একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই দখলদার সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করুন, বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণ তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করে নেবে।

রোববার (২ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক স্মৃতি স্মারক ও দেয়ালিকা প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে তিনি এ দাবি জানান। ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত এই প্রদর্শনীর স্লোগান ছিল ‘আঁধারের সাথে দ্বন্দ্ব’।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, আমাদের দায়িত্ব, যারা জিয়াউর রহমান ও রাজনীতিকে ভালবাসি এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে- জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা। এটা আমাদের একমাত্র দায়িত্ব। আর সেই আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার জন্যও নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল। 

তিনি বলেন, আজকের প্রজন্ম জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কিছুই জানে না। শহীদ জিয়াকে তাদের কাছে উল্টোভাবে চিত্রায়িত করা হয়। যে বাচ্চারা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করে, তাদের কাছ থেকে আমি শুনেছি সেখানে জিয়াউর রহমানকে ভিলেন হিসেবে, খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়। এটা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। জিয়াউর রহমানের মূল অবদানটি হচ্ছে এদেশের মানুষকে নিজস্ব আইডেন্টিটি দেয়া এবং এতেই বাংলাদেশ টিকে আছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানের সত্তা নিয়ে তারা কটাক্ষ করে। সততা নিয়েও কটাক্ষ করে। এখন আমরা শুনি বিদেশে সম্পদের পাহাড়ের স্তূপ জমা হয়েছে, অর্থবৃত্তের, সম্পদের। বাড়িঘর হচ্ছে ৫টা ৬টা করে। এটা কোনো আলোচনার মধ্যে নেই। 

ফখরুল বলেন, এখন সময় ও কালটাকে বলা হয় একটা দুঃসময় এবং একটা সংকট কাল। আর সবাই বলে এই সংকট বিএনপির। কিন্তু এটা কোনো বিএনপির সংকট নয়। এই সংকট হচ্ছে জাতির। বাংলাদেশ জাতি তার সমস্ত অর্জনগুলোকে হারিয়ে ফেলছে। ’৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু এখন কি আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন বলতে পারবো? পারি না। কারণ বাংলাদেশ এখন নতজানু হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করছি এবং করবো। আর আমাদের উচিত হবে তার একটি অংশ নয়, পরিপূর্ণভাবে জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করা। সেটাই হবে জিয়াউর রহমানের প্রতি সত্যিকার অর্থে শ্রদ্ধা জানানো।

তিনি বলেন, দল, বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতিকে টিকিয়ে রাখার মূলমন্ত্র হচ্ছে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। সুতরাং আমাদের উচিত হবে জিয়াউর রহমানের জীবনের ওপর আলোচনা শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক না রেখে সারাদেশে সরিয়ে দেয়া। 

অনুষ্ঠানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৯টি আলোকচিত্র এবং তিনি নিহত হওয়ার পর পত্রিকার প্রকাশিত ৮টি সংবাদ প্রদর্শন করা হয়। আয়োজক সংগঠনের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রদর্শনীতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

টিএস/ এফসি