বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা দেখছেন ভয়ঙ্কর আতঙ্কে আজ সারাদেশ কাঁপছে। আজ দেশে কথা বলার স্বাধীনতা নেই, ন্যায় বিচার নেই। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশে আছে শুধু খুন, গুম, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও শেয়ারবাজার লুট।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেলিমা রহমান বলেন, আজ সমাজে নারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আপনারা দেখেছেন বিএনপি আমলে দেশের শিক্ষা খাতে নারীদের কতটা অগ্রগতি হয়েছিলো। কিন্তু আজকে কিশোরীরা স্কুল কলেজে যেতে ভয় পায়। কেন ভয় পায়?  কারণ আজকে তাদের উপর যৌন হয়রানি হচ্ছে, শিক্ষকের উপর আক্রমণ হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। ক্ষমতার প্রভাব এবং দুর্নীতির মধ্য দিয়ে তারা এ সকল কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির নতুন এ সদস্য বলেন,  বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্য যারা  খুন করেছিলো আদালতে তাদের বিচারও হয়েছিলো। কিন্তু আজকে বিভিন্ন ঘটনায় দোষীদের কি বিচার হয়েছে, তা আমরা জানি না। সাগর-রুনী হত্যা, তনু হত্যা, নুসরাত হত্যা একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলন হয়, সরকার বলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু আস্তে আস্তে সরকার সব ভুলে যায়।

তিনি বলেন, আজকে বরগুনায় দিবালোকে রাজপথে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রিফাতের হত্যাকারী নয়ন বন্ড অনেকদিন ধরে অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলো কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতারের নাম করে অপরাধ করতে সহযোগিতা করেছিল। 

সেলিমা রহমান বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের এই অবৈধ সরকার যারা মিডনাইট নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসে অবৈধভাবে সংসদ চালাচ্ছে তারা এসব কন্ট্রোল করতে পারছে না। কারণ তারা নিজেরাই অনৈতিক, তাদের মধ্যে কোন বিবেকবোধ নেই।
 
সরকারের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা ভাবছেন এ রকম মানববন্ধন দিয়ে কি হবে? আপনারা যে সব খুন, গুম, ধর্ষণ ও অন্যায়ভাবে যাদের কারাগারে আটকে রেখেছেন তাদের কোটি কোটি পরিবার আজকে সব জায়গায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সেই উত্তাপ ভয়ঙ্কর উত্তাপ, সেই উত্তাপে আপনারা জিততে পারবেন না।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বাজেটে কোনো আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নেই। বাজেটে গরিবের উপর চাপানো হয়েছে করের বোঝা। এই বাজেট দেয়ার পরও বাংলাদেশের জনগণ উত্তপ্ত, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছে। কাজেই আমরা জানি, জনগণ আজকে সচেতন। তাই এ অবস্থা আর চলতে পারে না, চলতে দেয়া হবে না।
 
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আসুন সারাদেশের জনগণকে একত্রিত করে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি। ইনশাআল্লাহ খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন ও  সরকারকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে এবং দেশে সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।

খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে সেলিমা রহমান বলেন, আজকে দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, অগণতান্ত্রিকভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে এই অবৈধ সরকার। কারণ তারা জানে  খালেদা জিয়া কারাগারের বাইরে থাকলে এই সরকার মিডনাইটের নির্বাচন কোনোভাবেই করতে পারতো না। তিনি যদি মুক্ত থাকতেন তাহলে তারা কোনোভাবেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে পারতো না। সেজন্য নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দেশনেত্রীকে তারা কারারুদ্ধ করেছে।

জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন। 

টিএস/ একেএস