• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০১৯, ১০:৪৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৭, ২০১৯, ১০:৪৬ এএম

শিথিল হচ্ছে জায়গা ছাড়ার পরিমাণ

সংশোধন হচ্ছে রাজউকের ভবন নির্মাণ নীতিমালা

সংশোধন হচ্ছে রাজউকের ভবন নির্মাণ নীতিমালা


ভবন নির্মাণের সময় জায়গা ছাড়া নিয়ে রাজধানীর ভবন মালিক ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) মধ্যে রশি টানাটানির প্রেক্ষিতে সংশোধন হচ্ছে রাজউকের ভবন নির্মাণের নীতিমালা।

ভবন নির্মাণের সময় জায়গা ছাড়ার বিষয়ে রাজউকের নীতিমালার সাথে একমত হতে পারছিলেন না মালিকরা। রাজউকের নীতিমালায় ছোট জায়গায় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

এ পরিস্থিতিতে ভবন মালিকদের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে রাজউকের ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) ২০০৮ বিধিমালা অনুযায়ী জায়গা ছাড়ের বিষয়ে যে বিধান রয়েছে তা শিগগিরই সংশোধন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, নগরীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে চারপাশের জায়গা ছাড় দেওয়ার পরিমাণ প্রায় চার শতাংশ কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাজউক সূত্রে জানায়, ২০০৮ বিধিমালা অনুযায়ী নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ২ কাঠা বা এর নিচের পরিমাণ জমিতে বাড়ি বা আবাসিক হোটেল নির্মাণে জমি ছাড়তে হয় ৩০ ভাগ। আর বাকি ৭০ ভাগে ভবন নির্মাণ করা যাবে। ২ কাঠা থেকে ৩ কাঠা পর্যন্ত জমির ক্ষেত্রে ছাড়তে হয় সাড়ে ৩২ ভাগ, ৩ থেকে ৫ কাঠার ক্ষেত্রে সাড়ে ৩৪ এবং ৫ থেকে ১০ কাঠার ক্ষেত্রে বাড়ি নির্মাণে জমি ছাড়তে হয় সাড়ে ৩৭ ভাগ।

এ ছাড়া ৯ থেকে ১২ কাঠার জমির ক্ষেত্রে ছাড়তে হয় সাড়ে ৩৯ ভাগ, ১২ থেকে ১৪ কাঠায় সাড়ে ৪২ ভাগ, ১৪ থেকে ১৮ কাঠায় সাড়ে ৪৪ ভাগ এবং ১৮ কাঠার ওপর জমির ক্ষেত্রে বাড়ি বানাতে চারপাশের জায়গা ছাড়তে হয় সাড়ে ৪৭ ভাগ। এক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দেড় থেকে আড়াই কাঠা জমি মালিকদের। তারা রাজউকের এমন বিধিমালা কোনোভাবেই মানতে রাজি হচ্ছে না। কারণ তাদের বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে জায়গা ছাড়ার পর  অবশিষ্ট যে যায়গা থাকে তাতে বাস যোগ বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব নয়। ফলে তাদের এমন আপত্তির কারণেই রাজউক বিধিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিধিমালাটি সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় শিগগিরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।

রাজউকের সদস্য উন্নয়ন আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০০৮ বিধিমালা জারি হওয়ার পর কয়েকটি বিধি ও উপবিধি প্রয়োগে চরম জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে নকশা অনুমোদন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। বিধিমালা-২০০৮ অনুসরণ করতে গিয়ে ক্ষুদ্র আয়তনের পটে বাড়ির নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

এ সব প্লট মালিকদের বক্তব্য, ৩ কাঠা আয়তনের প্লটে বাড়ি করার জন্য যে পরিমাণ জমি ছাড় দেওয়ার বিধান রয়েছে এতে বাসযোগ্য বাড়ি নির্মাণ করা কোনোমতে সম্ভব নয়। তারা বিধিমালা ১৯৯৬-এর আলোকে নকশা অনুমোদনের আবেদন করছেন। সংশোধনের পক্ষে মত দিয়ে একটি খসড়া চূড়ান্ত করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। এটি বিবেচনা করেই সংশোধনী বিধিমালা প্রণয়ন করা হতে পারে।

নগরীর একাধিক ছোট-বড় জায়গার মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৮ বিধিমালা প্রণয়নের পর অনেকেই নতুন বাড়ি নির্মাণ করছেন না। বিশেষ করে দেড় থেকে পৌনে দুই কাঠার ছোট প্লটের মালিকদের শোচনীয় অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। কারণ ওই বিধিমালায় ছোট আকারের প্লটের ক্ষেত্রেও ৩২ ভাগ জায়গা ছাড়ার বিধান রয়েছে। এসব বাড়ির মালিকের সংখ্যা এক থেকে দেড় লাখ। ফলে এ বিধান প্রণয়নের পর থেকেই অনেকে বাড়ি নির্মাণ করছে না। এক্ষেত্রে তারা বিধিমালার পরিবর্তনের আবেদন করেন।

এ বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকে তারা রাজউক স্থানীয় সংসদ সদস্য ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এতে তাদের আবেদনের স্তূপ জমা পড়ছে রাজউকে। বাড়ির মালিকরা, ১৯৯৬ সালে প্রণীত পুরানো বিধিমালার আলোকে বাড়ি নির্মাণ করতে আবেদন জানান। এ বিধিমালায় ২ কাঠার নিচে প্লটে ভবন নির্মাণে জায়গা ছাড়তে হতো না। রাজউকও নতুন বিধিমালা ছাড়া বাড়ির নকশা অনুমোদন দিচ্ছে না। ফলে এসব মালিক নতুন ভবন নির্মাণ করছেন না। একইভাবে ২ কাঠার বেশি জমির মালিকরাও বিদ্যমান বিধিমালায় ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।

এ বিষয়ে রাজউকের রাজউকের চেয়ারম্যান ড, সুলতান আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন আসছি। বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টিএইচ/আরআই