আজহারুল ইসলাম খান এবং সমাপনী বক্তব্য দেন রাজউকের চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ। এর আগে বক্তব্য দেন চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সুন ইয়োগুও।

মন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। আমরা সবসময় চীনা কোম্পানি ও চীন সরকারকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে স্বাগত জানাই। এরই মধ্যে চীনা কোম্পানি ও চীন সরকার অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে। চট্টগ্রামে চীনা কোম্পানি টানেল নির্মাণ করছে। সিআরবিসি আলোচ্য প্রকল্প ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।

তিনি আরও যোগ করেন, প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য এমনকি জাদের জমি নেই তাদের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার তৃণমূল গ্রামীণ জনপদ থেকে রাজধানী পর্যন্ত সকলের আবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এভাবে আমরা জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছি। এ উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি ও আদর্শ নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পুরো জাতির প্রতি আমাদের দায়-বদ্ধতা রয়েছে। একইসাথে সারা বিশ্বের জনগণের জন্য আমাদের কর্তব্য রয়েছে। কারণ সারা বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। আমি প্রত্যাশা করি বিশ্বের সকল জনগণের জন্য সমতার পৃথিবী গড়ে উঠবে। যারা আশ্রয়হীন, গৃহহীন তাদের সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের দেশ এখন উন্নয়শীল দেশ এবং শিগগিরই উন্নত দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা স্থাপনা নির্মাণের সাথে সাথে প্রকৃতিকে অবিকৃত রেখে দেশের উন্নয়ন করতে চাইছি। এজন্য আলোচ্য প্রকল্প দুটি নেয়া হয়েছে। প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করে আমরা শহর গড়ে তুলবো। স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে না পারলে তা আমাদের কাজে আসবে না। এজন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছে একটি বাড়ি এমনকি সেটা যদি গ্রামেও হয় তা হতে হবে পরিকল্পিত। স্মার্ট সিটিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে বাসযোগ্য শহর গড়ে তোলা হয়। এ কাজে সিআরবিসিকে আমাদের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা প্রদান করা হবে। আশা করি তারা সবটুকু আন্তরিকতা নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব বলেন, বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ একটি শহরের অস্তিত্ব রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। রাজউক তুরাগ নদের তীরে কমপ্যাক্ট টাউনশিপ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ ভূমি জলাশয় সংক্রান্ত্র কর্মকাণ্ডে সংরক্ষণ করা হবে।

কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত স্মার্ট সিটিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্টের সংস্থান থাকবে। এখানে পর্যাপ্ত জলাশয় সংরক্ষণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এসডিজি ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ করছি। আশা করি আলোচ্য প্রকল্প দুটি এসডিজি ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ঢাকাকে বিশ্ব মানের শহর হিসেবে গড়ে তুলবে।

সভাপতির বক্তব্যে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, তুরাগ টাউনশীপ প্রকল্পে প্রায় ৭০ শতাংশ ভূমি জলাশয়ও ইকোসিস্টেমের জন্য সংরক্ষণ করা হবে এবং মাত্র ৩০ শতাংশ ভূমি টাউনশীপের জন্য ব্যবহার করা হবে। ড্যাপ বাস্তবায়নের সাথে সঙ্গতি রেখে এ প্রকল্প করা হবে। প্রকল্পে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে তাদের কেউ প্লট বা ফ্ল্যাট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন না। এ প্রকল্পে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন দিয়েছেন। তুরাগ টাউনশীপ প্রকল্প বাস্তবায়ন এ মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশ। এ মাস্টারপ্ল্যান এসডিজি-৬ অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তুরাগ টাউনশীপ প্রকল্প রাজউকের ইতিহাসে একটি মাইলস্টোন হিসেবে থাকবে।

আলোচ্য সমঝোতা স্মারকের আওতায় চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে এক বছরের মধ্যে উল্লিখিত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরিবেশগত সমীক্ষা কাজ সম্পাদন করবে। চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরিবেশগত সমীক্ষা কাজ শেষে উল্লিখিত প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

টিএইচ/এসএমএম

আরও সংবাদ